তাছির আহমেদ: নাশকতা, সহিংসতা, প্রাণহানি ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির মধ্যদিয়ে ১৮ দলের ডাকা ১৩১ ঘণ্টার অবরোধ গতকাল শেষ হয়েছে। একদিনের বিরতির পর তৃতীয় দফায় আবারও ৭২ ঘণ্টা অবরোধের ডাক দেয়া হয়েছে। দ্বিতীয় অবরোধে চাষিদের যে ক্ষতি হয়েছে, তৃতীয় দফার অবরোধ চাষিরা কিভাবে তার ধাক্কা সামলাবে তা ভেবে অস্থির। গতকাল অবরোধ না থাকায় একদিনে দামুড়হুদার ডিলাররা-এলাকার চাষিদের চাহিদামতো সার সরবরাহ করতে পারেনি। বস্তাপ্রতি ইউরিয়া সারের দাম বেশি নেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে দামুড়হুদা ব্রিজরোডের সারডিলার ওলিউল আলমের দোকানে ইউরিয়া সার নেয়ার জন্য চাষিদের দীর্ঘলাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। হোগলডাঙ্গার জামাত আলী, চিৎলার নওয়াজেস, জুড়ানপুরের মজিবর রহমান বলেন, ইউরিয়ারের সারের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। প্রয়োজনের তুলনায় ডিলাররা ইউরিয়া সার দিচ্ছে কম। দলিয়ারপুর গ্রামের আকছেদ আলী মণ্ডল বলেন, তার ৮ বিঘা ভুট্টা, ৩ বিঘা গম ও ২ বিঘা জমিতে তামাক আছে। তাতে ইউরিয়া সারের প্রয়োজন ১০ বস্তা, কিন্তু তাকে দেয়া হচ্ছে মাত্র ২ বস্তা। সময়মতো সার না পেলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কৃষক বলেন, বস্তা প্রতি গোপনে টাকা বেশি দিলে অবশ্য সার পাওয়া যাচ্ছে। সারডিলার ওলিউল রহমান জানান, ইউরিয়া সারের বস্তাপ্রতি সরকার নির্ধারিত মূল্য ৮শ টাকা। আমরা নির্ধারিত মূল্যেই চাষিদের নিকট তা বিক্রি করছি।
সরকার নির্ধারিত মূল্যের অধিক মূল্যে কোনো ডিলার সার বিক্রি করলে উপজেলা কৃষি অফিসে অভিযোগ করার পরামর্শ দিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃপাংশু শেখর বিশ্বাস। তিনি জানান, ডিলারদের অনিয়ম ঠেকাতে উপজেলা কৃষিবিভাগ মাঠ পর্যায়ে নজরদারি করছে এবং উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা ডিলারদের মাঝে উপস্থিত থেকে এলাকার চাষিদের নির্ধারিত মূল্যে সার বন্টনের তদারকি করছেন। উপজেলা সহকারী কৃষি কর্মকর্তা হাসমত আলী জানান, অবরোধের কারণে সারের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। সারের গাড়ি আসছে না। কোনো গাড়ি এলেও দ্বিগুণ ভাড়া দিতে হচ্ছে। এছাড়া রাস্তায় জ্বালাও পোড়াওয়ের কারণে ডিলাররাও শঙ্কিত। তাই তদারকির মাধ্যমে সরকার নির্ধারিত মূল্যে চাষিদের মাঝে অল্প অল্প করে ইউরিয়া সার বন্টন করার ব্যবস্থা করছি। তবে চাষিরা সময়মতো ইউরিয়া সার হাতে না পেলে এলাকায় খাদ্য সঙ্কট দেখা দিতে পারে।