আ.শু বাঙালী
আজ আর দেশ নিয়ে কিংবা দেশের রাজনীতি নিয়ে নয়। আজকের লেখার বিষয়বস্তু অন্য। দেশ গোল্লায় যাচ্ছে যাক তাতে আমাদের কী? দেশের যারা মা-খালা কিংবা আপা-ভাবী তারাই যখন দেশ নিয়ে ভাবছেন না, তখন আমাদের অতো ভাবনার কী আছে? মানুষ মরছে মরুক, গাড়ি পুড়ছে পুড়ুক, রেল খাঁদে পড়ছে পড়ুক সেসব দেখার দরকার নেই, সেসব ভাবারও দরকার নেই। এক তাজুলের কথা বলি, যিনি লাঠির আগায় লাল কাপড় বেঁধে ট্রেন থামিয়ে শত শত যাত্রীর প্রাণ বাঁচালেন। শুধু ভাবা দরকার, কবে এদেশে শয়ে শয়ে নয়, হাজারে হাজারে কিংবা লাখে লাখে নয়, কোটি কোটি তাজুলের আবির্ভাব হবে, যারা অমানুষদের হাত থেকে মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য লাল ঝাণ্ডা হাতে নিয়ে অপ্রতিরোধ্য গতিতে সম্মুখে দৌঁড়াবে। তাজুলের মতো ভাবতে হবে, রেল ও মানুষ বাঁচাতে হবে, অজপাড়াগাঁয়ের গরিব তাজুল যা ভাবেন আমাদের দেশনেত্রীরা কেন তা ভাবতে পারেন না, নাকি ভাবেন না, তা নিয়ে ভাবতে হবে। আসুন আমি, আপনি, আপনারা সবাই একটু ভাবি।
ভাবনার কথা উঠতেই মনে পড়ে গেল জাতির দুর্যোগের সময়কাল, সুসময়-দুঃসময়কে মনে রাখার জন্য মানুষ তাদের সন্তান-সন্তুতির নাম রেখেছে। ৬৯’র আন্দোলনে শহীদ আসাদের নামে তার সহযোদ্ধা সমর্থক সহানুভূতিশীল বা তাদের সন্তানের নাম আসাদ রেখেছে। ৭১’র মুক্তিযুদ্ধকে স্মরণীয় করে রাখতে দেশের অনেক পিতা-মাতাই তাদের সন্তানের নাম মুক্তি কিংবা জয় রেখেছে। আবার স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার নামটিকে মানুষ গালি হিসেবে ব্যবহার করছে। এমনকি দক্ষিণবঙ্গের আইলার তাণ্ডবকে স্মরণে রাখতে অনেক কন্যাসন্তানের নাম আইলাও রাখা হয়েছে বলে শুনেছি। এমন অনেকদিন-ক্ষণকেও স্মরণীয় করে রাখার ঘটনা আমাদের অজানা নয়। সাম্প্রতিক একটি নামকরণ নিয়ে মহাফাঁপড়ে পড়েছে আমাদের ঠোঁটকাটা ন্যায়তুল ইসলাম ওরফে ন্যাড়া। তার ভাবনা চলমান হরতাল অবরোধের সময় কোনো হতভাগী মা যদি প্রসববেদনা নিয়ে হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হয়ে অবরোধের কারণে পৌঁছুতে না পেরে রাস্তার পাশে কোনো মেয়েসন্তান প্রসব করে বসেন, তাহলে সেই সন্তানের নাম কী রাখা হবে- হাসিনা নাকি খালেদা? ন্যাড়ার দুশ্চিন্তা হরণে এগিয়ে এলো হরিহরণ, ন্যাড়ার উদ্দেশে বললো অতো ভাবাভাবির কী আছে? দু টুকরো কাগজে দুজনের নাম লিখে চোখবুজে এক টুকরো তুলে নিয়ে দেখবা। ওতে যার নাম উঠবে মেয়ের নাম সেটাই রাখবা। হরিহরণের কথায় তুড়ি বাজিয়ে ন্যাড়া বললো, কিছুতেই যখন কাজ হচ্ছে না তখন দু নেত্রীর শেষ দেখা ছাড়া আর উপায় কী?