আলমডাঙ্গা ব্যুরো: আলমডাঙ্গা উপজেলার অভয়নগর গ্রামের পাশ ঘেষে বয়ে যাওয়া কুমার নদ অবৈধভাবে দখল করে পুকুর কাটছে পার্শ্ববর্তী ইবি থানার গাংদী গ্রামের নদীখেকো হাতুড়ে ডাক্তার রায়হান আলী। রায়হান আলীর এক আত্মীয়র অর্থায়নে ১শ বিঘা নদের জমি দখল করে পুকুর খননের কাজ করা হচ্ছে বলে গ্রামবাসী অভিযোগ করেছে।
জানা গেছে, আলমডাঙ্গার আনন্দধাম এলাকা থেকে পূর্বদিকে বাক নিয়ে কুমার নদ অভয়নগর গ্রামের পাশ ঘেষে বয়ে গেছে। ষাটের দশকে গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্প চালু হলে এটি স্রোতের প্রচণ্ডতা হারিয়ে নির্জীব হয়ে পড়ে। বর্তমানে ক্ষীণধারায় বয়ে চলা ওই নদে দু কুলবাসী নানাভাবে উপকৃত হচ্ছে। অভয়নগর গ্রাম বরাবর নদের অপর পাড়ে কুষ্টিয়া জেলার ইবি থানার গাংদী গ্রাম। সম্প্রতি গাংদী গ্রামের জোয়াদ আলীর ছেলে হাতুড়ে ডাক্তার রায়হান আলী অবৈধভাবে নদ দখল করে ড্রেজার দিয়ে পুকুর কাটছেন। অভয়নগর গ্রামবাসী অভিযোগ করে বলেছে, তারা নিষেধ করলেও রায়হান তা আমলে নেয়নি। উল্টো দম্ভোক্তি করে বলেছেন- পারলে কাজ বন্ধ করে দাও। মামলা করেও লাভ হবে না, আমার টাকা আছে, আইন আদালত অফিসার পুলিশ সব পকেটে। ছকির উদ্দিন, আরমান ও চাঁদালি বলেছেন, নদীখেকো রায়হান আলীর আত্মীয় আলমডাঙ্গা ডামোশ গ্রামের প্রভাবশালী মাছ ব্যবসায়ী নাজিম উদ্দিনের অর্থায়নে চলছে ওই অবৈধ পুকুর কাটার কাজ। ১শ বিঘা নদের জমি দখল করে ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। অভয়নগর গ্রামের বয়স্ক ব্যক্তি মুরাদ আলী বলেন, আগে নদী তাদের গ্রাম থেকে আরো দূরে গাংদী গ্রামের দিকে ছিলো। নদী এখন ভাঙতে ভাঙতে অভয়নগরের ভেতর ঢুকে পড়েছে। আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, আমার ৯ শতক জমির সবটুকু এখন নদীগর্ভে। ক্ষুদ্ধ গ্রামবাসী প্রতিরোধের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। অবৈধ নদী দখল সম্পর্কে কুষ্টিয়া জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আবু হেনা মুস্তবা কামাল বলেন, নদ-নদী, খাল-বিল দখলকারীরা সভ্যতার শত্রু । লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। আলমডাঙ্গা উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী অফিসার আবুল আমিন বলেন, নদী দখলকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মোটেও শিথিলতা দেখানো যাবে না। আসকারা পেলে এদের সর্বগ্রাসী লোভ মানুষের অস্তিত্বকে বিপন্ন করে তুলবে। তিনি বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। অবৈধ নদী দখলকে কেন্দ্র করে অভয়নগর গ্রামবাসীর মধ্যে বিরাজ করছে চরম উত্তেজনা।