ফের ৭২ ঘণ্টার অবরোধ : ভোর ৬টা থেকে শুরু

স্টাফ রিপোর্টার: গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তি, দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা এবং একতরফা নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার প্রতিবাদে আবারও টানা ৭২ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট। আজ সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার ভোর ৬টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে বলে শুক্রবার রাতে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন বিএনপির যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি জানান, দেশজুড়ে সরকার দমন-পীড়ন শুরু করেছে, এ অবস্থায় বিরোধী দলের আর চুপ থাকার সময় নেই।

সূত্র জানায়, ভেবেচিন্তে কাল রোববার থেকে নতুন কর্মসূচি ঘোষণার কথা ছিলো বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের। কিন্তু শুক্রবার হঠাত করে গাড়ি পোড়ানোর মামলায় বিএনপির শীর্ষ নেতাদের হুকুমের আসামি করায় একদিন আগেই এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এর আগে একই ধরনের দাবিতে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রায় তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। সূত্র জানায়, সরকারকে চাপে রাখতে বিএনপি আগামী সপ্তাগুলোতেও কঠোর কর্মসূচি অব্যাহত রাখবে। সরকারকে তারা আর কোনো ছাড় দেবে না।

এদিকে অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করার পর বিএনপির আজকের পূর্বনির্ধারিত সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। বেলা সাড়ে ১১টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ওই কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন রুহুল কবির রিজভী। রাজধানী ঢাকায় এ বিক্ষোভ সমাবেশ ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিকেল ৩টায় করতে চাইলে শেষ পর্যন্ত পুলিশি অনুমতি না পাওয়ায় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ফের সংবাদ সম্মেলন ডেকে রিজভী জানান, ঢাকা মহানগরের থানায় থানায় স্থানীয় বিএনপি তাদের সুবিধামতো সময় ও স্থানে এ কর্মসূচি পালন করবে। একতরফা নির্বাচনের তফশিল বাতিল দাবিতে এবং সরকারি এজেন্ট কর্তৃক নাশকতা সৃষ্টি করে যাত্রীবাহী বাসে অগ্নিসংযোগ ও বিরোধীদলের নেতাদের বাড়িতে বাড়িতে পুলিশি তল্লাশির প্রতিবাদে সারা দেশে মহানগর ও জেলা নেতাকর্মীরা এ কর্মসূচি পালন করবে বলেও জানান রিজভী। পরে রাতে আরেক দফা সংবাদ সম্মেলন করে অবরোধের কর্মসূচি ঘোষণা দেন তিনি।

বর্তমান পরিস্থিতির জন্য প্রধানমন্ত্রী দায়ী: বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতির জন্য প্রধানমন্ত্রী এবং তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন দায়ী। শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয়তাবাদী দলের দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি নেতাদের মুক্তির দাবি এবং পুলিশি হামলা ও তফশিল ঘোষণার প্রতিবাদে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। বিএনপি কোনো দেশের পুতুল হয়ে নাচে না দাবি করে ফারুক বলেন, আমরা বিদেশীদের বন্ধু মনে করি, প্রভু মনে করি না। এ কারণে আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া কোনো প্রভুর কথায় কাজ করেন না। কোনো সিদ্ধান্ত নিতে তাকে বিদেশীদের দ্বারস্থ হতে হয় না। খালেদা জিয়া আরাম-আয়েশি নেতা- শেখ হাসিনার এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে ফারুক বলেন, আপনি শেখ মুজিবের মেয়ে হয়ে কীভাবে খালেদা জিয়াকে আরাম-আয়েশি নেতা বলেন। আরাম-আয়েশ বিসর্জন দিয়েই স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি (খালেদা)। আর এ নেতৃত্বের কারণেই জনগণের কাছ থেকে আপসহীন নেতার উপাধি পেয়েছেন। কেএম রফিকুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সহশিক্ষাবিষয়ক সদস্য এবিএম মোশারফ হোসেন, নির্বাহী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) মো. হানিফ, রফিক শিকদার, অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম প্রমুখ।