প্রেসক্লাবে জরুরিসভা : সংবাদ বর্জনের সিদ্ধান্ত
জীবননগর ব্যুরো: নির্বাচনী তফশিল ঘোষণার পর ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচির সংবাদসংগ্রহ ও বিক্ষোভ মিছিলের ছবি তুলতে গিয়ে জীবননগরে ৩ সংবাদকর্মী লাঞ্ছিত হয়েছেন। পৌর বিএনপি হাজি মোজাম্মেল হক গ্রুপের পিকেটিং ও বিক্ষোভ মিছিল থেকে একজন সংবাদকর্মীদের লাঞ্ছিত করে। এ ঘটনার প্রতিবাদে বিকেলে প্রেসক্লাবে এক জরুরিসভা তলব করা হয়। সভায় সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পৌর বিএনপির ক্যাডারকর্তৃক পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে একের পর এক সাংবাদিকদের ওপর আঘাত সহ্য করা যায় না। এ ঘটনার প্রতিবাদে এবং ঘটনার সাথে জড়িতর বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করা পর্যন্ত ১৮ দলীয় নেতৃত্বাধীন বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের সকল প্রকার সংবাদ বর্জনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে জামায়াত-শিবির জীবননগর-কালীগঞ্জ সড়কের হাইস্কুল মসজিদের নিকট সড়ক অবরোধ করার পর হাইস্কুল মার্কেটের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করে। সমাবেশে উপজেরা জামায়াতের সেক্রেটারি মাও. ইসমাইল হোসেন ও সহসেক্রেটারি ইব্রাহিম খলিল বক্তব্য রাখেন। এরপরই উপজেলা বিএনপির একাংশ নোয়াব আলী গ্রুপ হাসপাতাল সড়কে অবস্থিত দলীয় কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। বিএনপি নেতা পৌর মেয়র নোয়াব আলী, উপজেলা মহিলাদলের সভানেত্রী উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারহানা আক্তার রিনি, পৌর বিএনপি সভাপতি কাউন্সিলর মশিউর রহমান, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক তাজুল ইসলাম ও দপ্তর সম্পাদক আনিছুর রহমান শিপলু এ বিক্ষোভ মিছিলের নেতৃত্ব প্রদান করেন। এ সময় হাসপাতালের সামনে জীবননগর-চুয়াডাঙ্গা সড়কের হাসপাতালের সামনে পৌর বিএনপির নেতাকর্মীরা সড়ক অবরোধ করে পিকেটিং করছিলো। পিকেটিংকালের ছবি সংগ্রহ করতে গেলে বিএনপিকর্মী ইকতা সংবাদকর্মী অসীম সাঈদ ও মারুফ মালেককে লাঞ্ছিত করে। তাদেরকে গালিগালাজ করার একপর্যায়ে পিকেটার ইকতা তাদের মোটরসাইকেলের টায়ার পাংচার করে দেয়। পরে ইক্ষু সেন্টারের সম্মুখে অবস্থিত দলীয় কার্যালয় থেকে পৌর বিএনপি সভাপতি সাহজাহান কবীর, সাধারণ সম্পাদক মাহতাব উদ্দিন ও জেলা বিএনপির সহসভাপতি সাইদুর রহমান ধুন্দুর নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি টিঅ্যান্ডটি রোডের মুখে পৌঁছুলে সংবাদকর্মী জামাল উদ্দিন খোকন মিছিলের ছবি তুলে গেলে ইকতা তাকেও লাঞ্ছিত করে। বিকেলে উপজেলা বিএনপির সভাপতি আক্তারুজ্জামান ও সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খাঁন খোকনের নেতৃত্বে অবশ্য বিক্ষোভ মিছিলটি শান্তিপূর্ণভাবে শেষ করা হয়।
পৌর বিএনপির মিছির থেকে ৩ সংবাদকর্মী লাঞ্ছিত করা প্রতিবাদে গতকাল বিকেলে প্রেসক্লাবে এক জরুরিসভার আয়োজন করা হয়। প্রেসক্লাব সভাপতি আনোয়ারুল কবীরের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আতিয়ার রহমানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় এ ঘটনার প্রতিবাদে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের সকল সংবাদ এ ঘটনার সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত বর্জনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
জীবননগর ব্যুরো আরো জানিয়েছে, গতকাল মঙ্গলবার দিন ও রাতভর জীবননগর বাসস্ট্যান্ড ও হাসপাতাল এলাকাসহ এর আশে পাশে ব্যাপকহারে ভারতীয় শক্তিশালী পটকার বিস্ফোরণ ঘটনা হয়েছে। গত সোমবার রাত ১টা থেকে শুরু করে ফজরের আজান পর্যন্ত শক্তিশালী এ পটকার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়। গতকাল রাত নামার সাথে সাথে আবারও বিস্ফোরণ ঘটানো শুরু হয়। এ ঘটনায় শহরজুড়ে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।