অপহৃত গৃহবধূকে মাঠ থেকে উদ্ধার
ডিঙ্গেদহ প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গার ফুলবাড়ি মাঠপাড়ায় ৯ বাড়িতে গণডাকাতি শেষে নববধূকে তুলে নিয়ে যায় সংঘবদ্ধ ডাকাতদল। পরে গ্রামবাসী প্রতিরোধ গড়ে তোলে। গ্রাম সংলগ্ন কেরুজ আখের মাঠ থেকে গৃহবধূকে উদ্ধার করে তারা। ঘটনাটি ঘটেছে গত শুক্রবার রাত আনুমানিক ১১টার দিকে। ঘটনার পর গতকাল শনিবার আতঙ্কিত গ্রামবাসী ঘর বাড়ি ছেড়ে অন্য ঠিকানায় পাড়ি জমায়।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার শঙ্করচন্দ্র ইউনিয়নের ফুলবাড়ি মাঠপাড়ার ডাকাতির শিকার পরিবারগুলোর সদস্যরা বলেছেন, শুক্রবার রাত আনুমানিক ১১টার দিকে ১২/১৪ জনের একদল ডাকাত রাম দা ও অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হানা দেয়। দীর্ঘ সময় ধরে তাণ্ডব চালায় তারা। ডাকাতদল ৯ বাড়িতে গণহারে ডাকাতি করে নগদ টাকা, মূল্যবান মালামাল ছিনিয়ে নিয়ে যায়। আবুল হোসেনের বাড়ি থেকে একটি মোবাইলফোন, এক জোড়া কানের সোনার দুল, ১ হাজার টাকা, রমজান আলীর বাড়ি থেকে একটি মোবাইলফোন ও একজোড়া কানের দুল, আত্তাব আলীর বাড়ি থেকে নগদ ৮শ টাকা ও কানের দুল, আশাবুলের বাড়ি থেকে নগদ টাকা, বাবুলের বাড়ি থেকে মোবাইলফোন ও ৮শ টাকা, রবিউলের বাড়ি থেকে কানের দুল, বাদলের বাড়ি থেকে মোবাইলফোন ও টাকা, শহিদুলের বাড়ি থেকে মোবাইলফোন, কানের ও নাকের গয়না, শরিফুলের বাড়ি থেকে টাকা ছিনিয়ে নেয় ডাকাতদল। ডাকাতি শেষে ডাকাতরা নববধূকে তুলে নিয়ে যায় মাঠের মধ্যে। মাঠপাড়ার লোকজনের চিৎকারের এক পর্যায়ে পার্শ্ববর্তী বড়শলুয়া থেকে লোকজন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে। ডাকাতির শিকার পরিবারের নারী-পুরুষ সংগঠিত হয়ে অপহৃত গৃহবধূকে উদ্ধারে মাঠে নামে। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে মধ্যরাতে কেরুজ আখমাঠের পড়ে থাকা অবস্থায় পাওয়া যায়।
নববধূ কি ধর্ষণের শিকার হয়েছে? মামলা হয়নি। গৃহবধূ ও তাদের পরিবারের কেউ মুখ খোলেনি। পাড়ায় গিয়ে দেখা গেছে সবার মুখে অজানা আতঙ্কের ছাপ। কেউ কেউ ঘরবাড়ি ভেঙে নিরাপদ স্থানের দিকে ছুঁটতে শুরু করেছে। এরা বলেছে, ফুলবাড়ি মাঠপাড়ায় যে ৯টি পরিবার বসবাস করে তারা সবাই বড়শলুয়া গ্রামের দিনমজুর। বাড়ির জমির স্বল্পতার কারণে বড়শলুয়ার পাশেই ফুলবাড়ি মৌজায় ৩/৪ কাঠা করে জমি কিনে বসবাস করে আসছে। অন্যের জমিতে শ্রম দিয়ে সংসার চালায় এরা। ক্ষোভ আর এক রাশ ঘৃণা নিয়ে মাঠপাড়ার কয়েকজন পুরুষ বলেছে, ডাকাতি করলো তাতে কোনো দুঃখ নেই, নিজেদের পরিবারের ইজ্জত মেয়ে বউকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে ডাকাতেরা। এরপরেও কি এখানে বসবাস করা যায়?
এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ গাজী মো. ইব্রাহিম জানান, সংবাদ পেয়ে রাতেই পুলিশ পাঠানো হয়েছিলো। যারা এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা হবে। তবে গতরাতে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় খবর নিতে গেলে পুলিশ জানায়, ডাকাতি নয়, এলাকারই উচ্ছৃঙ্খলরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। ডাকাতির মামলাও হয়নি।