মৃত্যুকালীন ঘোষণা কখন গ্রহণযোগ্য -প্রভাষক তুহিন আহমেদ

একজন নিহত ব্যক্তি তার মৃত্যুর পূর্বে তার মৃত্যুর কারণ, অবস্থা এবং পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে যে জবানবন্দী প্রদান করেন, সেই জবানবন্দী বা বিবৃতিকে সাক্ষ্য আইন মতে মৃত্যুকালীন ঘোষণা বলে। কোনো মৃত ব্যক্তি তার মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে সাক্ষ্য আইনের ৩২(১) ধারার বিধানমতে কোনো বিবৃতি দিলে তা সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণযোগ্য। বিবৃতিদানের সময় বিবৃতি দানকারীর মৃত্যুর আশঙ্কা থাকুক বা না থাকুক তা প্রাসঙ্গিক বলে বিবেচিত হবে। এ প্রকার ঘোষণা দেয়ার পর ঘোষণাকারী যদি বেঁচে যান তবে তার বিবৃতি এ ধারানুযায়ী গ্রহণীয় সাক্ষ্য হবে না। এ প্রকার বিবৃতি সাক্ষ্য আইনের ১৫৭ ধারানুযায়ী সমর্থনমূলক সাক্ষ্য হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। মৃত ব্যক্তি তার মৃত্যুর কারণ লিখিত, মৌখিক অথবা ভাবভঙ্গীর মাধ্যমে প্রকাশ করে যেতে পারেন। ওই সময় তার মৃত্যুর আশঙ্কা থাকুক বা না থাকুক তা মৃত্যুকালীন ঘোষণা হবে। মৃত্যুকালীন ঘোষণা কোনো ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ অফিসার, ডাক্তার অথবা কোনো বিশেষ ব্যক্তির নিকট করতে হবে এমন কোনো বিধান নেই। মৃত্যুকালীন অবস্থায় মৃত্যু পথযাত্রী ব্যক্তির নিকট যে ব্যক্তি থাকবে, তার নিকট বক্তব্য দেয়া যাবে। মৃত ব্যক্তির বিবৃতি লিখে রাখলে যে ব্যক্তি তা লিখে রাখবেন তাকে আদালতে উপস্থিত হয়ে এটি প্রমাণ করতে হবে। যদি লিখিত কিছু না থাকে, তবে মৃত ব্যক্তির মৌখিক বিবৃতি যারা শুনেছেন তারা তা বলবেন। শুধু মৃত্যুকালীন ঘোষণার ওপর নির্ভর করে কোনো অভিযুক্তকে সাজা দেয়া উচিত হবে না। ঘোষণার পক্ষে অন্যান্য সমর্থনমূলক সাক্ষ্যের প্রয়োজন। তবে মৃত্যুকালীন ঘোষণাটি যদি সত্য এবং যথার্থ বলে প্রমাণিত হয়, তবে এটির ওপর ভিত্তি করে শাস্তি প্রদান করা যাবে।