স্টাফ রিপোর্টার: স্বীকৃতিবিহীন প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রন্থাগারবিজ্ঞান বিষয়ে ডিপ্লোমাধারী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঁচ হাজারের কিছু বেশি সহকারী গ্রন্থাগারিককে শর্তসাপেক্ষে এমপিওভুক্ত (বেতনভাতা বাবদ মাসিক সরকারি অংশ) করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত লিখিতভাবে গত সোমবার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে (মাউশি) পাঠানো হয়েছে।
মাউশি এখন এ বিষয়ে পরবর্তী কার্যক্রম শুরু করেছে। মন্ত্রণালয় ও মাউশিসূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে। কয়েক মাস ধরে আন্দোলন করার পর নির্বাচনের আগ মুহূর্তে সরকার এ সিদ্ধান্ত নিলো।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফাহিমা খাতুন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত পাওয়ার কথা জানিয়ে বলেন, নিয়োগপ্রাপ্ত গ্রন্থাগারিকদের মধ্যে যাদের গ্রন্থাগারবিজ্ঞান বিষয়ে ডিপ্লোমা সনদ সঠিক (জাল বা ভুয়া নয়) কিন্তু প্রতিষ্ঠান বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অনুমোদিত নয়, কেবল তাদের শর্তসাপেক্ষে এমপিওভুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শর্ত পূরণ না করলে স্বাভাবিকভাবেই তাদের এ সুবিধা বাদ হয়ে যাবে। আর ভুয়া সনদধারীদের কোনোভাবেই এমপিওভুক্ত করা হবে না।
মহাপরিচালক বলেন, সেপ্টেম্বর মাসের এমপিওভুক্তির টাকা ইতোমধ্যে ছাড় হয়ে যাওয়ায় সহকারী গ্রন্থাগারিকদের নভেম্বরের এমপিওভুক্তির সময় এ সুবিধা দেয়া হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাউশির সূত্রমতে, সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে চলতি বছরের জানুয়ারির মধ্যে যারা এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন করেছেন, কেবল তারাই তিন বছরের মধ্যে ইউজিসি অনুমোদিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে (কোর্স অনুমোদনসহ) লাইব্রেরি বিজ্ঞান বিষয়ে ডিপ্লোমা ডিগ্রি অর্জন করবেন; এমন শর্তে এমপিওভুক্ত করা হবে। এর আগ পর্যন্ত তারা সহকারী গ্রন্থাগারিকদের একধাপ নিচের স্কেলে বেতন পাবেন। এসব শর্ত মেনে ৩০০ টাকার নন জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে সই করতে হবে গ্রন্থাগারিকদের। এরপর তাদের এমপিওভুক্তির টাকা দেয়া হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাউশির সূত্রমতে, বিতর্কিত দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের অবৈধ শাখাসহ বিভিন্ন ভুঁইফোড় প্রতিষ্ঠান থেকে সনদ নিয়ে কয়েক হাজার সহকারী গ্রন্থাগারিক বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চাকরি পান। অনেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জালসনদ সংগ্রহ করেও চাকরি নেন। কিন্তু এমপিওভুক্তির আবেদনের সময় দেখা যায় বেশির ভাগের সনদ স্বীকৃতপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের নয়। ফলে তাদের এমপিওভুক্তি দিচ্ছিলো না সরকার। এ নিয়ে কয়েক মাস ধরে আন্দোলন করছেন এসব গ্রন্থাগারিক। এরপর মন্ত্রণালয় ও মাউশি দফায় দফায় বৈঠক করে। অ্যাটর্নি জেনারেলকেও একটি বৈঠকে রাখা হয়। এসব বৈঠকের সিদ্ধান্তের আলোকে এমপিওভুক্তির সিদ্ধান্ত হলো। সরকারি সূত্রমতে, নির্বাচন মাথায় রেখে শেষ সময়ে সরকার অনেকটা ছাড় দিয়ে এ সিদ্ধান্ত নিলো।