আলমডাঙ্গা–হাটবোয়ালিয়া সড়কের বৈদ্যনাথপুর মাঠে সশস্ত্র ডাকাতদলের তাণ্ডব
আলমডাঙ্গা ব্যুরো/হাটবোয়ালিয়া প্রতিনিধি: আলমডাঙ্গা-হাটবোয়ালিয়া সড়কের বৈদ্যনাথপুর মাঠে ২৪/২৫ জনের একদল সশস্ত্র ডাকাতদল তাণ্ডব চালিয়েছে। সড়কে কলাগাছ ফেলে বোমা নিক্ষেপ করে গরুব্যবসায়ীদের নিকট থেকে কমপক্ষে আড়াইলাখ টাকা ডাকাতি করেছে। ডাকাতদলের হামলায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৫ জন।
জানা গেছে, গতকাল বুধবার আলমডাঙ্গার পশুহাট ছিলো জমজমাট। এ হাটে কোরবানির গরু ক্রয়-বিক্রয়ের তোড়জোড়ের কমতি ছিলো না। সুযোগ বুঝে আলমডাঙ্গা-হাটবোয়ালিয়া সড়কের বৈদ্যনাথপুর মাঠে ডাকাতদল ওত পেতে বসে। কলাবাগান নামকস্থানে সশস্ত্র ডাকাতদল কলাগাছ রাস্তায় ফেলে ব্যারিকেড দেয়। গরু বিক্রি করে পাউয়ার টিলারযোগে বাড়ি ফেরা গরুব্যবসায়ীদের একটি ট্রলি কলাগাছের ব্যারিকেডে পড়ে। ডাকাতদল বন্দুক, পিস্তল, হাতবোমা, চাইনিজ কুড়ুল, হাতুড়িসহ বিভিন্ন প্রকারের দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ছুটে আসে। ডাকাতদল রাস্তায় প্রথম একটি ট্রলি থামাতে না পেরে সেটি লক্ষ্য করে বোমা নিক্ষেপ করে। বোমাটি অবিস্ফোরিত থেকে যায়। ট্রলিটি নিয়ে চালক ও গরুব্যবসায়ীসহ গরু বিক্রি করা কয়েক কৃষক প্রাণে রক্ষা পান। তাবে তাদের মধ্যে দুজন আহত হন। তারা নিরাপদের দিকে ছুটতে থাকেন। ওই ট্রলির পেছনে থাকা অপর ট্রলি আর পালাতে পারেনি। ৩ ব্যাপারীর নিকট থেকে প্রায় আড়াই লাখ টাকা ডাকাতি করে ডাকাতদল। টাকা ছিনিয়ে নেয়ার সাথে সাথে ডাকাতদল মারধর করতে থাকে। তিনজন আহত হন। ডাকাতদের মারধরে ১ম ট্রলির দুজনসহ আহত হয়েছেন ৫জন।
ডাকাতির শিকার গরুব্যাপারীদের সকলেরই বাড়ি মেহেরপুর জেলার গাংনী এলাকায়। গতরাতেই আহতদের গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ডাকাতির পর ওসমানপুর ক্যাম্পের টহল পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে এলাকাবাসী। অবিস্ফোরিত বোমাটি উদ্ধার করেছে হাটবোয়ালিয়া ক্যাপ পুলিশ।
আহতরা হলেন, গাংনীর আজান গ্রামের নজিমের ছেলে খোকন ও জুগিন্দা গ্রামের মনিরুলের ছেলে জালাল। এরা প্রথম ট্রলিতে ছিলেন। ডাকাতদল এদের নিকট থেকে তেমন কিছু নিতে পারেনি। ডাকাতির শিকার হওয়া ট্রলির আহতরা হলেন- গাংনীর ভোমরদহ গ্রামের জিল্লুর ছেলে নওসের, মহাসিনের ছেলে ইয়াজুল ও ষোলটাকা গ্রামের বিল্লালের ছেলে সেলিম। ইয়াজুলের কাছ থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, সেলিমের ৬০ হাজার টাকা ও নওসেরের কাছে ছিলো ৪৫ হাজার টাকা। এরা জানান, ডাকাতদল অস্ত্র ধরে রাস্তার পাশের কলাবাগানে তাদের নিয়ে গলায় রামদা ঠেকিয়ে ও হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। ছিনিয়ে নেয় টাকা। ডাকাতি করে ফেলে রাখার ১৫ মিনিটের মাথায় বৈদ্যনাথপুর গ্রামের জনগণ ঘটনাস্থলে পৌছায়। তারাই ডাকাতির শিকার গরুব্যাপারীদের উদ্ধার করে। ঘটনার পর আলমডাঙ্গা ওসমানপুর ক্যাম্প পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
এদিকে এ সড়কে পুলিশি টহল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে এলাকাবাসী। আলমডাঙ্গা-হাটবোয়ালিয়া সড়কের হারদী কামারবাড়ী থেকে বৈদ্যনাথপুর মাঠ পর্যন্ত রাস্তায় বিভিন্ন অঘটন ঘটে। ঈদের সময় সন্ধ্যার পর এ রাস্তায় টহল না দিয়ে ওসমানপুর পুলিশ ক্যাম্প আইসি জাহাঙ্গীর হারদী থেকে কামালপুর সড়কে মোটরসাইকেল চালকদের কাছে অর্থবাণিজ্য করে থাকে বলে অভিযোগ উঠেছে।