বৈঠক ছাড়া কোনো কিছুই পরিদর্শন করলেন না স্বাস্থ্য পরিচালক
স্টাফ রিপোর্টার: নবরূপে সেজেছিলো চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল। তবে তার সাজনা বেশিক্ষণ টেকেনি। ঊর্ধ্বতন কর্তা চুয়াডাঙ্গা ত্যাগ করার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যেন স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়ে। আর সেই নিঃশ্বাস ছাড়ার পরপরই আগের চেহারায় ফিরে যেতে থাকে হাসপাতাল। কেন এই চকচকা সুস্থ পরিবেশ? প্রশ্ন শুনে একজন চিকিৎসক মৃদু হেসে বললেন, বাড়িতে মেহমান এলেতো একটু গোছগাছ করতেই হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. মামুন পারভেজ চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পরিদর্শনে এলে হাসপাতালের চেহারা সুন্দর হয়ে ওঠে।
ডা. মামুন পারভেজ সকালে হাসপাতালে পৌঁছুনোর আগেভাগেই সব চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিজ নিজ দায়িত্বে নিয়োজিত হয়ে যান। যেন কোথাও কোনো সমস্যা নেই। সবাই সজাগ দৃষ্টি রাখেন যাতে স্যারের চোখে কোনো ক্রটি ধরা না পড়ে। তবে হাসপাতালে ঢুকে কোনো কিছুই দেখেননি বিভাগীয় কর্তা ডা. মামুন পারভেজ। সোজা তত্ত্বাবধায়কের কক্ষে গিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেন চিকিৎসকদের সাথে। সেখানে কী কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে তা সাংবাদিকদের জানতে দেয়া হয়নি। তবে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মাসুদ রানা দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে বলেন, হাসপাতালে বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। এরমধ্যে লোকবল সমস্যা জটিল আকার ধারণ করেছে। এ পরিস্থিতিতে ৫০ বেডের লোকবল নিয়ে আমাদের একশ’ বেডের সেবা দিতে হচ্ছে। ফলে প্রয়োজনীয় ও প্রাপ্য চিকিৎসক, নার্চ ও কর্মচারী নিয়োগের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করার জন্য ডা. মামুন পারভেজ নির্দেশ দিয়েছেন। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বিষয়ে আরএমও বলেন, হাসপাতাল সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে ঠিক রাখা যায় না। এ জন্য চাই সচেতনতা। যারা হাসপাতালে আসেন তারা যেখানে সেখানে নোংরা করেন। তাদেরকে বারবার বলেও হয় না।
হাসপাতালের ছিমছাম ও সুস্থ পরিবেশ দেখে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মাথাভাঙ্গাকে জানান, অন্যদিন রোগী এসে ডাক্তারের চেম্বারের সামনে জটলা পাকায় কখন তিনি আসবেন। গতকাল ছিলো তার উল্টো। চিকিৎসক এসে বসেছিলেন রোগীর প্রতীক্ষায়। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের এ দৃশ্য যদি প্রতিদিনের হতো তাহলে চুয়াডাঙ্গার মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে কোনো চিন্তা থাকতো না বলে আরো একজন মন্তব্য করলেন। অন্যদিকে মেডিকেল রিপ্রেজেনটিভ ও কোনো দালালকে গতকাল হাসপাতালে দেখা যায়নি। তবে স্বাস্থ্য কর্তা ডা. মামুন পারভেজ চুয়াডাঙ্গা ত্যাগ করলেও আগের চেহারায় ফিরে যায় সব দৃশ্য এমন অভিযোগ রয়েছে ভুক্তভোগীদের। খুলনা বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. মামুন পারভেজ ঘণ্টা দেড়েক হাসপাতালে অবস্থানের পর চুয়াডাঙ্গা ত্যাগ করেন। তবে একজন অভিযোগকারী জানান, হাসপাতালের বিভিন্ন সমস্যা, অনিয়ম ও অভিযোগ জানানোর জন্য অনেকেই প্রস্তুত ছিলো। কিন্তু স্বাস্থ্য কর্তাকে সেরকম কোনো সুযোগ করে দেয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এমন কি কোনো ওয়ার্ডেও তাকে নিয়ে যাওয়া হয়নি দেখানোর জন্য। ফলে অভিযুক্ত কর্মকর্তা, চিকিৎসক ও কর্মচারীরা পার পেয়ে যান সহজেই। হাসপাতালে অবস্থানকালে ডা. মামুন পারভেজের সাথে ছিলেন সিভিল সার্জন ডা. খন্দকার মিজানুর রহমান।