ঝিনাইদহে লংমার্চের অনুমতি না পেয়ে বিকল্প স্থানে জনসভা : ফেরার পথে হট্টোগোল

 

ঝিনাইদহ অফিস: সুন্দরবন ধ্বংসকারী রামপাল কয়লা বিদ্যুত প্রকল্প বাতিল করার দাবিতে ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুতবন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির লংমার্চ ঝিনাইদহে জনসভা করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে মাগুরা হয়ে লংমার্চ বহরটি ঝিনাইদহ জেলার হাটগোপালপুরে প্রবেশ করে। এরপর সেখানে একটি পথসভা শেষে লংমার্চ বহরটি ঝিনাইদহ শহরে প্রবেশ করলে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানান স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। এ সময় শহরের বাস টার্মিনালে মানববন্ধন শেষে শহরে একটি বিশাল মিছিল বের করা হয়।

এদিকে ঝিনাইদহ জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্র পাঁয়রা চত্বরে আগে থেকেই জনসভার লিখিত অনুমতি চাওয়া হলেও জনসভার অনুমতি দেয়নি প্রশাসন। বাসদ ঝিনাইদহ জেলা শাখার সমন্বয়ক ও লংমার্চ প্রস্তুতি প্রচার ও প্রকাশনা কমিটির আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, শহরের পাঁয়রা চত্বরে জনসভার জন্য লিখিতভাবে প্রশাসনের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছিলো, কিন্তু দেয়নি। তারা শহরের বাইরে আরাপপুরে জনসভার জন্য বলেছেন।

ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি কাজী জালাল উদ্দিন আহমেদ জানান, তাদের নিষেধ করা হয়নি, জনসভা করতে পারবেন। এদিকে লংমার্চ প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব উপাধ্যক্ষ আব্দুস সালাম জানান, ডিসি এসপিকে লিখিতভাবে অবহিত করা হলেও প্রধানমন্ত্রীর জনসভার পূর্ব প্রস্তুতির কথা বলে তাদের অনুমতি দেয়া হয়নি। ওপরের নিষেধ আছে এমন কথা ফোনে বারবার জানিয়েছে ডিএসবি পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। জনসভা করতে গেলে মঞ্চ ভেঙে দেয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেয়া হয় তাদেরকে।

পাঁয়রা চত্বরে জনসভার অনুমতি না দেয়ায় শহরের পাশে আরাপপুরে বিকল্প স্থানে সাড়ে ৪টার দিকে জনসভা শুরু হয়। লংমার্চ উপলক্ষে প্রায় ৪ হাজার নেতা-কর্মী ঝিনাইদহ শহরে উপস্থিত হয়। লংমার্চ প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক কাজী ফারুকের সভাপতিত্বে সভায় তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুতবন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ, সদস্য সচিব আনু মোহাম্মদসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। জনসভাটি পরিচালনা করেন উপাধ্যক্ষ আব্দুস সালাম।

জনসভায় বক্তারা বলেন, সুন্দরবনন ধ্বংসকারী কয়লাভিত্তিক রামপাল বিদ্যুত প্রকল্প বাতিল করাসহ ৭ দফা দাবি বাস্তবায়ন করতে হবে। সরকার যদি এ নির্মাণকাজ বন্ধ না করে তাহলে আমাদের আরো কঠোর আন্দোলন করে তা প্রতিহত করতে হবে। এছাড়া এ আন্দোলনে সকলকে শরিক হওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়। সন্ধ্যায় লংমার্চটি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার শহরে এক পথসভায় মিলিত হয়। পরে লংমার্চটি যশোর অভিমুখে রওনা হয়।

এদিকে লংমার্চ বহরে ছাত্রমৈত্রী ও ছাত্র ইউনিয়নের কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে ৫ কর্মী লাঞ্ছিত ও আহত হয়। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে ঢাকার লংমার্চ শহরের ওয়াজির আলী হাইস্কুলমাঠে যাত্রাবিরতি করে। তখন খাবার বিতরণের সময় কথাকাটাকাটির জের ধরে এ ঘটনা ঘটে। উভয় দলের কর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে মারপিট শুরু করে। উভয় পক্ষ পাল্টাপাল্টি মিছিল করে। এ সময় লংমার্চে আগত অতিথিদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ঝিনাইদহ সদর থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনে।