মাথাভাঙ্গা অনলাইন : সরকারের চলতি মেয়াদেই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বেতন গ্রেড ও পদমর্যাদা বাড়ানো হচ্ছে। তৃতীয় শ্রেণি থেকে দ্বিতীয় শ্রেণির মর্যাদা পাবেন প্রধান শিক্ষকরা। এ জন্য প্রতি মাসে সরকারকে অতিরিক্ত গুণতে হবে এক হাজার তিনশ’ কোটি টাকা।
গত ২ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত সচিবসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বিষয়ে সচিবদের করা দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদের বেতন গ্রেড উন্নীতকরণের বিষয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
১২ সেপ্টেম্বর সচিবদের কাছে পাঠানো এক ডিওতে (আধা সরকারি পত্র) মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভুঁইঞা এ কথা জানিয়েছেন।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী ডা. আফসারুল আমীন বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো করা হচ্ছে। স্বতন্ত্র বেতন কাঠামোয় বেতন প্রদানে প্রতি মাসে সরকারের অতিরিক্ত ১৩শ’ কোটি টাকার প্রয়োজন হবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক শ্যামল কান্তি ঘোষ এ বিষয়ে বলেন, প্রধান শিক্ষকদের তৃতীয় শ্রেণি থেকে দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তার পদমর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
এ সংক্রান্ত প্রস্তাবের সার-সংক্ষেপ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিলো। জনপ্রশাসনের সম্মতির পর তা অর্থ মন্ত্রণালয়ে বিবেচনাধীন।
জানা গেছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা ২০০৯ সালের জাতীয় বেতন স্কেলের ১৩নং গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন। এ হিসেবে প্রধান শিক্ষকরা (প্রশিক্ষণবিহীন) বর্তমানে ৫ হাজার ২০০ টাকার স্কেলে বেতন পান। আর প্রশিক্ষণ শেষে পান ৫ হাজার ৫০০ টাকার স্কেলে।
এই গ্রেড থেকে তাদের বেতন ১১নং গ্রেডে উন্নীত করতে যাচ্ছে সরকার। এতে শিক্ষকদের বেতন বর্তমানের চেয়ে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা বাড়বে।
জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রি নিয়ে অনেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতে আসছেন। এসব মেধাবীদের সরকারি আচার-অনুষ্ঠানে তৃতীয় শ্রেণির সরকারি কর্মচারীর মর্যাদা নিয়ে উপস্থিত হতে হয়।
এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক বলেন, এখন যারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন, তারা যথেষ্ট যোগ্যতাসম্পন্ন। আমরা সব সময় শিক্ষার মানের কথা বলি। সর্বোচ্চ যোগ্যতাসম্পন্নরা শিক্ষকতায় না এলে শিক্ষার মান সর্বোচ্চ পর্যায়ে উন্নীত করা যাবে না। তাই সহানুভূতির সঙ্গে তাদের পদমর্যাদা বাড়াতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় কাজ করছে।
প্রসঙ্গত, দেশের ৩৭ হাজার ৬৭২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুই লাখ ৩৬ হাজার এবং বেসরকারি নিবন্ধিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক লাখ চার হাজার শিক্ষক কর্মরত আছেন। সম্প্রতি বেসরকারি নিবন্ধিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকরি জাতীয়করণ হয়েছে। এ হিসেবে তিন লাখ ৪০ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য এ বেতন কাঠামো করতে চাইছে সরকার।