জীবননগর ব্যুরো: গতকাল শুক্রবার রাতে জীবননগর শহরে অজ্ঞাতনামা সশস্ত্র দুর্বৃত্তদল হানা দিয়েছে। ১০-১২ জনের মুখোশ পরিহিত সশস্ত্র দুর্বৃত্তদলটি বিএনপির অফিস ঘুরে বাসস্ট্যান্ডে অস্ত্রের তাণ্ডব চালায়। তারা পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহতাব উদ্দিনের বস্তার দোকানের সামনে গল্পরত বিএনপি নেতা বিশিষ্ট ঠিকাদার আসাদুজ্জামান মিন্ট (৪০), বিএনপি কর্মী জাহাঙ্গীর আলম (৩৫) ও আওয়ামী লীগকর্মী ফুল বাবুকে (৩২) রামদা দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করেছে। ঠিকাদার মিন্টুকে তাড়িয়ে ধরে কুপিয়ে আহত করা হয়। এ সময় তারা দুটি মোটরসাইকেলও ভাঙচুর করে। মুখোশ পরিহিত দুর্বৃত্তদলের হাতে বোমা থাকলেও এ সময় তারা তার ব্যবহার করেনি। ফলে বড় ধরনের জীবনমালের ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে। ঘটনা ঘটিয়ে দুর্বৃত্তদল বীরদর্পে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। আহত ৩ জনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। এর মধ্যে বিএনপি নেতা ঠিকাদার মিন্টুর অবস্থা আশঙ্কজনক হওয়ায় তাকে যশোর হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। এ ঘটনায় শহরজুড়ে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। গত কয়েকদিন ধরে বিএনপির একাধিক গ্রুপের মধ্যে সৃষ্ট দ্বন্দ্বের জের ধরে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শীসূত্রে জানা যায়, রাত ৯টার দিকে কালীগঞ্জ সড়ক দিয়ে ১০-১২ জনের মুখোশ পরিহিত সশস্ত্র একদল যুবক হেটে আসে। এ সময় পোষ্টঅফিস সড়ক দিয়ে টিঅ্যান্ডটি সড়কের মাথায় গিয়ে ওঠে। পরে তারা পৌর বিএনপি ও উপজেলা বিএনপি অফিসে যায়। কিন্তু বিএনপির কোনো অফিস খোলা না থাকায় মুখোশধারী দুর্বৃত্তদল বাসস্ট্যান্ডে চলে আসে। রাস্তায় মুখোশ পরিহিত সশস্ত্র যুবকের জঙ্গিভাব দেখে উপস্থিত লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দুর্বৃত্তদল এ সময় বাসস্ট্যান্ডে অবস্থিত পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তেঁতুলিয়া গ্রামের মাহতাব উদ্দিনের বস্তার দোকানের সামনে অবস্থান নেয়। দুর্বৃত্তদল এ সময় সেখানে বসে গল্পরত বিএনপি নেতা বিশিষ্ট ঠিকাদার আসাদুজ্জামান মিন্টু, বিএনপিকর্মী বসুতিপাড়ার মান্দার মোল্লার ছেলে জাহাঙ্গীর আলম ও আওয়ামী লীগকর্মী ইসলামপুরের মৃত বিল্লাল হোসেনের ছেলে ফুলবাবুকে রামদা দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে জখম করে। বাঁচার জন্য দৌঁড় দিয়েও বাঁচতে পারেননি ঠিকাদার মিন্টু। তাকে আযমের পানের দোকানের পাশে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, দুর্বৃত্তদলের একজনের হাতে প্যাকেট ভর্তি বোমা ছিলো। কিন্তু এ সময় তারা কোনো বোমার ব্যবহার না করায় জানমালের ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়। এ সময় তারা দুটি মোরসাইকেল ভাঙচুর করে বীরদর্পে স্থান ত্যাগ করে। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়। এর মধ্যে আহত মিন্টুর অবস্থা সঙ্কটজনক হওয়ায় তাকে যশোর হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। অনেকের ধারণা, গত কয়েকদিন বিএনপির একাধিক গ্রুপের মধ্যে বিরাজমান দ্বন্দ্বের কারণে কোনো একটি গ্রুপের ক্যাডারবাহিনী এ হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। এ ঘটনায় শহরজুড়ে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।