ফুলবাড়ী প্রতিনিধি: দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির ভূগর্ভ থেকে উত্তোলনকৃত পানির ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে খনি এলাকার ছয়টি গ্রামের কয়েকশ বিঘা জমির চাষাবাদ ও দিনমজুরের জীবনজীবিকা।
জানা গেছে, দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির কয়লা উত্তোলনের জন্য ভূগর্ভ থেকে উত্তোলিত সেচ পাম্প দ্বারা পানির ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে খনি এলাকার কয়েকশ বিঘা জমির চাষাবাদ। একই সাথে পানির সাথে ভেসে আসা কয়লার ডাস্ট এলাকার পুকুর ডোবায় জমে সেগুলো জ্বালানী হিসেবে বিক্রি করে খনি এলাকার বেশ কিছু মানুষ জীবিকা নির্বাহ করছে ওই এলাকার কয়েকশ দিনমজুর। তাদের মধ্যে অনেকের পরিবারে ফিরে পেয়েছে কয়লার ডাস্ট বিক্রি করে স্বচ্ছলতা।
গতকাল বৃহস্পতিবার দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া খনি এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় খনির দক্ষিণ গেটের পাশ দিয়ে নেমে আসছে খনির ভূগর্ভ থেকে উত্তোলিত পানি। ওই পানি কৃত্রিম উপায়ে ড্রেন থেকে নিয়ে ব্যবহার করে ওই এলাকার কৃষকেরা শ শ বিঘা জমি চাষাবাদ করছে। ড্রেন থেকে পানি জমিতে নিয়ে যাওয়ার পূর্বেই ওই পানি পার্শ্ববর্তী এলাকায় ডোবা পুকুরে জমিয়ে রেখে পানির সাথে ভেসে আসা কয়লার ডাস্ট সেখানে জমাচ্ছে। ডাস্টগুলো পুকুর থেকে ওই এলাকার দরিদ্র দিনমজুরেরা রোদে শুকিয়ে জ্বালানি হিসেবে বিক্রি করছে। কৃষকেরা জানায়, খনি থেকে প্রতি মুহুর্ত গভীর সেচ পাম্প দিয়ে পানি উত্তোলন করার কারণে এ এলাকায় স্বল্প গভীর সেচ পাম্প দিয়ে ভূগর্ভ থেকে পানি সেচ দেয়া যায় না। এতে করে খনির পার্শ্ববর্তী এলাকায় চাষাবাদ করা অসম্ভব হয়ে পড়েছিলো। কিন্তু খনি কর্তৃপক্ষের নিকট এলাকাবাসী কয়েকশ আবেদন করার পর কর্তৃপক্ষ ড্রেনের পানি দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন। সেই পানি দিয়ে এলাকার কৃষকেরা এখন উৎপাদন বাড়াচ্ছে। ওই পানি ব্যবহার করে এখন শ শ বিঘা জমি চাষাবাদ হচ্ছে। এতে বিনা পয়সায় পানি পাওয়ায় চাষাবাদের উৎপাদন খরচও অনেক কমে গেছে। অপর দিকে এলাকার দরিদ্র জনগোষ্ঠিরাও পানির সাথে ভেসে আসা ডাস্টগুলো কাদামাটিসহ তুলে বিক্রি করে তাদের জীবনজীবিকাও এখন ভালোভাবে চলছে। ওই এলাকার কৃষক নাজির আহমেদ, মুজিবর রহমান জানায়, খনিতে অধিকাংশ জমিজমা চলে গেছে। যেটুকু জমি বাকি রয়েছে সেগুলোতে চাষাবাদ হচ্ছিলো না। অথচ খনির পানির ব্যবহার করে এখন সেগুলোতে চাষাবাদ করা সম্ভব হচ্ছে। যদি কোনো কারণে কর্তৃপক্ষ পানি দেয়া বন্ধ করে দেয় তাহলে এ এলাকার কৃষকরা শ শ বিঘা জমি চাষাবাদ করা থেকে বঞ্চিত হবে। একটি কুচক্রীমহল ওই পানি বন্ধ করার জন্য বিভিন্নভাবে প্রশাসনকে খেপিয়ে তুলে বন্ধ করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এমনকি যারা ওই এলাকার ডাস্ট শুকিয়ে বিক্রি করে জীবনজীবিকা নির্বাহ করছেন তাদেরও পথ বন্ধ করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এলাকাবাসীর দাবি এ পানি বন্ধ করা হলে কৃষকদের চাষাবাদের ব্যাপক ক্ষতি হবে এবং উৎপাদন বন্ধ হবে। পানি বন্ধ যাতে না করা হয় সেজন্য এলাকাবাসী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।