নানাকে গুলি করে নাতি অপহরণ : ১৫ দিনের মাথায় উদ্ধার

মেহেরপুরের শুভরাজপুরের স্কুলছাত্র আতাউরকে অপহরণের পর নেয়া হয় ভারতে?

 

মেহেরপুর অফিস: মেহেরপুরের সীমান্তবর্তী গ্রাম শুভরাজপুর থেকে অপহৃত স্কুলছাত্র আতাউর রহমান অপহরণের ১৫ দিন পর উদ্ধার হয়েছে। গতকাল বুধবার সকালে সদর উপজেলার বাজিতপুর সীমান্ত এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করে পুলিশ। অপহরকচক্র তাকে ছেড়ে দেয়ার পরই উদ্ধার করা হয়েছে। মুক্তির আড়ালে মুক্তিপণ পরিষোধের বিষয় আছে কি-না তা অবশ্য নিশ্চিত করে জানা যায়নি।

মেহেরপুর পুলিশ সুপার এ.কে.এম নাহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, অপহরণের পর শিশুটিকে ভারতে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। ওই সন্ত্রাসীদের বিরোধী একটি পক্ষকে সোর্স হিসেবে কাজে লাগিয়ে তাকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছিলো। গতকাল বুধবার সকাল ১০টার দিকে বাজিতপুর সীমান্ত দিয়ে কাঁটাতারের বেড়া কেটে সোর্সসহ সন্ত্রাসীরা শিশুটিকে বাংলাদেশের সীমান্তে নিয়ে আসে। এ সময় স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় তাদের ধাওয়া করলে তারা শিশুটিকে ফেলে পালিয়ে যায়। পরে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার সাথে জড়িত কেউ গ্রেফতার না হলেও অপহরণকারী সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতার করা সম্ভব হবে বলে জানান নাহিদুল ইসলাম। মেহেরপুর সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিয়াজুল ইসলাম জানিয়েছেন, আদালতের মাধ্যমে শিশুটিকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।

বিজিবি’র কুষ্টিয়া মিরপুর সেক্টরের উপঅধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ তারেক মাহমুদ সরকার জানান, অপহরণের পরদিন বিকেলে ভারতের টেইপুর ক্যাম্পের বিএসএফ’র সাথে কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক করা হয়। এ সময় ভারতে অবস্থানকারী অপহরণকারীদের সম্পর্কে তথ্য দেয়া হয়। এরপর তাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য চাপ দেয়া হয়। তারই ফলশ্রুতিতে গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বাজিতপুর সীমান্তের ১২১ নং মেন পিলারের পাশ দিয়ে কাঁটা তারের বেড়ার নিচ দিয়ে শিশুটিকে পার করে দেয় অপহরণকারীরা। গ্রামবাসী তাকে উদ্ধার করে শোলমারী ক্যাম্পের বিজিবি’র কাছে হস্তান্তর করে।

শোলমারী ক্যাম্প ইনচার্জ নায়েক সুবেদার মীর মাজেদ জানান, গতকাল বুধবার সকালে দুজন সিভিল লোক শিশুটিকে কাঁটা তারের বেড়ার নিচে দিয়ে পার করে দিলে তার স্বজনরা তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে আসে। এরপর খবর পেয়ে পুলিশ তাদের হেফাজতে নেয়। এর আগে দুপুর ১২টার দিকে মেহেরপুর পুলিশ সুপার এ.কে.এম নাহিদুল ইসলাম তার কার্যালয়ে অপহৃত শিশু আতাউর রহমান উদ্ধারের ঘটনা সাংবাদিকদের জানান। এ সময় সেখানে মেহেরপুর সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ মো. গোলাম রসুল, ওসি (তদন্ত) তরিকুল ইসলাম, মেহেরপুর জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি রফিক উল আলমসহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার স্থানীয় সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, গত ৩ সেপ্টেম্বর রাতে শুভরাজপুর গ্রামের স্কুল শিক্ষক নানা আব্দুল হালিমকে গুলি করে খুন করে নাতি আতাউর রহমানকে অপহরণ করে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। এ বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে সদর থানায় তিনটি মামলা দায়ের করা হয়।