স্টাফ রিপোর্টার: আলমডাঙ্গা শহরের হলুদপট্টিতে মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আনিছুর রহমানের ঘর ভাড়ায় নিয়ে চলছে রমরমা জোয়ার আড্ডা ও ফেনসিডিলের ব্যবসা। এ আড্ডায় এসে সর্বস্বান্ত হচ্ছে এলাকার উঠতি বয়সী যুবকসহ মধ্যবয়সীরা। এলাকাবাসী ও হলুদপট্টির দোকানদাররা অভিযোগ করে বলেন, ঐতিহ্যবাহী আলমডাঙ্গার এ ব্যবসায়িক এলাকায় যে অনাচার শুরু হয়েছে এখানে সম্মান বাঁচানোই গায়বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক দোকানদার জানান, আলমডাঙ্গা বলরামপুরের বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আনিছুর রহমানের ঘর ভাড়ায় নিয়ে গত দু বছর যাবত এখানে চলছে সমাজ বিরোধী কর্মকাণ্ড। আগে চলতো গোপনে আড়ালে-আবডালে। বেশকিছুদিন হতে তা অনেকটাই প্রকাশ্যে ঘটে চলেছে।
এ ঘরের বর্তমান মালিক কে? আর সেখান থেকে ভাড়া আদায় করেন কে? এ কথা বলতেই ওই ব্যক্তি বলেন, ঘরের ভাড়া আদায় করেন মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আনিছুর রহমানের ছেলে মশিউর রহমান। পাশেই রয়েছে মশিউর রহমানের ‘রিমন ফার্মেসি’ নামের একটি ওষুধের দোকান। জোয়ার আড্ডার বিষয়ে মশিউর রহমানের নিকট জানতে গেলে, তিনি এ প্রতিবেদকের সাথে প্রথমে ওই বিষয়ে কোনো কথা বলতে চাননি। বারবার অনুরোধ করতে থাকেন ভাই, আমার কোনো রেফারেন্স দিয়ে সংবাদ লিখবেন না। আমি কোনো কিছু জানাতে পারবো না । এ ব্যাপারে আমি কোনো কথা বলতে চাই না। কোনো ঝামেলায় জড়াতে চাই না। মশিউরের অনুনয়-বিনয় দেখে যখন স্থান ত্যাগ করা হচ্ছিলো তখন এক ব্যক্তি নিজেকে হলুদপট্টির দোকানদার পরিচয় দিয়ে বলেন, ভাই আপনারা কাকে কী জিজ্ঞাসা করছেন। ঘরের মালিক মশিউরের টু-শব্দটি করার উপায় নেই। জোর করে ভাড়া চাওয়া বা কিছু বলা তো দূরের কথা ঘর ছেড়ে দেয়ার কথা বলার মতো সাহস নেই তার। বললেই নিয়মিত আড্ডায় যোগ দেয়া প্রভাবশালীরা মশিউরের খবর করে দেবে। খাইরুল নামের একজন ব্যবসায়ী বলেন, কয়েক দিন আগে এরশাদপুরের এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি তার ১২ কাঠা জমির ফোলা ধান জমিসহ বন্ধক রেখে জোয়ার আড্ডায় বসে সর্বস্বান্ত হয়েছে। সে জুয়ার আড্ডায় সব টাকা খুইয়ে আর বাড়ি ফেরেনি। তার স্ত্রী তাকে খুঁজতে এসে কাঁদতে কাঁদতে এসব কথা জানিয়ে গেছে হলুদপট্টিতে। এছাড়া এলাকার যুবকরা ও নেশাখোরদের আনাগোনা সব সময় এখানে দেখা যায়। যারা নেশার টাকা যোগাতে চুরি, ছিনতাইসহ নানারকম অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে বলে অনেকেরই অভিযোগ। এলাকার কেউ কেউ এ অপকর্মের প্রতিবাদ করতে গেলে আড্ডাবাজরা বলে, আমাদের বিরুদ্ধে কে কী করবে? আমরা সাংবাদিক-পুলিশকে নিয়মিত টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে রাখি।
এলাকাবাসীর অভিযোগে জানা গেছে, আলমডাঙ্গা বকশিপুর গ্রামের মনজের ফকিরের ছেলে রবিউল ও তার সাথে থাকা লোকজন এখানে নিয়মিত জোয়া ও নেশার আড্ডা বসায়। আর ৱ্যাবের সোর্স পরিচয়ে এখানে নিয়মিত সঙ্গ দেয় আমবাড়িয়া গ্রামের করিম মেম্বারের ছেলে আলমডাঙ্গার অস্থায়ী বাসিন্দা কায়ুম ওরফে লালু। এলাকাবাসী চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার ও আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হস্তক্ষেপ কামনা করে এ জমজমাট জোয়া ও নেশার আড্ডাকে গুঁড়িয়ে দিয়ে এলাকার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য আহবান জানিয়েছেন।