পুষ্টিহীনতা দূর করার পাশাপাশি দরকার দূষণমুক্ত পরিবেশ

 

বিগত দিনের তুলনায় দেশে শিশু মৃত্যুর হার হ্রাস পেয়েছে। পুষ্টিহীনতাও কমেছে। জন্মহার যেহারে কমার কথা তা খাতা কলমে কমলেও বাস্তবে তার যথেষ্ট অমিল রয়েছে। নতুন করে বলার অবকাশ রাখে না যে, স্বাস্থ্য বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রা এবং বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার সহযোগিতা শিশু মৃত্যুর হার হ্রাসে অগ্রণী ভুমিকা রেখে চলেছে। পুষ্টি চাহিদা পূরণে অক্ষমতার অন্যতম কারণ দারিদ্র্য। আর জন্মনিয়ন্ত্রণ? বহুকারণ থাকলেও অসচেতনতাই যে মূল তা বলাই বাহুল্য।

 

প্রতিবেশী দেশ ভারতের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ‘মিডডে মিল’ কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। দুপুরে শিশু শিক্ষার্থীদের পেটপুরে খাবার দেয়া হয়। দেশে প্রকল্পভুক্ত জেলাগুলোর প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে কিছুদিন বিস্কুট দেয়া হলেও তার ধারাবাহিকতা রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। ভিটামিন এ, কৃমিনাশকসহ কয়েকটি রোগ প্রতিরোধক তথা টিকা প্রদান কর্মসূচি বহাল রয়েছে। যদিও তা নিয়ে অপপ্রচার এবং অব্যবস্থাপনার দরুণ শিশু অসুস্থ হওয়ার বিরূপ প্রভাব নিয়ে শঙ্কিত সচেতনমহল। জন্মনিয়ন্ত্রণে যতোটা সচেতনতার আলো সমাজে ছড়ানো দরকার ততোটা যে ছড়ানো সম্ভব হয়নি, দায়িত্বে নিয়োজিতদের সকলেই যে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে শতভাগ আন্তরিক নন তা অস্বীকার করার জো নেই। তা না হলে ছেলের আশায় ৬ষ্ঠ কন্যা প্রসব কেনো? জন্মনিয়ন্ত্রণের ব্যার্থ চিত্র মূলত সমাজের দরিদ্র পীড়িত পরিবারগুলোতেই বেশি পরিলক্ষিত হয়, হচ্ছে। দায়িত্বপালনে আরো আন্তরিক করতে জবাবদিহিতা যেমন দরকার তেমনই প্রতিটি ক্ষেত্রেই সরকারের বাস্তবমুখি পদক্ষেপ প্রয়োজন। সরকারের গৃহীত কল্যাণকর কর্মসূচি বাস্তবায়নে সমাজের সচেতনমহলকেও সহযোগিতার হাত বাড়ানো দরকার। সকল বিভ্রান্তি দূর করতে সরকারের দায়িত্বশীলদেরই আস্থা অর্জনে আন্তরিক হওয়া সময়ের দাবি।

 

শিশু পুষ্টি নিশ্চিত করতে না পারলে জাতির স্বনির্ভরতা অর্জনের স্বপ্নপূরণ অসম্ভব। শিশুরাই জাতির ভবিষ্যত। পুষ্টিহীনতা মেধা বিকাশে অন্তরায়। পুষ্টিহীনতা দূর করতে হলে অন্তঃস্বত্ত্বা মায়ের খাদ্য চাহিদা যেমন পূরণ করতে হবে, তেমনই নবজাতক ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর তার খাদ্য চাহিদা পূরণের যাবতীয় ব্যবস্থার পাশাপাশি দূষণমুক্ত পরিবেশেও দিতে হবে। দরিদ্র্য পীড়িত সমাজে তা কি সম্ভব? অসম্ভব কিন্তু নয়। দরকার শুধু সম্মিলিত প্রচেষ্টা।