‘সবাই মিলে দেব কর, দেশ হবে স্বনির্ভর’ ‘আয়করে প্রবৃদ্ধি দেশ ও দশের সমৃদ্ধি’ স্লোগানগুলোর মর্মার্থ বুঝিয়ে আয়করের আওতায় আসার মতো সকলকে কর প্রদানে আন্তরিক করতে পারলেই দেশের সার্বিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। যদিও সরকারের নানা খাতে অপচয় নিয়ে বিতর্ক আছে, তবুও আয়কর প্রদান ছাড়া দেশের উন্নয়ন আশা করা যে অবান্তর তা সকলকেই উপলব্ধি করতে হবে। কর প্রদানের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে অংশীদার হওয়া দায়িত্বও বটে। অবশ্য কর এ দায়িত্ব পালনে আন্তরিক করতে দেশ প্রেম জাগিয়ে তোলা অধিক ফলপ্রস্যু হতে পারে।
দেশপ্রেম অর্থ কি দেশের মাটি আখড়ে পড়ে থাকা? না। দেশের কল্যাণে কাজ করা মানেই দেশকে ভালোবাসা। সেটা কী রকম? নিজ নিজ ক্ষেত্রে নিজের দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালনেরই অপর নাম দেশপ্রেম। দেশের প্রতি ভালোবাসার কথা শুধু মুখে বলে নয়, ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধ্বে দেশের সার্বিক উন্নয়ন বিবেচনায় সরকার গঠনে নিজের অভিমত বা রায় তথা ভোট প্রদানটিও দেশ প্রেমের অংশ। শুধু ভোট দেবো, নেতা নির্বাচন করবো অথচ আয়কর দেবো না। তাতে কি পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব পালন হয়? না। দেশের স্বনির্ভরতা অর্জনের অন্যতম উপায় হলো সকলে মিলে কর প্রদান। দিন দিন অবশ্য আয়কর প্রদানকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আয়কর প্রদানে উদ্বুব্ধ করতে আয়কর মেলারও আয়োজন করা হচ্ছে ফি বছর। এবারও গতকাল থেকে মেলা শুরু হয়েছে। আগামী ১৮ ও ১৯ সেপ্টেম্বর চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরে আয়কর মেলার আয়োজন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে জেলা ভিত্তিক এবং বিভাগীয় পর্যায়ে সর্বোচ্চ ও দীর্ঘ মেয়াদী করদাতাদের বিশেষ সম্মানে ভূষিত করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা মেহেরপুর ও ঝিনাইদহসহ সারাদেশের যারা আয়কর প্রদানে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তাদের সকলকে অভিবাদন।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কর বিভাগের নানামুখি উদ্যোগ আয়কর প্রদানে সামর্থ্যদের নিশ্চয় উদ্বুব্ধ করবে। দেশের প্রবৃদ্ধি মানে দশের সমৃদ্ধি। বিষয়টি বিশ্বাস করতে হবে। অবশ্য বিশ্বাস করানোর মতো বলিষ্ঠ নেতৃত্বও দরকার। দুর্নীতি, লুটপাট আর সরকারি টাকা লোপাটের গতানুগতিক ধারণা থেকে জনসাধারণকে সরাতে হবে। এজন্য দরকার দুর্নীতি দূর করা। আমার প্রদত্ত টাকা হরিলুট হচ্ছে না, হবে না, এটা নিশ্চিত করতে পারলে করদাতার সংখ্যা যে বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে তা বলাই বাহুল্য। সেটা নিশ্চিত করতে ক্ষেত খাওয়া বেড়া উৎপাটন অপরিহার্য।