দামুড়হুদায় আনন্দস্কুলের প্রায় ২১ লাখ টাকা হরিলুট

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদার ১২৩টি আনন্দ স্কুলের ২০ লক্ষার্ধিক টাকা হরিলুট হয়েছে। এরকমই অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগকারীরা জানিয়েছেন, আনন্দ স্কুলের শিক্ষার্থীদের স্কুল ড্রেস, শিক্ষা উপকরণ, স্কুলঘর মেরামত, স্কুলঘর ভাড়া ও আনন্দ স্কুলের শিক্ষকদের বেতন  (মে হতে আগষ্ট/২০১৩ পর্যন্ত) বাবদ ৩৭ লাখ ৩৭ হাজার ৭শ ২০ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এর মধ্যে ২০ লাখ ৬৫ হাজার ৭শ ২০ টাকা গায়েব হয়ে গেছে।

অভিযোগসূত্রে জানা গেছে, দামুড়হুদা উপজেলায় ১২৩টি আনন্দ স্কুলের শিক্ষার্থীদের স্কুল ড্রেস, শিক্ষা উপকরণ, স্কুলঘর মেরামত, স্কুলঘর ভাড়া ও আনন্দ স্কুলের শিক্ষকদের বেতন বাবদ চলতি অর্থ বছরে ৩৭ লাখ ৩৭ হাজার ৭শ ২০ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। শিক্ষা উপকরণ, স্কুল ড্রেস ও স্কুলঘর মেরামত বাবদ ২০ লাখ ৬৫ হাজার ৭শ ২০ টাকা এবং পরীক্ষার ফি বাবদ ১ লাখ ৫৪ হাজার টাকা। এ বরাদ্দ স্কুলভিত্তিক দেয়া হলেও অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় তিনটি এনজিও’র নির্বাহী পরিচালক যোগ সাযোশে ইউএনও’র মাধ্যমে উত্তোলন করা হয়। স্কুলের শিক্ষকদের চাপসৃষ্টি করে বরাদ্দপ্রাপ্ত এ অর্থের সিংহভাগ টাকাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার উত্তোলন করে নেন। এরমধ্যে উপজেলা শিক্ষা অফিসার নুর জাহান বেগম ৩৭টি স্কুলের প্রায় ৬ লাখ টাকার চেক গ্রহণ করেন। ৪২টি স্কুলের ৫ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ইউএনও সোনিয়া আফরিন ও শিক্ষা অফিসার নগদে গ্রহণ করেন এবং ৪২টি স্কুলের প্রায় ৬ লাখ টাকা সততা সংস্থার নির্বাহী পরিচালক নুরুন্নবী গ্রহণ করেন।

স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা, অভিভাবকদের অনেকেই বলেছেন এসব টাকা ইউএনও, শিক্ষা অফিসার ও নুরনবী ভাগাভাগি করেছেন। তাদের প্রশ্ন প্রায় অর্ধকোটি টাকার মালামাল ক্রয়ের জন্য কেন টেন্ডার আহ্বান করা হলোনা এবং বরাদ্দের সিংহভাগ টাকা এক এনজিওর কাছে কীভাবে গেলো?

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলায় ঝরে পড়া শিশুদের (৬ থেকে ১৪ বছর বয়সী) পড়ালেখার জন্য স্কুলমুখি করতে ২০১০ সালের জুলাই থেকে রক্স প্রকল্প নামে এ কার্যক্রম শুরু হয়। ওই সময় বেশ কয়েকটি স্থানীয় এনজিও সংস্থা এ প্রকল্প পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। চলতি অর্থবছরে দামুড়হুদা উপজেলায় ১২৩টি আনন্দ স্কুলের বরাদ্দপ্রাপ্ত ৩৭,৩৭,৭২০/- টাকা  টাকার মধ্যে প্রায় ১১ লাখ টাকার হিসেবই মিলাতে পারছেন না শিক্ষা অফিসার। স্কুল মেরামতের টাকা নিতে এসে শিক্ষকরা শিক্ষা অফিসারের নিকট গেলে তিনি সততার নির্বাহী পরিচালকের নিকট পাঠিয়ে দিয়ে নিজের দায় এড়াতে চাচ্ছেন। দর্শনা এলাকার ৩৭টি আনন্দ স্কুলের চেক শিক্ষা অফিসার গ্রহণ করনে এবং রোজার ঈদের পূর্বে ওই টাকা দর্শনা সোনালী ব্যাংক হতে উত্তোলন করা করেন। ওই টাকা স্কুলঘর মেরামত করার জন্য এক হাজার টাকা শিক্ষা অফিসার ফেরত না দিয়ে সততা এনজিও’র নির্বাহী পরিচালকের নিকট পাঠাচ্ছেন। অধিকাংশ স্কুলের শিক্ষকরা ওই টাকা না পেয়ে হয়রানি হয়ে ফিরে গেছেন।