খাইরুজ্জামান সেতু/উজ্জ্বল মাসুদ: বেশ কিছুদিন ধরেই পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে খুনের পর খুনের ঘটনা ঘটলেও চুয়াডাঙ্গা ছিলো খানেকটা নিরাপদ। খানেকটা হঠাত করেই পাল্টে গেছে সেই চিত্র। পক্ষকালেই চুয়াডাঙ্গার কয়েকটি স্থানে খুন হয়েছে ৪ জন। ডাকাতি ও গুলিবর্ষণ ও ছিনতাই তো হচ্ছেই। স্থানীয় পর্যবেক্ষক মহল বর্তমান পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করতে শুরু করেছে।
জানা গেছে, ৩১ আগষ্ট জেলা শহরের শান্তিপাড়া মোড়ে পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে জর্জ কোর্টের অর্ডারলী বুজরুকগড়গড়ী বনানীপাড়ার মন্টুর হাতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কব্জী কেটে বিচ্ছিন্ন করে কিছু উচ্ছৃঙ্খল যুবক। ১ সেপ্টম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গা বণ্ডবিলের ইটভাটার নিকট পথচারীদের হাত-পা বেঁধে ও গাছ ফেলে ৩টি মোটরসাইকেল মোবাইল ও নগদ টাকা ছিনতাই করে নেয় ছিনতাইকারীরা। চাঁদার দাবিতে দামুড়হুদা কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার আব্দুল হককে লক্ষ্য করে ৩ রাউন্ড গুলি ও ১টি শক্তিশালী বোমা মারে চাঁদাবাজরা। ৭ সেপ্টেম্বর রাতে জেলা শহরের একাডেমীর নিকটবর্তী মোহাম্মদী শপিং কমপ্লেক্সের পেছন থেকে জবাই করা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। অবশ্য পুলিশ তড়িৎ পদক্ষেপে নিয়ে খুনের ঘটনা উৎঘটন করে আসামি গ্রেফতার করেছে। ১০ সেপ্টেম্বর খাসকররা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় জমাট বাঁধা রক্ত দেখেতে পায় এলাকাবাসী। ৯ সেপ্টেম্বর গভীররাতে কার্পাসডাঙ্গায় সশস্ত্র ডাকাতদল জয়নাল আবেদীনের ছেলে আব্দুস সোবহান, রফিকুল ও শফিকুলের বাড়িতে হানা দিয়ে নগদ টাকা, মোবাইলফোন ও সোনার গয়না নিয়ে যায়। এ সয়ম বাড়ির মালিক রফিকুলকে ডাকাত দল পিটিয়ে আহত করে। ওই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলে এলাকাবাসী। ১১ সেপ্টেম্বর দামুড়হুদা খেলার মাঠ থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার করে। পারিবার পক্ষে থেকে হত্যার কথা বলা হলেও পুলিশের দাবি অতিরিক্ত নেশার করে তিনি মারা গেছে। ১২ সেপ্টেম্বর আলমডাঙ্গা মুন্সিগঞ্জ গোয়ালবাড়ি সড়কে যাত্রীসহ চালককে বেঁধে আলমসাধু ছিনতাই, ১৩ সেপ্টেম্বর চুয়াডাঙ্গা জেরা সদরের কুতুবপুরে পূর্ববাংলা কমিউনিষ্টপার্টি জনযুদ্ধর (এমএল) আঞ্চলিক নেতা রাসেলের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশের দাবি তাদের দলীয় কোন্দলের কারণে খুন হয় রাসেল। সে ফতেপুর গ্রামের হক সাহেব ওরফে ওকেজ আলীর ছেলে। সে তার গ্রামেরই মন্টু হত্যা মামলার আসামি। দামুড়হুদা গোপালপুরে গতকাল রোববার সাকেলে গ্রামের মাঠ থেকে শাহাবুদ্দীন নামে এক নির্মাণ শ্রমিকের গলা কাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এছাড়া নীরব চাঁদাবাজি চলছে চুয়াডাঙ্গার সরোজগঞ্জ বাজারসহ পার্শবর্তী গ্রাম শুম্ভুনগর, সাহেবনগর, তিওরবিলা, খাসকররাসহ বিভিন্ন গ্রামে।
চুয়াডাঙ্গার পার্শবর্তী জেলা মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া আইনশৃঙ্খলা অবনতি হলেও চুয়াডাঙ্গায় হয়নি। তাহলে এবার কি চুয়াডাঙ্গাতেও হতে যাচ্ছে এটাই সচেতন মহলের প্রশ্ন। সচেতনমহল ও এলাকাবাসী আশা করছেন বিষয়টি অবশ্যই গুরুত্বসহকারে দেখবে।