স্টাফ রিপোর্টার: সংসদ বহাল রেখে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন করা হবে প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন সুশীল সমাজের সদস্যরা। তারা সংসদ ভেঙে দিয়েই জাতীয় নির্বাচন হওয়া উচিত বলে মত দেন। উভয় দলের সমন্বয়ে নির্বাচনকালীন একটি স্থায়ী পদ্ধতি গ্রহণ করা দরকার বলেও মনে করেন তারা। গতকাল শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) আয়োজিত বর্তমান সঙ্কট নিরসন শীর্ষক মতবিনিময়সভায় বক্তারা একথা বলেন।
সুজনের সভাপতি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. কামাল হোসেন, বিচারপতি কাজী এবাদুল হক, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন, সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, গণস্বাস্থের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে হাফিজউদ্দিন খান অভিযোগ করে বলেন, দু দলের মধ্যে একটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে, সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ-বিএনপি সমান। তাদের মধ্যে যে দল ক্ষমতায় যায়, সে দলই প্রশাসনে দলীয়করণ করে, আইন মানেন না, বিরোধী দলের ওপর পালাক্রমে দমন-পীড়ন করে এবং সেনাবাহিনীকে খুশি করতে প্রস্তুত থাকে। এছাড়াও দু দলের কথার সাথে কাজের মিল পাওয়া যায় না।
এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, কেউ বাঘের পিঠে চড়লে আর নামতে চান না। কারণ এতদিন তিনি রক্ত খেয়েছেন, এখন নামলেই তো বাঘে রক্ত খাবে। আসন্ন নির্বাচন নিয়ে যে সঙ্কট তৈরি হয়েছে তাতে তারা কথা বললে বিভ্রান্তি হয়, আর বিদেশিরা জ্ঞান দিলে বিভ্রান্তি হয় না। বিদেশিরা যেভাবে তাদের জ্ঞান দিয়ে যাচ্ছেন তাতে স্বাধীন মানুষ হিসেবে তার লজ্জা হয়। নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে তিনি নির্বাচন কমিশন ও এর আইনে আরো পরিবর্তন আনার পক্ষে মত দেন। এছাড়া সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন না করার কথা বলেন সাখাওয়াত হোসেন।
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, এ সংবিধান মনে হয় তাদের ছুড়ে ফেলে দিতে হবে। কারণ এখানে ৫০টির বেশি অনুচ্ছেদ পরিবর্তনের যোগ্য নয়। তাই এই সংবিধান বাস্তবসম্মত নয়। সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, দু নেত্রী যা বলেন, দলের নেতাদের কাছে এখন সেটাই সংবিধান হয়ে যায়। তারা উভয় দলের কাছে একটা স্পষ্ট বিবৃতি চান, তারা কী করবেন। পীর-ফকিরের মাজারের লোকের মতো আধ্যাত্মিক কথা বললে হবে না। সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, সবাই নির্বাচন চায়, তারপরও কেন নির্বাচন হচ্ছে না। এর কারণ হচ্ছে রাজনৈতিক সঙ্কট। এটি আবার সাংবিধানিক সঙ্কটও বটে। রায় কখনো দ্ব্যর্থবোধক হয় না, রায় হবে একার্থবোধক। তড়িঘড়ি করে সংবিধান সংশোধন করে এই সঙ্কটের মাত্রা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, নির্বাচন পদ্ধতির একটি স্থায়ী সমাধান হওয়া প্রয়োজন। যখন সমাধান প্রয়োজন তখন নির্বাচন কমিশন তার নিজের অবস্থান নড়িয়ে দিয়েছে। এ কমিশনের প্রতি আমার কোনো আস্থা নেই।