যুবককে মারধর করায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া : ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগ : পুলিশ মোতায়েন

মেহেরপুর নূর হোটেলে অপ্রীতিকর ঘটনা :  বাসস্ট্যান্ড কাজিপাড়ায় চরম উত্তেজনা : গাছের গুড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ

 

মেহেরপুর অফিস: পূর্ব শক্রতার জের ধরে মেহেরপুর শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এক যুবককে মারধর করার প্রতিবাদে মেহেরপুর শহরের বাসস্ট্যান্ড কাজি অফিসপাড়া এলাকায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ওই ঘটনায় গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে মেহেরপুর ৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সৈয়দ মঞ্জুরুল কবির রিপনের অফিস ও অফিসের সামনে থাকা একটি মোটরসাইকেল ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ শহরের কলেজ মোড় এলাকা থেকে কতিপয় ছাত্রলীগের নেতাকে আটক করার চেষ্টা করলে তারা বিক্ষোভ করে। রাস্তার আগুন জ্বালিয়ে ও গাছের গুঁড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ করে। এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়। পুলিশ বলেছে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

জানা যায়, গতকাল শুক্রবার বিকেলের দিকে মেহেরপুর শহরের কাজি অফিসপাড়ার কতিপয় যুবক শহরের নূর হোটেলের ভেতরে ঢুকে হোটেল মালিকের ছেলে নূর মোহাম্মদকে (২৩) মারধর করে। ওই ঘটনায় জের ধরে হোটেল মালিক পক্ষের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে তারা কাজি অফিসপাড়ায় তেড়ে আসে। ওই সময় খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের বাধা দেয়। দ্বিতীয় দফায় কয়েকজন উত্তেজিত যুবক লাঠিসোঁটা নিয়ে ছুটে এসে কাজি অফিসপাড়াস্থ  ৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সৈয়দ মঞ্জুরুল কবির রিপনের অফিস ও অফিসের সামনে থাকা একটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে এবং বাসস্ট্যান্ড কাজি অফিসপড়ার নফেলউদ্দিনের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে ও আগুন লাগিয়ে দেয়। ওই সময় খবর পেয়ে মেহেরপুর দমকলবাহিনী ঘটনাস্থলে আসার চেষ্টা করলে উত্তেজিত কতিপয় যুবক তাতে বাধা দিয়ে তাদের ফিরে যেতে বাধ্য করে। পরে স্থানীয়রা পানি ও বালি দিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলে।

এদিকে ওই ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে পুলিশ শহরের কলেজ মোড় এলাকা থেকে শহর ছাত্রলীগের সভাপতি মাহফিজুর রহমান পোলেনসহ কতিপয় ছাত্রলীগ নেতাকে আটক করে থানায় নেয়ার চেষ্টা করলে ছাত্রলীগকর্মীরা সড়ক অবরোধ করে। তারা সরকারি কলেজ মোড়ে রাস্তার ওপর টায়ার জ্বালিয়ে ও কাঠের গুঁড়ি ফেলে প্রায় ১ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখে। পরে পুলিশ ছাত্রলীগকর্মীদের ছেড়ে দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সৈয়দ মঞ্জুরুল কবির রিপন জানান, সামান্য ঘটনায় তারা কোনো অভিযোগ না করে আমার অনুপস্থিতিতে আমার অফিস ভাঙচুর ও অফিসের সামনে রাখা একটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেছে। ক্ষতির পরিমাণ ২ লক্ষাধিক টাকা। তিনি থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে আরো জানান।

মেহেরপুর সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ মো. গোলাম রসুল জানান, গত বৃহস্পতিবার মেহেরপুর ৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রিপন পক্ষের কতিপয় ছেলে মেহেরপুর বড়বাজার এলাকায় কতিপয় ছেলের সাথে গোলমান করে। ঘটনার একদিন পরে বড়বাজার এলাকার এক ছেলে শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকার নূর হোটেলে খেতে গেলে রিপন পক্ষের ছেলেরা খবর পেয়ে ওই হোটেলে প্রবেশ করে তাকে মারধর করার চেষ্টা করে। ওই সময় তারা হোটেল মালিকের ছেলে নূর মোহাম্মদকে মারধর করে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে কতিপয় ছেলে প্রতিবাদ করতে এগিয়ে যায়। ওই সময় পুলিশ তাদের বাধা দিলে তারা ফিরে আসে। এদিকে পুলিশ কলেজ মোড় এলাকা থেকে ছাত্রলীগের কতিপয় নেতা আটক করে থানা নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ছাত্রলীগের ছেলেরা তার প্রতিবাদ করে।

এ ঘটনায় মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিয়াজুল হক বলেছেন, সন্ধ্যায় বাসস্ট্যান্ড এলাকায় উদ্ভুত পরিস্থিতির জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। উত্তেজিতদের শান্ত করতে পুলিশ তাদের দাবড়ায়। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। কলেজ মোড় এলাকায় ছাত্রলীগের ছেলেরা বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করেছিলো। এখন সবই শান্ত রয়েছে।