বিরোধী দল ছাড়াই নবম জাতীয় সংসদের ১৯তম অধিবেশন শুরু
স্টাফ রিপোর্টার: বিরোধী দল ছাড়াই নবম জাতীয় সংসদের ১৯তম অধিবেশন গতকাল বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিকেল ৫টা ৫ মিনিটে অধিবেশন বসে। অধিবেশনের শুরুতে দেয়া স্বাগত বক্তব্যে তিনি বলেন, নবম জাতীয় সংসদের ১৯তম অধিবেশন নানাদিক দিয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্পিকার আরও বলেন, নবম সংসদের প্রথম বৈঠকের তারিখ থেকে আগামী ২৪ জানুয়ারি ২০১৪ সংসদের পাঁচ বছর পূর্ণ হবে। সংবিধানের ১২৩ (ক) অনুসারে মেয়াদ অবসানের কারণে সংসদ ভেঙে যাওয়ার ক্ষেত্রে এবং ভেঙে যাওয়ার পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে সংসদ সদস্যদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অর্থাৎ ২৫ অক্টোবর ২০১৩ থেকে ২৪ জানুয়ারি ২০১৪’র মধ্যে যেকোনো সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ প্রেক্ষাপটে বর্তমান ১৯তম সংসদ অধিবেশন গুরুত্বপূর্ণ। সরকারি ও বিরোধীদল এ অধিবেশনে সংবিধানের আলোকে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করবেন, বিতর্ক করবেন ও গঠনমূলক সমালোচনার মধ্যদিয়ে সংসদকে অধিক কার্যকর করবেন এবং যেকোনো মতপার্থক্য নিরসনে পদক্ষেপ নেবেন- এমনটাই জাতির প্রত্যাশা। সংসদ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সংসদকে কার্যকর করা এবং গণতন্ত্রের অব্যাহত অগ্রযাত্রা সুসংহত করার ক্ষেত্রে আপনাদের ভূমিকা ও সহযোগিতা একান্তভাবে কামনা করছি।
কার্যউপদেষ্টা কমিটির বৈঠক: অধিবেশন শুরুর আগে বিকেল চারটায় জাতীয় সংসদ ভবনে স্পিকারের সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদের কার্যউপদেষ্টা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কমিটির সদস্য সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভায় অংশগ্রহণ করেন। কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৯তম অধিবেশন আগামী ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে। আর প্রতিদিন বিকেল পাঁচটায় শুরু হয়ে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে। কমিটির সদস্য ডেপুটি স্পিকার কর্নেল (অব.) শওকত আলী, সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ মো. আবদুস শহীদ, সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, তোফায়েল আহমেদ, মো. ফজলে রাব্বী মিয়া, অ্যাডভোকেট মো. রহমত আলী, রাশেদ খান মেনন এবং আবদুল মতিন খসরু সভায় অংশ নেন। আইন, বিচার ও সংসদবিষয়কমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বিশেষ আমন্ত্রণে সভায় যোগদান করেন।
সভাপতি প্যানেল: অধিবেশনের শুরুতেই স্পিকার সংসদ পরিচালনার জন্য পাঁচ সদস্যের সভাপতিমণ্ডলীর প্যানেল নির্বাচন করেন। স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের অনুপস্থিতিতে সংসদ পরিচালনার জন্য নির্বাচিত সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যরা হলেন- আওয়ামী লীগের এবিএম গোলাম মোস্তফা, মো. শহীদুজ্জামান সরকার, জাতীয় পার্টির মো. মুজিবুল হক চুন্নু, বিএনপির জেডআইএম মোস্তফা আলী, আওয়ামী লীগের বেগম আশরাফুনেছা মোশাররফ।
শোকপ্রস্তাব গ্রহণ: স্পিকার বর্তমান সংসদের একজন সদস্যসহ বিশিষ্টজনদের মৃত্যুতে শোকপ্রস্তাব উত্থাপন করলে তা সংসদে সর্বসম্মতভাবে গ্রহণ করা হয়। তারা হলেন- বর্তমান সংসদের সদস্য গোলাম সবুর, সাবেক প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য মুহা. একরামুল হক, সাবেক চারজন সংসদ সদস্য হচ্ছেন শাহ্ জাহাঙ্গীর কবীর, কেএম হেমায়েত উল্লাহ (আওরঙ্গ), খলিলুর রহমান চৌধুরী ও আবদুল ওয়াহাব খান। এছাড়াও রয়েছেন সাবেক প্রধান বিচারপতি কামালউদ্দিন হোসেন, বিশিষ্ট আইনজীবী ড. এম জহির, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক দেশের প্রথম আইজিপি আবদুল খালেক, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর খ্যাতনামা সাহিত্যিক লুৎফর রহমান সরকার, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও কবি বেলাল মোহাম্মদ, বিশিষ্ট নাট্যজন আতিকুল হক চৌধুরী, কবি ও ভিসি আশরাফ হোসেন, স্বাধীন বাংলা বেতারের শিল্পী বিপুল ভট্টাচার্য এবং বাউলশিল্পী আবদুর রহমান বয়াতি। এ সময় প্রয়াতদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানোসহ দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন ও মোনাজাত করা হয়।