-প্রভাষক তুহিন আহমেদ
কোন ব্যক্তি কর্তৃক তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ স্বীকার করে অথবা অপরাধ স্বীকারের ইঙ্গিত বহনকারী বিবৃতি দিলে, তাকে অপরাধ স্বীকারোক্তি বলা হয়। মামলার তদন্তকালে তদন্তকারী পুলিশ অফিসার (আইও) ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬১ ধারার অধীনে অপরাধ সংঘটন সম্পর্কে সাক্ষীর এবং আসামির জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করে থাকেন।
সাক্ষ্য আইনে- ১৮৭২’র ২৮ ধারা অনুযায়ী ফৌজদারি মামলার ক্ষেত্রে কোনো প্রলোভন, ভীতি প্রদর্শন বা প্রতিশ্রুতি থেকে মুক্ত থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ স্বীকার করেন, তবে এ প্রকারের স্বীকারোক্তি প্রাসঙ্গিক হবে। ওই আইনের ২৫ ধারা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি পুলিশ অফিসারের কাছে অপরাধ স্বীকার করে কোনো উক্তি প্রদান করলে, তা তার বিরুদ্ধে প্রমাণ করা যাবে না। পুলিশ অফিসারের উপস্থিতিতে দোষ স্বীকার যদি ভয় বা প্রলোভন মুক্ত হয় কিংবা কোনো ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে হয়, তবুও আইনে তা গ্রহণযোগ্য হবে না।
তবে সাক্ষ্য আইনের ২৭ ধারা মতে, পুলিশ হেফাজতে থাকাকালে কোনো অভিযুক্ত ব্যক্তি দোষ স্বীকার করলে এবং তার ভিত্তিতে যদি অভিযোগের সাথে সম্পর্কযুক্ত কোনো আলামত বা অপরাধ সংক্রান্ত কোনো সন্ধান পাওয়া যায় বা আলামত উদ্ধার করা হয়, তাহলে দোষ স্বীকারের যেই অংশ উদ্ধারকৃত আলামতের সাথে স্পষ্টরুপে সংশ্লিষ্ট, তা সাক্ষ্যরূপে ব্যবহৃত হবে। প্রশ্ন হলো- অভিযুক্ত ব্যক্তি পুলিশের কাছে দোষ স্বীকার করে কিন্তু বিচারে গিয়ে দোষ স্বীকার না করলে কি হবে? এক্ষেত্রে ওই দোষ স্বীকার অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা যাবে না। তবে যতোখানি আলামত পাওয়া যাবে ততোখানি ব্যবহার করা যাবে। সুতরাং, পুলিশের কাছে অপরাধ স্বীকারোক্তির গ্রহণযোগ্যতা নেই, যদি পুলিশ অপরাধ সংশ্লিষ্ট কোনো আলামত উদ্ধার করতে না পারে অথবা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে অভিযুক্ত অপরাধ স্বীকারোক্তি না করে।