স্টাফ রিপোর্টার: সাধারণ মানুষ চমক পছন্দ করে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, ক্ষমতায় থেকে সাফল্য দেখানো সহজ নয়। তার পরও এবার চমক দেখানো হবে। তিন দিন পর সেই চমক দেখতে পাবেন। গতকাল বৃহস্পতিবার ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় জয় এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের কয়েকটি সূত্র বলছে, রোববার থেকে সজীব ওয়াজেদ জয় নির্বাচনী প্রচারে নামবেন। সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, আমি এসেছি দলকে সহযোগিতা করতে। আমি প্রচার চালাবো। তবে আপাতত প্রার্থী হওয়ার পরিকল্পনা নেই। প্রার্থী নির্বাচনে তার ভূমিকা থাকবে না উল্লেখ করে জয় বলেন, বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে জরিপ চলছে এবং তৃণমূলের সাথে পরামর্শ করে প্রার্থী নির্বাচন করা হচ্ছে।
শুক্রবার মসজিদে যাওয়ার পরামর্শ: সজীব ওয়াজেদ বলেন, আমরা জেনেছি, শুক্রবার খুতবায় বিরোধীরা অনেক মিথ্যা প্রচারণা করে। আমি তো সারাদেশে সফর করে অপপ্রচারের জবাব দিতে পারব না। তাই বিরোধীদলের অপপ্রচারের জবাব দিতে দলীয় নেতাকর্মীদের জুমার দিন (শুক্রবার) মসজিদে যেতে হবে। তাহলে কেউ মিথ্যা প্রচারণা করতে পারবে না।’
৩শ প্রার্থীর ৩শ ফেসবুক পেজ: জয় বলেন, প্রচারের অনেক পরিকল্পনা করা হয়েছে। ফেসবুকে যেমন আমার পেজ রয়েছে। ফেসবুকে আরও প্রচারের পরিকল্পনা রয়েছে। পরিকল্পনা আছে ৩শ প্রার্থীর ৩শ ফেসবুকে পেজ খোলার। এ জন্য একটি টিমও করা হয়েছে।
নমনীয়তা বাড়াতে হবে: আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড ঠিক আছে, তবে আরেকটু নমনীয়তা দেখাতে হবে- একজন সাংবাদিকের এমন পরামর্শের বিষয়ে জয় বলেন, আমরা কারও প্রতি কখনো ঔদ্ধত্য (অ্যারোগ্যান্ট) নই। ক্ষমতায় থাকলে দলীয় কর্মকাণ্ড ধীর হয়ে যায়। তবে সেটা এখন আর নেই। জয় বলেন, আমরা উড়াল সড়ক করছি। অথচ পত্রিকায় প্রতিবেদন হচ্ছে এর জন্য মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। অথচ এটি নির্মিত হলে কী উপকার হবে, সেটা বলা হয় না।
সজীব ওয়াজেদ বলেন, অত্যন্ত দুঃখের ব্যাপার, বর্তমানে বাংলাদেশে দুটি দল তৈরি হয়েছে, যার একটি স্বাধীনতার পক্ষের, অন্যটি বিপক্ষের। তিনি বলেন, আমার মায়ের (শেখ হাসিনা) ধারণা ছিলো, কাজ করলে ভোট পাওয়া যাবে। কিন্তু আসলে সেটা নয়। একজন বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানের উদাহরণ দিয়ে জয় বলেন, তিনি আমাকে বলেছিলেন, কাজ করেও ভোট পাওয়া যায় না। আবার কাজ না করেও ভোট পাওয়া যায়। এটা নির্ভর করে প্রচারের ওপর। সে জন্য আমরা প্রচারের ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্বারোপ করছি।
জয় বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর শহরে এখন বিদ্যুতের সমস্যা নেই। আগামী দিনে এ দলটি ক্ষমতায় থাকলে গ্রামেও বিদ্যুতের অভাব হবে না। বর্তমানে দেশ যেভাবে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে, স্বাধীনতার পর আর এতো উন্নয়ন হয়নি। ১৬ কোটি মানুষের দেশে আমরা যেভাবে উন্নয়ন করেছি, এ সফলতা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। সুতরাং আমার বিশ্বাস, আওয়ামী লীগকে আবার মানুষ ক্ষমতায় আনবে।
প্রার্থী পছন্দ না হলেও নৌকায় ভোট দিন- প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের বিষয়ে সজীব ওয়াজেদ বলেন, বর্তমান সাংসদেরা যদি মনোনয়ন না পান, তাহলে তারা অসন্তুষ্ট হতেই পারেন। এ অসন্তুষ্টি থেকে তারা যেন দলীয় কর্মকাণ্ড থেকে দূরে না থাকেন, সে জন্য প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেছেন। তিনি বলেন, এদেশে রাজনীতি করা আসলে কষ্টের। এখানে দল ও পদবি না থাকলে কাজ করা যায় না।
গণমাধ্যমের কাছে থেকে সহযোগিতার বিষয়ে জয় বলেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ইশতেহারের প্রায় ৯০ ভাগ বাস্তবায়ন করেছে। সরকারের সমালোচনা থাকবেই। এ সমালোচনার জায়গাটায় যদি একটু ভারসাম্য আনা যায়, সেটাই মূলত আমরা প্রত্যাশা করছি। তিনি বলেন, হেফাজতে ইসলামের ঘটনায় মূলধারার গণমাধ্যমগুলো সত্য তুলে ধরেছে। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ কিছু গণমাধ্যমে নেতিবাচক প্রচার হয়েছে। তবে গ্রামেগঞ্জে হেফাজতের এ অপপ্রচার এখন আর কাজে আসছে না। সাম্প্রতিক কিছু জরিপে এটা উঠে এসেছে।
জয় বলেন, বিরোধীদলে থাকলে সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার অনেক সহজ হয়। সরকারের এতো উন্নয়ন করার পর নতুন করে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে মানুষকে বোঝানো সহজ নয়। তবে মানুষের মধ্যে এ উন্নয়ন তুলে ধরতে হবে। তাহলে তারা তুলনা করে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। কারণ আগামী নির্বাচনে ভোটারদের একজনকে না একজনকে বেছে নিতেই হবে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হতে আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান জয়। মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকেরা উপস্থিত ছিলেন।