আলমডাঙ্গা ডিগ্রি কলেজে গণিত শিক্ষকের শূন্যপদে নিয়োগে অনিয়ম

তদন্তের দাবিতে শিক্ষামন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ

 

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা ডিগ্রি কলেজে গণিত শিক্ষকের শূন্যপদে অর্থের বিনিময়ে  নিয়োগের অনিয়ম তদন্তের দাবি উঠেছে। চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার গোবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা মজিবুল হক গত ১১ সেপ্টেম্বর এ ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী ও সচিবসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

লিখিত অভিযোগে তিনি জানান ,আলমডাঙ্গা ডিগ্রি কলেজ একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কলেজটির গণিত বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের জন্য অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম গত ৭ জানুয়ারি স্থানীয় একটি দৈনিকে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। গত ৬ জুন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। নিয়োগ পরীক্ষায় মোট নয়জন অংশগ্রহণ করেন। ওই নয়জনের মধ্যে মজিবুল হকের ছেলে ফারুক হোসেনও পরীক্ষার্থী হিসেবে অংশ নেন। মজিবুল হক দরখাস্তে দাবি করেছেন, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় তার ছেলে ফারুক হোসেন সবচেয়ে বেশি নম্বর পেয়েছেন। অথচ অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম যোগসাজশ করে মহাসীন আলীকে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে নিয়োগ প্রদান করেন।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, সরকারি চাকরিবিধি অনুযায়ী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলেও এক্ষেত্রে তা মানা হয়নি। দেশের প্রচলিত সরকারি চাকরিবিধি অনুযায়ী চাকরির বয়সসীমা সর্বোচ্চ ৩০ বছর হলেও মহাসীন আলীর একাডেমিক সনদ অনুযায়ী জন্ম তারিখ ৯ আগস্ট ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দ। সে হিসেবে তার বর্তমান বয়স ৩৮ বছর এক মাস। অথচ ফারুক হোসেনের একাডেমিক সনদ অনুযায়ী জন্ম তারিখ ১৯৮৫ সালের ২২ সেপ্টেম্বর এবং বয়স ২৮ বছর। তাছাড়া মহাসীন আলী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অন্যতম খুনি মেজর (অব.) বজলুল হুদার নিকটাত্মীয়।  মহাসীন আলীকে গত ৬ জুন তারিখের নিয়োগ পরীক্ষায় চূড়ান্ত হিসেবে নিয়োগ নিশ্চিত করা হয়।  মহাসীন আলী আলমডাঙ্গা ডিগ্রি কলেজের পাশাপাশি গত চারমাস (জুন থেকে সেপ্টেম্বর) ধরে তার আরেক কর্মস্থল আলমডাঙ্গা উপজেলার ঘোষবিলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন এবং নিয়মিত বেতন ভাতা তুলছেন। যা চাকরিবিধির প্রতি চরম অবমাননা। দরখাস্তে আরও অভিযোগ করা হয়েছে এক বছর আগে বর্তমান অধ্যক্ষ অর্থের বিনিময়ে মহাসীন আলীর স্ত্রীকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন। গণিতের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে এরকম অযোগ্য শিক্ষককে অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ প্রদান করায় যেমন আলমডাঙ্গা ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার মানকে হুমকির মুখে ঠেলে দেয়া হয়েছে।

বিষয়টি সরেজমিন তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষাসচিবসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় প্রধানদেরকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে চাকরিপ্রাপ্ত মহসীন আলী জানান, বজলুল হুদা তার নিকটতম নয়, দূর সম্পর্কের আত্মীয়। তিনি দাবি করেন, এখনও তার নতুন কর্মস্থলে যোগদান করেননি।

অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম জানান, নিয়োগে কোনো অনিয়ম করা হয়নি। নিয়োগ কমিটি তাকে পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ নিশ্চিত করেছেন এবং মহসীন আলী যোগদানও করেছেন। জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসাইন জানান, অভিযোগের বিষয়টি এখনও হাতে পাননি। তবে পেলে তা দেখবেন।