ইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ছাত্রলীগের সাথে ছাত্রদল-শিবিরের সংঘর্ষের ঘটনায় ক্যাম্পাসে এখনও থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। গতকাল রোববার ক্যাম্পাসের সার্বিক পরিবেশ নিয়ন্ত্রণের জন্য সকাল থেকে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন ছিলো। ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীদের অনেকটা নিষ্ক্রীয় থাকতে দেখা গেছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম স্বাভাবিক ছিলো। সবকটি বিভাগে ক্লাস পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় ইবি থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয়সূত্রে জানা যায়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ছাত্রলীগের সাথে ছাত্রদল-শিবিরের সংঘর্ষের ঘটনায় ক্যাম্পাসে এখনও থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। গতকাল রোববার সকাল থেকে মেন গেটসহ ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে কুষ্টিয়া সহকারী পুলিশ সুপার লিমন রায়ের নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন ছিলো। এ ব্যাপারে সহকারী পুলিশ সুপার লিমন রায় বলেন, আমি সকাল থেকে ক্যাম্পাসে অবস্থান করছি। ক্যাম্পাসের সার্বিক পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ সর্বদা প্রস্তুত। কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ শহর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বহনকারী বাসগুলো যথাসময়ে ক্যাম্পাসে এসে পৌঁছায়। পুলিশ শিক্ষার্থীদের তাদের পরিচয়পত্র দেখিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করান। ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদেরকে তাদের দলীয় টেন্টে অবস্থান করতে দেখা গেছে। তবে এ সময় তারা অনেকটা নিষ্ক্রীয় ছিলো। বেলা ১১টার দিকে ছাত্রদল ক্যাম্পাসে ঢোকার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদেরকে ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেয়নি।
এদিকে শনিবার ক্যাম্পাসে সংঘর্ষের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানায় একটি মামলা দায়ের করে। ছাত্রদলের ইবি সভাপতি ওমর ফারুক ও সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলামের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা তিনশ জনের বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে ইবি থানার ওসি মনিরুজ্জামান নিশ্চিত করেন। এ বিষয়ে ইবি থানার ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি মামলা দয়ের করেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ক্যাম্পাস এখন শান্ত রয়েছে। ছাত্রসংগঠনগুলোর মধ্যে সহাবস্থানের চেষ্টা চলছে।
শিবিরের বিবৃতি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রশিবির এক প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক মো. আসাদুল্লাহ স্বাক্ষরিত পাঠানো প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ছাত্রলীগ-ছাত্রদল সংঘর্ষের ঘটনায় ইসলামী ছাত্রশিবির কারও পক্ষ নেয়নি। এছাড়া যে বা যারা অস্ত্রের মহড়া দিয়ে ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করেছে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানানো হয় লিখিত ওই বিবৃতিতে।
উল্লেখ্য, গত শনিবার ছাত্রদলের দু কর্মীকে মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সাথে ছাত্রদল-শিবিরের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ছাত্রদলের সহসভাপতিসহ চারজন গুলিবিদ্ধ ও ছাত্রলীগের দুজন গুরুতর আহত হন। আহত হন আরও ৩৫ জন।