ঝিনাইদহে ৫০ বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট : পুরুষশূন্য গ্রাম

আওয়ামী লীগ নেতা হত্যাকাণ্ড পুঁজি করে অর্থবাণিজ্যের অভিযোগ

ঝিনাইদহ অফিস: ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হরিশঙ্করপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছানার উদ্দীন হত্যাকাণ্ডকে পুঁজি করে অর্থবাণিজ্য শুরু হয়েছে। এরকমই অভিযোগ তুলে স্থানীয়রা বলেছেন, দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের ধরে গত ২২ আগস্ট রাতে পানামী গ্রাম থেকে ওই আওয়ামী লীগ নেতাকে কুপিয়ে খুন করে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় হরিশঙ্করপুর ইউনিয়নের ৫টি গ্রামের অন্তত ৫০টি বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে দুর্বৃত্তরা। হত্যাকাণ্ডের পর দু শতাধিক মানুষ জীবন ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে আর্য্যনারায়ণপুর গ্রাম।  এলাকাবাসী জানায়, হরিশঙ্করপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কোন্দলের জের ধরে প্রায় এক মাস যাবত আওয়ামী লীগ নেতা ছানার উদ্দীন জীবনের ভয়ে গ্রামের বাইরে অবস্থান করেছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে আর্য্যনারায়ণপুর গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা ইবাদত হোসেনের সাথে ছানার উদ্দীনের বিরোধ চলে আসছিলো। ২২ আগস্ট রাতে এলাকার সাবেক মেম্বার আওয়ামী লীগ নেতা আজিজুর রহমানের মধ্যস্থতায় নিজ গ্রামে ফেরার জন্য পার্শ্ববর্তী পানামি গ্রামের রাস্তায় পৌঁছুলে ওত পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা ছানার উদ্দীনের ওপর হামলা চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। হত্যাকাণ্ডের ৩ দিন পর নিহতের স্ত্রী রেবেকা খাতুন বাদী হয়ে ৫৬ জনকে আসামি করে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তবে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশে এ মামলায় বিভিন্ন গ্রামের ৫৬ জনকে আসামি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।  সরেজমিনে এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, এ হত্যাকাণ্ডের পর

2nd3 copy

পানামী, বাঁকড়ী, গোবিন্দপুর, সুতুলিয়া ও আর্য্যনারায়ণপুর গ্রামের ইবাদত হোসেন, আকবর হোসেন, দিয়ানত আলী, তাইজাল, রাজা, রিপন, হায়দার আলী, আব্দুল সাত্তার, সেকেন্দার আলী, বাক্কা, নায়েব আলী, নজরুল ইসলাম, আব্দুল বারেক, আলাউদ্দীন, আইয়ুব হোসেন, আব্দুল কাদের, পাতা খানসহ অন্তত ৫০ ব্যক্তির বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় তারা ঘরের আসবাবপত্র, ধান, চাল, সোনার গয়না, গরু-ছাগল, মেশিন লুট করে নিয়ে গেছে। কেটে সাবাড় করা হয়েছে শ শ গাছ। এতে প্রায় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। হামলায় সময় বেশ কয়েকজন নারী শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছেন। হত্যাকাণ্ডকে পুঁজি করে বাণিজ্যে নেমেছেন আর্যনারায়ণপুর গ্রামের আব্দুল গফুর, জাহিদুল হত্যা মামলার পলাতক আসামি নরহরিদ্রা গ্রামের খোন্দকার জিল্লুর রহমান, গোবিন্দপুর সুতুলিয়া গ্রামের সাবেক মেম্বার ইব্রাহিম হোসেন। তারা এলাকার নিরীহ মানুষের নিকট থেকে জনপ্রতি ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা চাঁদা নিচ্ছেন বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ।  হরিশঙ্করপুর ইউপি চেয়ারম্যান খোন্দাকার ফারুকুজ্জামান ফরিদ বলেন, প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে এলাকার মানুষকে নিয়ে গতকাল সোমবার পানামী স্কুল মাঠে সমাবেশ করা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে কেউ অর্থবাণিজ্য করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনকে অনুরোধ করা হয়েছে।  এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি কাজী জালাল উদ্দীন আহমেদ বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় থানায় কেউ অভিযোগ করেননি। তিনি বলেন, ভাঙচুর, লুটপাট ও চাঁদাবাজির বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।