মেহেরপুর জেলার দক্ষিনাঞ্চলে ছিনতাই চাঁদাবাজি ও চুরি-ডাকাতি বৃদ্ধি


আড়াই বছরে অসংখ্য খুনের ঘটনায় ভীতু জনপ্রতিনিধিরা কাজ করছেন গ্রামে, বাস করছেন শহরে

মেহেরপুর অফিস: মেহেরপুর জেলার দক্ষিণাঞ্চল আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। খুন, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, ডাকাতি নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। গ্রামগঞ্জের মানুষ জীবন হাতে করে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে। সন্ত্রাসীরা মানুষ খুন করে ফেলে রেখে যাওয়ার পর লাশ নিয়ে রাজনীতির কারণে পুলিশ প্রশাসনও সুষ্ঠু তদন্ত করে রিপোর্ট প্রদান কিংবা আসামি ধরতে পারছে না। যে কারণে দিনের পর দিন খুনের ঘটনায় পুলিশ লাশ উদ্ধার করে হাসপাতালমর্গে পাঠানো ছাড়া তেমন কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না। গত ৩/৪ বছরে মেহেরপুর দক্ষিণাঞ্চলে চাঁদাবাজি, বিল-খাল দখল, ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনায় জনপ্রতিনিধিসহ নয়টি নৃশংস খুনের ঘটনা ঘটেছে। ওই ঘটনায় মামলা হলেও নানা কারণে পুলিশ হত্যার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল কিংবা আসামি আটক করতে ব্যর্থ হয়েছে। উল্লেখযোগ্য খুনের শিকার অধিকাংশ জনপ্রতিনিধি হওয়ায় সম্প্রতি সময়ে জেলার দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন ইউপি চেয়ারম্যানসহ বেশ কিছু জনপ্রতিনিধি গ্রাম ছেড়ে মেহেরপুর শহরে বাস করছেন। তারা দিনের বেলায় গ্রামগঞ্জে সেবা দিলেও রাতে বাস করেন শহরে।

বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও সাংবাদিকের ডায়েরি অনুযায়ী সর্বশেষ মেহেরপুর সদর উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য শমসের মালিথা গত ১৯ এপ্রিল সন্ধ্যারাতে প্রতিপক্ষের হামলায় নৃশংসভাবে খুন হন। তিনি সদর থানা বিএনপির সহসভাপতি ছিলেন। প্রায় দু মাস পার হলেও তার পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করার সাহস পাননি। চলতি বছরের ২২ মার্চ সন্ধ্যারাতে মুজিবনগর উপজেলার বাগোয়ান ইউনিয়নের রতনপুর গ্রামের হেলাল ডাক্তারকে বোমা মেরে খুন করা হয়। তাকে উদ্ধারে এগিয়ে এলে তার মেয়ে সেতুকেও প্রাণ দিতে হয়। ওই ঘটনায় তার পরিবারের পক্ষ থেকে ১৪/১৫ জনকে আসামি করে মুজিবনগর থানায় মামলা দায়ের করা হয়। ডা. হেলাল ছিলেন মুজিবনগর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক। নিহতদের পরিবার ও এলাকার অনেকে বলেছেন, এলাকার সক্রিয় চাঁদাবাজরা দল চালানোর নামে চাঁদা দাবি দিয়ে না পেয়ে তাদেরকে খুন করেছে। চাঁদা দাবি মেটাতে না পারায় খুন হতে হয়েছে আরও কয়েকজন জনপ্রতিনিধিকে।

২০১০ সালের ২৩ জানুয়ারী দিনগত রাত ১২টার দিকে মুজিবনগর উপজেলার মহাজনপুর ইউপির ওয়ার্ড সদস্য মুজিবনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শহিদুল ইসলাম ওরফে বাবলুকে সন্ত্রাসীরা বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে পার্শ্ববর্তী টুপলার বিলের ধারে কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যা করে লাশ ফেলে রেখে যায়। বিল দখলকে কেন্দ্র করে তিনি খুন হন বলে জানা যায়। মুজিবনগর উপজেলার গোপালপুর গ্রামের আবু বক্কর মণ্ডলের বড় ছেলে বাবলু মেম্বার খুনের ঘটনায় পর দিন তার ভাই আহসান হাবিব ৭/৮ জনকে আসামি করে মুজিবনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। একই বছর ২০ মার্চ রাতে মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি ইউনিয়নের হিজুলী গ্রামের নাজিমউদ্দিনের বড় ছেলে নূর ইসলাম বাড়ি থেকে প্রায় চারশ গজ দূরে দীনদত্ত ব্রিজের উত্তর পাশে রাস্তা সংলগ্ন একটি বৈদ্যুতিক মোটর ঘরের পাশে খুন হন। গ্রামের একটি নয় একর সরকারি খাসজমি ও পুকুর নিয়ে গ্রামের হাজি গ্রুপ ও দেওয়ানবাগী গ্রুপের বিরোধের জের ধরে নূর ইসলাম খুন হন। ওই মামলা শেষ হলে নিহত নূর ইসলামের মা ছাদেকা খাতুনের দাবি তিনি ছেলে হত্যার সুষ্ঠু বিচার পাননি।

ওই বছর ছয় জুলাই রাত ১০টার দিকে মেহেরপুর জেলা সদরের পিরোজপুর ইউপির ওয়ার্ড সদস্য মেহেরপুর সদর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক গ্রাম্যচিকিৎসক ডা. নজরুল ইসলামকে কৌশলে বাড়ি থেকে বের করে একদল সন্ত্রাসী জোরপূর্বক অস্ত্রের মুখে বাড়ি থেকে প্রায় দু কিলোমিটার দূরে দামুড়হুদার কালিয়াবকরি খালপাড়ে নিয়ে কুপিয়ে ও জবাই করে দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে হত্যা করে লাশ ফেলে রেখে যায়। মেহেরপুরের কাঁঠালপোতা গ্রামের মরহুম আফতাব উদ্দিনের ছেলে নজরুল ইসলাম খুনের নেপথ্যে সুস্পষ্ট কোনো কারণ জানা না গেলেও প্রাথমিকভাবে জানা যায়- চাঁদা না দেয়ায় সন্ত্রাসীরা তাকে খুন করেছে। ওই খুনের ঘটনায় তার পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেনি। একই বছরের ২৯ জুলাই সকাল পৌনে ১০টার দিকে মেহেরপুর সদর উপজেলার আমদহ ইউনিয়ন পরিষদের সামনে মুজিবনগর উপজেলার মহাজনপুর ইউনিয়নের সাবেক ওয়ার্ড সদস্য মুজিবনগর উপজেলা বিএনপির সদস্য আফছার উদ্দিন ওরফে আফাজুদ্দিন মেম্বারকে কুপিয়ে খুন করে প্রতিপক্ষ। মুজিবনগর উপজেলার পরানপুর গ্রামের মরহুম দোহা বক্সের ছেলে আফাজুদ্দিন মেম্বার খুনের ঘটনায় তার মামাতো ভাই খুনের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আহসান হাবিব ওরফে মিরাজ মেহেরপুর সদর থানায় চিহ্নিত তিনজনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ১ সেপ্টম্বর রাত সাড়ে ১১টার দিকে মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি কোলার মোড় থেকে দর্জির কাজ শেষে মোটরসাইকেলযোগে নিজ গ্রাম ময়ামারী ফেরার পথে চাঁদবিল-ময়ামারী গ্রামের মাঝে ছিনতাইকারীদের হাতে খুন হয় সাইফুল ইসলাম ওরফে রকি নামের এক যুবক। একই সময় ছিনতাইকারীদের হাতে আহত হন রকির পিতা গোলাম মোস্তফা। ছিনতাইকারীরা রাস্তার দু’ধারে গাছের সাথে রশি বেঁধে মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে এবং রকিকে শ্বাসরোধ ও গাছের ডাল দিয়ে মাথায় আঘাত করে খুন করে মোটরসাইকেলটি নিয়ে এলাকা ত্যাগ করে। এ ঘটনায় রকির পিতা গোলাম মোস্তফা বাদী হয়ে অজ্ঞাত চারজনকে আসামি করে মেহেরপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। গত ৬ সেপ্টম্বর মধ্যরাতে মুজিবনগর উপজেলার মহাজনপুর ইউপির গোপালপুর গ্রামের আরশাদ আলীর ছেলে হাসিবুল ইসলাম ওরফে বাবুর বাড়িসহ তিন বাড়িতে ডাকাতি হয়। ওই সময় প্রতিবেশীদের সাথে নিয়ে বাবু প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করলে ডাকাতদলের ছোঁড়া একটি গুলি তার মাথা ভেদ করে। এতে ঘটনাস্থলেই তার মত্যু হয়।

শুধু রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে টানাটানি ও প্রতিপক্ষ প্রধান দুটি দলের প্রভাব পাশ কাটিয়ে পুলিশ ওই সব মামলার আসামিদের গ্রেফতার কিংবা আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করতে পারছে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এমন ইঙ্গিতও দিয়েছেন। পুলিশের একাধিক সূত্র মন্তব্য করতে গিয়ে বলেছেন, রাজনৈতিক কোনো পরিচয় না থাকায় মেহেরপুর সদর উপজেলার কালীগাংনীর পাটক্ষেতে আন্না হত্যা এবং মেহেরপুর যাদবপুর গ্রামের মাঠে গমক্ষেতে রাশিদা ও রাখি খুন গুম মামলার আসামিদের আটক করা সম্ভব হয়েছে।

এদিকে মেহেরপুরের বিভিন্ন গ্রামেগঞ্জে প্রায় প্রতিরাতে চুরি-ডাকাতি হচ্ছে। ১৭ আগস্ট রাতে মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপির জানারুল ইসলামের বাড়িতে ডাকাতিকালে ডাকাতদল গৃহকর্তার ছেলে ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্রের হাসানুজ্জামান টিপু ও মেয়ে স্কুলশিক্ষিকা জাকিয়া সুলতানাকে কুপিয়ে জখম করে প্রায় দু লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় ডাকাতদল একটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এছাড়াও মেহেরপুর-আশরাফপুর, মেহেরপুর-মহাজনপুর, মেহেরপুর-মুজিবনগরসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়কে প্রায় প্রতিরাতে ঘটছে ছিনতাইয়ের ঘটনা। গত ২২ আগস্ট মেহেরপুর-মহাজনপুর সড়কে ছিনতাইকারীদের অস্ত্রাঘাতে গরুব্যাপারী মেহেরপুর সদর উপজেলার আশরাফপুর গ্রামের ফরজ মল্লিকের ছেলে আশাদুল ও একই গ্রামের ফজলুর ছেলে চাঁদ আলী আহত হয়। তাদের উদ্ধার করে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে আশাদুলকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়। ওই রাতে ছিনতাইকারীরা ব্যবসায়ীদের দু লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়। আম ও লিচুর মরশুমে মেহেরপুর দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন বাগানে চলেছিলো নীরব চাঁদাবাজি। বর্তমান সময়ে মেহেরপুর সদর উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের সোনাপুর, কাঁঠালপোতা, বলিয়ারপুর, টুঙ্গি, গহরপুর, আমদহ ইউনিয়নের আশরাফপুর, ইসলামপুর, সাহেবপুর, টেংরামারী, মুজিবনগর উপজেলার মহাজনপুর ইউনিয়নের যতারপুর, কোমরপুর, মহাজনপুর, বাবুপুর, কোমরপুর, বাগোয়ান ইউনিয়নের রতনপুর, ঢোলমারী, বাগোয়ান, আনন্দবাস, জয়পুর, তারানগর, মোনাখালী ইউনিয়নের রশিকপুর, শিবপুর, বিশ্বনাথপুর ও মোনাখালীসহ গ্রামগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে চলছে নীরব চাঁদাবাজি। গোপনে এমন তথ্য দিয়েছেন অনেকে। প্রাণের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে জানিয়েছেন, জেলার দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন সংগঠনের নামে নতুন নতুন চাঁদাবাজিতে এগিয়ে রয়েছে। এদের কেউ কেউ লিফলেট দিয়েই চাঁদাবাজি করছে। ইটভাটা, বাগানমালিক, মাছচাষিসহ উচ্চ ও মধ্যবৃত্ত লোকদের কাছে এরা চাঁদা দাবি করছে। চাঁদাবাজদের মধ্যে মুজিবনগরের মহাজনপুর এলাকায় বিকাশ মজুমদারের নাম জোরে-শোরে শোনা যাচ্ছে। এছাড়া গত ২৭ আগস্ট চুয়াডাঙ্গার ভালাইপুর-কলাবাড়ি সড়কে চাঁদাবাজির সময় আটক হয় মেহেরপুর সদর উপজেলার কাঁঠালপোতা গ্রামের সালেমিন। সে মেহেরপুর সদর উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের কাঁঠালপোতা গ্রামের হযরত আলীর ছেলে। এলাকার অনেকের দাবি, তার হেফাজতে ২টি আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে এবং তার সাথে ওই গ্রামে তার আরও কয়েকজন সহযোগী বয়েছে। বিকাশ মজুমদারের হেফাজতে রয়েছে প্রায় হাফ ডজন আগ্নেয়াস্ত্র।

এসব ঘটনার পরও মেহেরপুরে গ্রামগঞ্জের মানুষ সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে। এর জের ধরে ১ আগস্ট মেহেরপুর সদর উপজেলার আমদহ গ্রামের মাঠের একটি কলাবাগান ঘিরে মুজিবনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামের সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজ জিয়াকে আটক করে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করে এলাকাবাসী। এর আগেও মুজিবনগর উপজেলার রতনপুর এলাকায় উপজেলার জয়পুর গ্রামের অমূল্যকে ও মেহেরপুর সদর উপজেলার নতুন দরবেশপুর গ্রামের আইজুদ্দিনের ছেলে জাফরকে কাঁঠালপোতা গ্রামবাসী পিটিয়ে মেরে ফেলে।

এদিকে এলাকায় খুন, ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও চুরি-ডাকাতির ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ায় এলাকার জনপ্রতিনিধিরা গ্রাম ছেড়ে রাতে শহরে বাস করছেন। মেহেরপুর সদর উপজেলার পিরোজপুর ইউপি চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা মো. সামছুল আলম, মুজিবনগর উপজেলার মহাজনপুর ইউপি চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামী লীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক আমাম হোসেন মিলু, মোনাখালী ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা সফিকুল ইসলাম, মুজিবনগর উপজেলা চেয়ারম্যান জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলামসহ মেহেরপুর জেলার দক্ষিণাঞ্চলের বেশ কিছু জনপ্রতিনিধি এলাকা ছেড়ে মেহেরপুর শহরে বাস করছেন। অনেকে শহরের নিজ বাড়ি ও অফিস রুম করে জনসেবা করছেন। এতে করে এলাকার মানুষের সেবায় ব্যাঘাত ঘটছে। তারপরও জীবনের নিরাপত্তায় তারা শহরে থাকছেন বলে কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন।

এ ব্যাপারে পিরোজপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. সামছুল আলম বলেন, এলাকায় ব্যাপক আকারে চুরি-ডাকাতি ও চাঁদাবাজি হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা নিয়েও তিনি সমালোচনা করেন। মহাজনপুর ইউপি চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামী লীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক আমাম হোসেন মিলু বলেন, এলাকায় চাঁদাবাজির ঘটনা শোনা যাচ্ছে। এলাকার লোকজনও ভীতু সন্ত্রস্ত্র হয়ে রয়েছে। তিনি মনে করেন, সরকারের বিরোধীপক্ষ তাদের শেলটার দিচ্ছে। একই ইউনিয়নের ওয়ার্ড সদস্য রোকনুজ্জামান রোকন জানান, এ পর্যন্ত কেউ তার কাছে চাঁদা দাবি করেনি। আর কেউ চাঁদা দিয়েছে এমনটি তার জানা নেই।

মেহেরপুর সদর থানাধীন সাহেবপুর আইসি ক্যাম্প ইনচার্জ এসআই গিয়াস জানান, এ পর্যন্ত তার কাছে কেউ চাঁদাদাবির অভিযোগ আনেনি। অভিযোগ পেলে প্রযোজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। মুজিবনগর থানার ওসি রবিউল হোসেন বলেন, আকস্মিকভাবে একেকটি চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। তবে এলাকায় চাঁদা দাবির মতো ঘটনা গত ২/৩ মাসের মধ্যে শোনা যাচ্ছে না। কেউ তার কাছে অভিযোগও দেয়নি। তিনি মহাজনপুর এলাকার বিকাশ মজুমদারের কথা শুনেছেন। যাচাই করে দেখেছেন বিকাশ মজুমদার মুজিবনগর উপজেলার মহাজনপুর ইউপি’র গোপালপুর গ্রামের হেবা চৌকিদারের ছেলে রিজন। তবে তাকে এ এলাকায় দেখা যায়না। সে এ এলাকায় আসেও না। শুনেছি সে ঢাকার গাজিপুর এলাকায় বিয়ে করে সংসার করছে। এ অঞ্চলে কেউ তাকে দেখলে কিংবা চাঁদাবাজির অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি এলাকাবাসীর উদ্দেশে বলেন, সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজির ঘটনার তথ্য দিয়ে পুলিশের সাহায্য নিতে।