কুড়ুলগাছি সমবায় সমিতির সাবেক সভাপতিসহ তিনজনকে সাড়ে ১৮ লাখ টাকা ফেরত দেয়ার নোটিশ

দর্শনা অফিস/কুড়লগাছি প্রতিনিধি: দামুড়হুদার কুড়ুলগাছি আদর্শ সমবায় সমিতির সাবেক সভাপতি উজির আলী, ম্যানেজার রমজান আলী ও হিসাবরক্ষক রাশেদ হায়দারের বিরুদ্ধে সাড়ে ১৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক আত্মসাতের টাকা ফেরত চেয়ে দেয়া হয়েছে লিখিত নোটিশ। সাতদিনের মধ্যে টাকা ফেরতের তাগিদ দিয়েছে সমিতির কর্তৃপক্ষ। সাতদিনের মধ্যে এ টাকা ফেরত চাওয়া হলেও বর্তমান পরিষদের সভাপতি হাফিজুর রহমান চৌধুরী কর্তৃক আত্মসাতকৃত টাকা কবে নাগাদ ফেরত দেবেন তা এখনো পরিষ্কার হয়নি।

জানা গেছে, দামুড়হুদা উপজেলার কুড়ুলগাছি আদর্শ সমবায় সমিতির ত্রিবার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় গত বছরের ৩০ অক্টোবর। নির্বাচিত কমিটি আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করে ছয় নভেম্বর। দায়িত্বভার গ্রহণের পর প্রায় ১০ লাখ টাকা হিসেব-নিকেশে গরমিল পায়। সাবেক সভাপতি উজির আলী, ম্যানেজার রজমান আলী ও হিসাবরক্ষক রাশেদ হায়দার মিলনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন খাতে ১৮ লাখ ৪২ হাজার ৬৬ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। এছাড়া হিসাবরক্ষক রাশেদ হায়দার মিলনের বিরুদ্ধে এককভাবে ২৯ হাজার ৪৪৮ টাকা হিসাবে তছরুপের অভিযোগও পাওয়া যায়। এ অভিযোগ তদন্তের জন্য শপথের পাঁচ দিনের মাথায় ১২ নভেম্বর বিশেষ সভায় সিদ্ধান্ত মোতাবেক তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সে মোতাবেক পরদিন জনতা ব্যাংক দর্শনা শাখার কর্মকতা আব্দুর রহমানকে আহ্বায়ক করে আট সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি অভিযুক্ত সভাপতি, ম্যানেজার ও হিসাবরক্ষকের দায়িত্ব থাকাকালীন গত এক জুলাই ২০১১ থেকে চার নভেম্বর ২০১২ পর্যন্ত ১৬ মাসের হিসাব-নিকেশের তদন্ত শুরু করে। টানা ১০ মাস ১৭ দিনের তদন্ত শেষে গত শুক্রবার সমিতির বার্ষিকসভায় আনুষ্ঠিকভাবে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। ১৪ পাতা বিশিষ্ট লিখিত তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে। সেই সাথে কমিটির বর্তমান সভাপতি হাফিজুর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে এক লাখ ৬৮ হাজার ১১৮ টাকা তছরুপের সন্ধান মেলে। অবশ্যয় এ টাকা তিনি ফেরত দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে বার্ষিকসভার আগের দিন ৫০ হাজার টাকা জমা দিয়েছেন হাফিজুর রহমান চৌধরী। কমিটির সভাপতি পদ তার দখলে থাকায় বাকি এক লাখ ১৮ হাজার ১১৮ টাকা কবে নাগাদ ফেরত দিচ্ছেন তার সঠিকভাবে জানা যায়নি।

এদিকে সাবেক সভাপতি উজির আলী, ম্যানেজার রমজান আলী ও হিসাবরক্ষক রাশেদ হায়দার মিলনকে আগামী সাত দিনের মধ্যে আত্মসাতের ১৮ লাখ ৪২ হাজার ৬৬ টাকা ফেরতের জন্য নোটিশ দেয়া হয়েছে। সমিতির সভাপতি হাফিজুর রহমান চৌধুরী সাক্ষরিত লিখিত নোটিশে বলা হয়েছে সাত দিনের মধ্যে টাকা ফেরত দেয়া না হলে সমিতির পক্ষ থেকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এলাকাবাসী বলেছে, দীর্ঘ ৩০ বছরের এ সমিতি গুটিকয়েক অসাধু ব্যক্তির নেতৃত্বে যাতে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে না পৌঁছায় সেদিকে নজর দেয়া উচিত।