এফিডেভিট করে নাম বদলাতে চেয়েছিলো ঐশী
স্টাফ রিপোর্টার: বাবা আমাকে আর ঐশী নামে ডেকো না। আমার নামটা এফিডেভিট করে বদলে দাও। এ নামটা শুনলে আমার ঘৃণা হয়। সবাই বলে আমি নাকি সেই ঐশীর মতো এমন করবো। আমার বন্ধুরা এখন শুধু আমাকে নিয়ে সমালোচনা করে। অপরদিকে যে ঐশী তার বাবা-মাকে খুন করেছে তাকে গাজীপুরের কোনাবাড়িতে অবস্থিত কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্রে নিরাপত্তা হেফাজতে রাখা হয়েছে।
এদিকে রাজধানীর ভিকারুননিসা কলেজের ছাত্রী ইশরাত জাহান ঐশী (১৫)। গত ২৭ আগস্ট সকালে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের ডি-৫, ২৮৫/ই নম্বর বাড়ি থেকে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় নিউ মার্কেট থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। এ ঐশীর পিতা বলেন, ঐশী নামের মেয়ের হাতে পুলিশ দম্পতি খুন হওয়ার পর থেকেই আমার মেয়ের মনে এমন ধারণা সৃষ্টি হয়েছিলো। আমি তাকে বলেছিলাম তার এ নাম পরিবর্তন করে দেবো। কিন্তু সেই সুযোগটা আমাকে আর দিলো না সে। এভাবেই কথাগুলো বলতে বলতে মেয়ের ছবি বুকে জড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন ঐশীর পিতা খান মোহাম্মদ ইকবাল। মেয়ের এমন মৃত্যুকে তিনি মেনে নিতে পারছেন না। তিনি বুঝতে পারেননি মেয়ের মনে এতো ক্ষোভ জমে ছিলো। ঐশী নামের বিদ্রুপ সহ্য করতে না পেরে সোমবার রাতে নিজের শয়নকক্ষে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে ঐশী। পরিবারের দাবি পুলিশ দম্পতি খুনের ঘটনায় তাদের মেয়ে ঐশী জড়িত থাকার বিষয় প্রকাশ হওয়ার পর ইশরাত জাহান ঐশীকে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করতো তার বন্ধুরা।
গতকাল বুধবার বিকেল পর্যন্ত ঐশী ও কাজের মেয়ে সুমির খোঁজখবর নিতে গাজীপুরের কোনাবাড়িতে কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্রে কেউ আসেনি। ঐশী কীভাবে দিন কাটাচ্ছে সে খবর সংগ্রহের জন্য সংবাদকর্মীরা গেলে কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক, সহকারী তত্ত্বাবধায়কসহ সংশ্লিষ্ট কেউ এ ব্যাপারে মুখ খুলছেন না। তাদের বাসার গৃহকর্মী সুমি রয়েছে একই বিল্ডিংয়ের চারতলায়। সুমিকে কেন্দ্রের শিশুশ্রেণীতে শিক্ষাদান করা হচ্ছে। ওই কেন্দ্রে বর্তমানে ১১৩ জন নিবাসী রয়েছে। এদের মধ্যে তিনজন খুনের আসামি।
গত ১৬ আগস্ট সন্ধ্যায় রাজধানীর চামেলী বাগের বাসা থেকে এসবির ইন্সপেক্টর মাহফুজর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে মেয়ে ঐশী ও গৃহকর্মী সুমি নিখোঁজ ছিলো। ১৭ আগস্ট ঐশী পল্টন থানায় আত্মসমর্পণ করে। পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে বাবা-মাকে খুনের কথা স্বীকার করে শনিবার আদালতে জবানবন্দি দেয়ার পর বিচারক ঐশীকে ওই কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেন। শনিবার রাতে পুলিশ তাকে ও বাসার গৃহকর্মী সুমিকে কোনাবাড়ি কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্রে নিয়ে আসে।