মাথাভাঙ্গা অনলাইন : সিরিয়ায় হামলা চালানোর চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী চাক হেগেল বলেছেন, প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা চাইলে আসাদবাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী সম্পূর্ণ প্রস্তুত।
মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের কার্যালয়ের পক্ষ থেকে দেশটির সেনাবাহিনীর হামলার পরিকল্পনার কথা জানানোর ঠিক কয়েক ঘণ্টা পর এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করলেন মার্কিন কর্মকর্তা হেগেল।
অন্য দিকে সিরিয়ার বিদ্রোহীদের জোট এসএনসির উদ্ধৃতি দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে, বিদ্রোহীরা আশা করছে কয়েকদিনের মধ্যেই সিরিয়ায় অভিযান শুরু করবে পশ্চিমা সেনাবাহিনী। এ ব্যাপারে তাদের কাছে পশ্চিমাদের সংকেত রয়েছে বলেও দাবি করে এসএনসি।
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী হেগেল তার বিবৃতিতে বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট যেভাবে চাইবেন ঠিক সেভাবে যেন অভিযান চালানো যায় তেমন করে পরিকল্পনা সাজিয়েছি আমরা।’
এর আগে সোমবার রাতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কেরি এক বিবৃতিতে বলেন, আসাদ বাহিনীই যে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছে সে সম্পর্কে অনস্বীকার্য প্রমাণ রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে।
এ দিকে, সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের ঘটনায় আসাদ বাহিনীকে পাল্টা জবাব দেওয়ার ব্যাপারে আলোচনায় বসতে বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে জরুরি অধিবেশন আহ্বান করেছে যুক্তরাজ্য।
প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, এই মুহূর্তে সামরিক অভিযানের বিষয়টিই বিবেচনা করছে যুক্তরাজ্য।
সরকারি অবকাশ সংক্ষিপ্ত করে লন্ডনে ফিরে আসা ডেভিড ক্যামেরন বলেন, বৃহস্পতিবারের অধিবেশনে পার্লামেন্টের সাংসদরা স্পষ্ট পদক্ষেপ নেওয়ার জন্যই ভোট দিতে পারেন।
সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে ৪০ মিনিট ফোনালাপ ও ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদের সঙ্গে ক্যামেরনে আলোচনায়ও সিরিয়ায় সামরিক অভিযানের বিষয়টিই স্পষ্ট হয়ে উঠছে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো।
তবে সিরিয়ায় হামলা চালানোর ব্যাপারে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে রাশিয়া ও আসাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র ইরান।
সিরিয়ায় হামলা দেশটিকে ইরাকের পরিণতির দিকে ঠেলে দিবে- মস্কোর পক্ষ থেকে এমন বক্তব্য দেওয়া হলেও তেহরানের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে এ ধরনের হামলা মধ্যপ্রাচ্যকে জ্বালিয়ে দেবে।
হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদও। রাশিয়ার একটি সংবাদ মাধ্যমকে আসাদ বলেন, সিরিয়ায় অভিযান চালালে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হবে হামলাকারীরা।
অন্য দিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমারা গত বুধবারের রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের জন্য সিরিয়া সরকারকে দায়ী করলেও মঙ্গলবার আরব দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করা হয়েছে।
অবশ্য, রাসায়নিক অস্ত্র হামলাস্থল পরিদর্শন ও পরীক্ষায় গেছেন জাতিসংঘের প্রতিনিধিরা।
সোমবার পর্যবেক্ষকদের গাড়িবহরে হামলা হলেও ফের পরীক্ষার জন্য ঘটনাস্থলে যান জাতিসংঘের নিরস্ত্রীকরণ শাখার এসব প্রতিনিধি।
ধারণা করা হচ্ছে, জাতিসংঘের পরীক্ষায় যদি রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারে সঙ্গে আসাদ বাহিনীর জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হয় তাহলে ইরাকের পরিণতিই ভোগ করতে হতে পারে সিরিয়াকে।