স্টাফ রিপোর্টার: সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন নিয়ে সংশয় থাকলেও নির্বাচন কমিশন তার প্রস্তুতি পুরোদমে চালিয়ে যাচ্ছে। দশম জাতীয় সংসদের নির্বাচন হবে আগামী বছরের জানুয়ারির প্রথম ভাগে। তফসিল ঘোষণা করা হবে ডিসেম্বরে। ২০১৪ সালের সাত থেকে ১৪ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। খুব সম্ভবত ১২ জানুয়ারি-১৪ নির্বাচনের দিন বেছে নেয়া হতে পারে। নির্বাচন কমিশন ও সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সূত্রে এ খবর জানা গেছে।
সরকারের একজন মন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতা জানান, ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে মহাজোট বিপুল সংখ্যাধিক্যে বিজয়ী হওয়ায় সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে এ তারিখটির প্রতি দুর্বলতা রয়েছে। কিন্তু চলতি ২০১৩ সালে নির্বাচন না করার নীতিগত সিদ্ধান্ত থাকায় আগামী বছরের শুরুতেই নির্বাচন হবে। কোনো নির্বাচনী এলাকায় গোলযোগ ও পুনঃনির্বাচনের প্রয়োজনে নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরবর্তী কমপক্ষে সাত দিন সময় হাতে রাখে। গেজেট প্রকাশ করতে তিনদিন রাখা হয়। বর্তমান সংসদের মেয়াদ রয়েছে আগামী বছরের ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত। সাংবিধানিক বিধান অনুযায়ী মেয়াদ পূর্ববর্তী ৯০ দিন অর্থাৎ ২৫ অক্টোবর থেকে ২৪ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
এদিকে সরকারের মেয়াদ ২৫ অক্টোবর শেষ হয়ে যাবে প্রেসিডেন্ট কর্তৃক এ সরকারকেই নির্বাচন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে যেতে বলার সুযোগ রয়েছে। তবে সরকারের মেয়াদ শেষে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে যে সরকার থাকবে তা হবে ক্ষুদ্র আকারের। পনের জনের বেশি সদস্য বিশিষ্ট হবে না বলেই জানা যায়। নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকার হিসেবেই তারা দায়িত্ব পালন করে যাবেন। বিরোধীদলের সদস্যদের এতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হবে। বিএনপি প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন এ সরকারে যোগ দেয়ার সম্ভাবনা নেই। তাদের নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ও নিশ্চিত নয়। যদিও তারা প্রার্থী চূড়ান্ত করাসহ নির্বাচনী প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে। সরকারি দল বিশ্বাস করে, বিএনপি এখন যাই বলুক শেষ পর্যন্ত তারা নির্বাচনে আসবে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনে সরকারের ওপর কার্যকর চাপ রাখতে ঈদুল আজহার পর তারা বড় ধরনের কর্মসূচিতে যাচ্ছে। তার আগ পর্যন্ত জনসভা-সমাবেশসহ ব্যাপক জনসম্পৃক্ততামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। আন্দোলন এবং একই সাথে নির্বাচনের জন্য তারা কর্মী ও সাধারণ মানুষকে প্রস্তুত রাখতে চাচ্ছে।
সরকারি একটি উচ্চ পর্যায়ের সূত্র জানিয়েছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পাশাপাশি বিরোধীদল বিএনপি নেতা তারেক রহমানকে নির্বিঘ্নে দেশে ফিরতে দেয়া, চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মামলা প্রত্যাহার, বিএনপিসহ বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের মুক্তির বিষয়গুলো দাবিনামায় যুক্ত করতে চাচ্ছে। তাদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে মতও জোরালো হচ্ছে। কিছু কিছু নীতি নির্ধারকসহ দলের এই মতের পক্ষের নেতারা আস্থাশীল যে মানুষ ভোট দিতে পারলে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে। জনগণের রায় কোনো ইঞ্জিনিয়ারিঙেই উল্টে দেয়ার মতো পরিস্থিতিও দেশে নেই। এ সূত্রে বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারে বিরোধী দলের অংশগ্রহণ, প্রয়োজনে নির্বাচনকালে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ও তাদের হাতে দেয়া, নির্বাচন কমিশনে সদস্য সংখ্যা বাড়ানোসহ কমিশনকে শক্তিশালী করার ব্যাপারে তাদের প্রস্তাব সরকার বিবেচনা করবে।