মাথাভাঙ্গা মনিটর: সিরিয়ায় সরকার বিরোধী বিদ্রোহীরা দাবি করেছে, রাজধানী দামেস্কের শহরতলিতে সরকারি বাহিনীর তীব্র গোলাবর্ষণে কয়েক শ লোক নিহত হয়েছে। বিরোধীদের জোট সিরিয়ান ন্যাশনাল কাউন্সিল বলছে, নিহতের সংখ্যা সাড়ে ছয়শর মতো। তবে কর্মীরা দাবি করছে, নারী ও শিশুসহ নিহতের সংখ্যা ১৩শ’র বেশি। আর এটা সত্য হলে কয়েক দশকে এটি সবচেয়ে বড় রাসায়নিক হামলা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা দাবি করেছেন, হামলার সময় বিষাক্ত গ্যাস ব্যবহার করা হয়েছে, যা অস্বীকার করেছে প্রেসিডেন্ট বাশাল আল-আসাদের সরকার। এ অভিযোগ তদন্তে জাতিসংঘ তাদের একটি প্রতিনিধি দলকে সিরিয়ায় ঢুকতে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে। এ বিষাক্ত গ্যাস হামলার বিষয়ে যে ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে তাতে হামলায় নিহতদের মৃতদেহ এবং দামেস্কর হাসপাতালে শিশুদের শারীরিক যন্ত্রণার বীভত্স্য সব দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। এ ভিডিওর সত্যতা সম্পর্কে কোনো নিরপেক্ষ সূত্র থেকে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। সিরিয়ার বিরোধীদল বলছে, দামেস্কের শহরতলির ঘাউটা এলাকায় সরকারি বাহিনীর গোলাবর্ষণের সময় এ বিষাক্ত গ্যাস ব্যবহার করা হয়। তারা বলছে, এ গোলাবর্ষণে শ শ মানুষ মারা যায়। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছে, ইরবিন, দুমাম এবং মুয়াদহামিয়াসহ অন্যান্য বেশকিছু এলাকায় এ হামলা চালানো হয়েছে। বিরোধীদের শীর্ষস্থানীয় নেতা জর্জ সাবরা জানিয়েছেন, বিষাক্ত গ্যাস হামলায় ১৩শ নিহত হয়েছে। তবে সরকারবিরোধী সিয়িয়ার ন্যাশনাল কোয়ালিশন নিহতের সংখ্যা সাড়ে ছয়শ বলে জানিয়েছে।
সিরিয়ার বিরোধীদলীয় জোট সিরিয়ান ন্যাশনাল কাউন্সিলের মুখপাত্র খালেদ সালেহ বলছেন, সরকার মোটামুটিভাবে গত মঙ্গলবার রাত থেকে ঘাউটা এলাকার পশ্চিম দিকে হামলা শুরু করে। এটা দামেস্কের একটা শহরতলি। এতে রকেট এবং রাসায়নিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়। রাতভর হামলায় শ শ লোক প্রাণ হারায়। আমি যখন আপনাদের সাথে কথা বলছি তখন পর্যন্ত, আমাদের হিসেব অনুযায়ী, ১ হাজার ১৮৮ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে একশরও বেশি শিশু রয়েছে। তবে সিরিয়ার সরকার এ গ্যাস হামলার কথা জোর গলায় অস্বীকার করেছে। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত এক বিবৃতিতে সরকার বলছে, ঘাউটা এলাকায় রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। কয়েকটি টেলিভিশনে রক্তপাতের যে খবর প্রচার করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এর মধ্যদিয়ে জাতিসংঘ যে তদন্ত করতে চাইছে তাকে নস্যাৎ করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। সিরিয়ার বেসামরিক মানুষের ওপর রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে বলে এ বছরের গোড়ার দিকে যে অভিযোগ উঠেছে, জাতিসংঘের একটি দল সোমবার থেকে তার তদন্ত শুরু করেছে। যদি নতুন কোনো অস্ত্র ব্যবহার করা আদৌ হয়ে থাকে তাহলে তদন্তকারী দল তার তাজা নমুনা সংগ্রহ করতে পারবে। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম হগ বিরোধীপক্ষের এ ধরনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি সিরীয় সরকারের প্রতি ওই অঞ্চলে তদন্তকারী দলকে যাওয়ার অনুমতি দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।