স্টাফ রিপোর্টার: ভারতে পাচারের শিকার বাংলাদেশি তিন তরুণ-তরুণীকে উদ্ধারের পর দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। রাইটস যশোর নামের একটি সংগঠনের সহযোগিতায় তারা দেশে ফেরার সুযোগ পেয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেল পাঁচটায় চুয়াডাঙ্গার দর্শনা চেকপোস্টে বিএসএফ তাদেরকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে।
ওই তিন তরুণ-তরুণী হলো- চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার কুতুবপুর গ্রামের সাইদুল ইসলামের মেয়ে নার্গিস খাতুন (১৮), কুমিল্লার লাকসাম উপপজেলার কাশিপুর বারানী গোমতি গ্রামের রহমত উল্লাহর মেয়ে কুলসুম খাতুন (২১) ও ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার বাঘাডাঙ্গা গ্রামের মনিরুল ইসলাম মোল্লার ছেলে কবির হোসেন (১৮)
গতকাল শনিবার বিকেলে হস্তান্তরকালে বিজিবির দর্শনা কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার খোরশেদ আলম ও বিএসএফ ১৭৩ ব্যাটালিয়নের গেদে কোম্পানি কমান্ডার পরিদর্শক রমেশচন্দ্র দু দেশের নেতৃত্ব দেন। উপস্থিত ছিলেন- দামুড়হুদা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল মালেক, এসআই জাহের উদ্দিন ও দর্শনা ইমিগ্রেশনের এসআই মাহবুবুর রহমান এবং রাইটস যশোরের তথ্য কর্মকর্তা বজলুর রহমান ও প্রতিনিধি তৌফিকুজ্জামান।
কুলসুম খাতুন জানায়, সে ঢাকার শনির আখড়া এলাকায় একটি বাসাবাড়িতে কাজ করতো। প্রতিবেশী এক যুবক চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সাড়ে তিন বছর আগে ভারতে পাচার করে। অন্যান্যরাও একইভাবে পাচারের শিকার হয়।
রাইটস যশোরের কর্মকর্তা বজলুর রহমান জানান, ওই তিন তরুণ-তরুণী মিথ্যা প্রলোভনে পড়ে পাচার হয়। বিশেষসূত্রে খবর পেয়ে রাইটস যশোরের পক্ষ থেকে ভারতের অল বেঙ্গল উইমেন ইউনিয়ন কলকাতার সাথে যোগাযোগ করা হয়। সংগঠনটির সহযোগিতায় ওই তিনজনকে কৃষ্ণনগরের একটি শেল্টার হোম থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।
দামুড়হুদা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল মালেক জানান, আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অভিভাবকদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
পতাকা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, দামুড়হুদা উপজেলা সহকারী কমিশন (ভূমি) ফরিদ হোসেন, দামুড়হুদা থানার এএসপি (প্র.বি.) আব্দুল্লা আল মাসুদ, ওসি (তদন্ত) আব্দুল মালেক, এসআই আবু জাহের ভূইয়া, ইমিগ্রেশন ইনচার্জ এসআই মাহবুব হোসেন, দর্শনা বিজিবি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার খোরশেদ আলম খান, নায়েক সুবেদার আলয় সিউস, হাবিলদার জিল্লুর রহমান, ভারতের গেদে বিএসএফ ক্যাম্পের এসি রমেশ চাঁদ, আরকে পান্ডে, নদীয়া থানার ওসি অরুণ কুমার, কৃষ্ণনগর থানার ওসি একে মণ্ডল প্রমুখ।
ফেরত তিন বাংলাদেশি নাগরিকের মধ্যে কবির কৃষ্ণনগর জেলহাজতে এবং কুলসুম ও নার্গিস কৃষ্ণনগর সমাজকল্যাণ অধিদপ্তরের থার্ডল্যান্ড সেল্টার হোমে ছিলো। বিএসএফ’র কাছ থেকে তিন বাংলাদেশিকে বিজিবি গ্রহণ করে দামুড়হুদা থানা পুলিশের হাতে দেয়া হয়েছে। গতকালই নার্গিস ও কবির আপন ঠিকানায় পৌঁছুলেও কুলসুমের পরিবারের কাছে খবর পাঠিয়েছে পুলিশ। কুলসুম পেটের তাগিদে কাজের সন্ধানে ঢাকায় গেলে সে পড়ে নারী পাচারকারীচক্রের কবলে। সেখান থেকে ভালো কাজের কথা বলে নেয়া হয় ভারতে। ভারতে কুলসুমকে অসামাজিক কর্মকাণ্ডের অপচেষ্টা করা হলে সে পালিয়ে রক্ষা পেলেও গ্রেফতার হয় পুলিশের হাতে। নার্গিস গেদে মামার বিয়ের অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে মুন্সিপুর সীমান্তের তিন নং গেটের কাছে বিএসএফ’র হাতে আটক হয়। কবির হোসেন বাঘাডাঙ্গা সীমান্ত এলাকায় ঘোরাঘুরি করার সময় তাকে বিএসএফ আটক করে পুলিশের হাতে দিয়েছে বলে সে জানিয়েছে।