সাহিত্য সাময়িকী খেয়া

শরৎকালে
মো. খলিলুর রহমান
বনবাদাড়ে ফুটলো যখন
বনের বুনো ফুল,
শরৎ বুড়ি নাড়ালো তার
বেণী বাঁধা চুল।

আকাশচূড়ায় ভাসছে শত
শাদা মেঘের ভেলা,
রোদ্র-মেঘে করছে তাই
লুকোচুরির খেলা।

ভৈরব নদীর দুই ধারেতে
শাদা কাশের ফুল,
শাদা বসন পরেছে যেন
নদীর দুটি কূল।

ভৈরব নদীর স্বচ্ছ জলে
নানান পাখির মেলা,
দুষ্টু কিশোর ভাসালো তাই
কলা কাঠের ভেলা।

তাঁর এই অবদান
-ইদ্রিস মণ্ডল
মুজিবর ছিলো বলে
আমরা তো দেশ পাই,
তার মতো সংগ্রামী
আর কোনো নেতা নাই।

দেশ নিয়ে কোনো ছাড়
তার কাছে হয়নি,
ইয়াহিয়া দেশ নেবে
তাই চুপ রয়নি।

সংগ্রাম করে তিনি
শত বাধা ঠেলে ভয়,
এই দেশ করে ফেলে
একদিন ঠিক জয়।

সকলেই করি আজ
মুজিবের গুণগান,
ভুলবো না কোনো দিন
তাঁর এই অবদান।

ঝরা পাতা
-আরিফা খাতুন
ভালোবেসে পাইনি আমি
কোনো সুখ তোমার থেকে
শুধু তোমাকে একাকী
ভালোবেসে ঝরে গেছে
আমার জীবন।
ঝরাপাতার মতো শুধু
তোমারই কারণে
তোমাকে ভালোবেসে।
তুমি সুখি জানি আজ
আকাকে একাকী করে
আমাকে দুখের সাগরে ভাসিয়ে
আমার জীবনে আর
কিছু নেই অবশিষ্ট
তোমাকে হারিয়ে
আজ আমি নিঃস্ব
ঠিক ঝরাপাতার মতো।

প্রতিটি কবরেই আমার লাশ
-জামসিদুল হক মুনি
আমাকে খুঁজোনা তুমি, আমার খুব কষ্ট হয়।
তোমার সজল দু’চোখ আজও খুজে ফেরে আমাকে-
মিছিলে, স্লোগানে, মঞ্চে, শহীদ মিনারে পাদদেশে।
আমি জয়বাংলা স্লোগানে আর মুখরিত করি না আলমডাঙ্গা
আমার মুষ্টিবদ্ধ হাত আর উত্তেলিত হয় না মিছিলে।
কারণ, আমার মৃত্যু হয়েছে, আমি মরি প্রতিদিন।
৭১ সালে পাক বাহিনীর বেয়নেটের খোঁচায়
৭৫ সালে বঙ্গবদ্ধু আর রাসেলের  সাথে,
তার পর নব্বইয়ের স্বৈরাচার আন্দোলনে মরেছি আমি
ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে, গতকালও আমার মৃত্যু হয়েছে
জামায়াত-শিবিরের হামলায়।
নিকষ কালো আঁধার রাতের ক্যানভাসে, স্বপ্নের বাসর সাজিয়ে
আমাকে আর খুঁজো না তুমি।
আমার ভালোবাসা মৃত্যু মৃত্যু খেলা,
অথবা মৃত্যুর কফিনে জড়ানো এক ঝলক বুকের তপ্ত জ্বালা।
মৃত্যু হয়েছে, মৃত্যু হয় প্রতিদিন
মৃত্যুর মিছিলে এখন আমি বেওয়ারিশ লাশ।
যেখানে দেখবে বধ্যভূমি, কবরে কবরে সাজানো-
ওখানে একটু দাঁড়ালেই বুঝবে প্রতিটি কবরেই আমার লাশ।