হেঁসেলের হিংসাও সমাজের অগ্রযাত্রায় অন্যতম অন্তরায়

হেঁসেলের হিংসাও সমাজের অগ্রযাত্রায় অন্যতম অন্তরায়

পৈত্রিক সম্পদ সম্পত্তি ভাগাভাগিতে কামড়া-কামড়ির চেয়ে প্রত্যেকেরই প্রথমে নিজের আয় বাড়িয়ে সমৃদ্ধতা অর্জনের পথে হাঁটাই উত্তম। প্রভাবখাটিয়ে ভোগের বদলে ত্যাগের আত্মতৃপ্তি উপলব্ধি সমৃদ্ধতা অর্জনেরই অংশ। আর্থিক সচ্ছলতার দাপট কিংবা অন্য কোনো ক্ষমতার তাপ যদি কর্তৃত্ব ফলানোর ফনা তোলে তাহলে বুঝতে হবে তার পতন ওই পাখা গজানো পিপীলিকার মতোই অনিবার্য হয়ে উঠেছে।  পৈত্রিক সম্পদ সম্পত্তি নিয়ে শুধু চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদার গোপালপুরের দু বোন ছবি-মিনিই মাতামাতি করে না, ওদের মতো বোন বা ভাইয়ের সংখ্যা সমাজে কম নয়। দু বোনই বিবাহিতা। আমাদের সমাজের প্রচলিত রেওয়াজ বা প্রথা অনুযায়ী স্বামীর সংসার মেয়েদের নিজের সংসার। এরপরও পৈত্রিক সম্পত্তির ভাগ ছেলে ও মেয়ে কে কতোটুকু পাবে তার আইনগত সমাধান রয়েছে। তাপরও সম্পত্তি নিয়ে ভাইয়ে ভাইয়ে, বোনে-বোনে বা ভাই বোনে বিরোধ কেন? কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রভাবশালী ভাইয়ের কর্তৃত্ব ফলানোর মনোভাব অন্যদেরও হিংসাত্মক করে তোলে। অবশ্য যেখানে প্রভাবশালীর উদারতা থাকে সেখানে লুণ্ঠন নয়, শান্তিপূর্ণ বণ্টন হয়। ভবিষ্যত সুন্দর করার লক্ষ্যে বণ্টননামাটাও রেজিস্ট্রি করে নেন তারা। সমাজে ওরাই উত্তম। ভাই-বোনের মধ্যে হিংসাত্মক হানাহানি, রক্তপাতের সূত্রপাত মূলত কারো ন্যূনতম ছাড় না দিয়ে সকলেরই পেয়ে জেতার মানসকিতা। যদিও এ মানসিকতা আকাশ থেকে উবে এসে কারো মধ্যে ভর করে না, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা পেয়ে বসে পরিবার থেকে। কেননা, পরিবারই প্রত্যেক শিশুর মানবিক শিক্ষার মহাবিদ্যালয়। শিশুকালে পরিবারের বড়দের দেখে শেখা শিশুরা একদিন বড় হয়ে উচ্চশিক্ষার সনদধারী হলেও হিস্যা আদায়ে হিংসাত্মক হয়ে ডেকে আনে সর্বনাশ। সমাজের এই সর্বনাশ হ্রাসের জন্যই তো আইন। পরিণাম জানলে সতর্কতা বাড়ে। যদিও একে অন্যের প্রতি দরদী করে তুলতে সমাজের সচেতন উদার মানুষগুলোর আরও বেশি বেশি উদারতার বেশি বেশি উদাহরণের উষ্ণতা অধিক ফলদায়ক। ফনা দমানোর লাঠির নাম সচেতনতা। যে সচেতনতা সকলের জাগিয়ে তোলে বিবেক।       বোন খুন করেছে বোনকে। পারিবারিক এ খুন ঠেকাতে না পারার প্রশ্নে পুলিশের দায় কিছুটা কম হলেও, প্রবণতা রুখতে দোষীর উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করার দায়ভার অনেক। হেঁসেলের হিংসাও সমাজের অগ্রযাত্রায় অন্যতম অন্তরায়। যদিও যতো দোষ নন্দোঘোষের মতো সকল দায়-দায়িত্ব পুলিশের ওপর চাপানো চলে না। সমাজের স্বার্থেই সমাজের সচেতন মানুষগুলোকেও আলো ছড়ানো দরকার।