সৎ ও যোগ্য প্রার্থী নির্বাচিত করা সকল ভোটারের দায়িত্ব

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে আজ শনিবার চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদাসহ দেশের ৮১ উপজেলায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করবেন ভোটাররা। আইনত স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের এ নির্বাচন সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক হলেও পুরো নির্বাচনে রাজনৈতিক আবহ তৈরি হয়েছে। অনেকটা সংসদীয় নির্বাচনের মতোই রাজনৈতিক পরিচয় নিয়েই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান বা সংরক্ষিত নারী আসনের প্রার্থীরা।

সাধারণ ভোটাররা নিজ এলাকার উন্নয়নে প্রতিনিধি নিযুক্তির লক্ষ্যে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে মতামত দেবেন। এ মতামতের গুরুত্ব অনেক। কোনোভাবেই একটি ভোটকে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। মনে রাখতে হবে, ভোটাধিকার প্রয়োগ করে প্রতিনিধি নির্বাচিত করা প্রত্যেক ভোটারের দায়িত্ব। গত ৫ জানুয়ারি ভোটের মাধ্যমের দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছে বর্তমান সরকার। যদিও দেশের একটি বড় রাজনৈতিক দল এ নির্বাচন বয়কট করেছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তুলনায় কোনো অংশেই উপজলো নির্বাচনের গুরুত্ব কম নয়। উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রভাবমুক্ত রাখা যেমন সম্ভব হয়নি। এটি স্থানীয় নির্বাচন, এ নির্বাচন দলীয় না হলেও মনোনয়ন প্রদানের বিষয়টি লক্ষ্য করা গেছে।  দলীয় সমর্থনের বদলে দলীয় মনোনয়ন দেয়ার ঘটনা চুয়াডাঙ্গাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় ঘটছে খানেকটা প্রকাশ্যেই। চুয়াডাঙ্গায় যেমন দলীয় মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি তথা ১৯ দলীয় জোট, তেমনই আওয়ামী লীগের ক্ষেত্রেও ঘটেছে অনেকটা অভিন্ন ঘটনা।

স্থানীয় নির্বাচনকে রাজনৈতিক দলীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা যুক্তিযুক্ত নয়। দক্ষতা, যোগ্যতাসহ কে কার তুলনায় অধিক সৎ হিসাব-বিবেচনা করেই তাকে নির্বাচিত করে উপজেলাভিত্তিক উন্নয়নসহ সার্বিক বিষয়ে দায়িত্ব দেয়া উচিত। সুষ্ঠু ও অবাধ পরিবেশের সৃষ্টির হলে ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার নির্বিঘ্নে প্রয়োগ করতে পারবেন। তারা যেন ভুল করে অযোগ্য প্রার্থীকে ভোট না দেন। তবে তা নিয়ে এখন আর তেমন বির্তক নেই। দিন দিন মানুষ সচেতন হয়েছে। একটি ভোটের কতোটা গুরুত্ব তাও ভোটাররা জানতে বা বুঝতে শিখেছে। গণতান্ত্রিক পন্থায় জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করতে হলে অবশ্যই প্রয়োজন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন। নির্বাচনে সৎ ও যোগ্য প্রার্থীদের ভোট দিয়ে স্ব স্ব উপজেলাবাসী তাদের জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করবে। নির্বাচনে একটা শাড়ি, একটি লুঙ্গি বা কিছু টাকার বিনিময়ে ভোট কোনো অযোগ্য তথা ধান্দাবাজ প্রার্থীকে দিয়ে তাকে নির্বাচিত করলে তার কুপ্রভাব পড়বে গোটা সমাজে। অর্থের প্রভাবে কোনো প্রার্থী নির্বাচিত করলে সেবা ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের বদলে উপজেলা এলাকায় শোষণ আর দুর্নীতি ভর করলে বলার কিছুই থাকবে না। বিগত দিনের নির্বাচনে এমনও শোনা গেছে, লাখ লাখ টাকা ব্যয় করে ভোটে জিতেছি, এখন সেই টাকা তুলে নিয়ে তারপর উন্নয়ন করবো। এসব ঘৃণীত উক্তি যেন কোনো সমাজের কোনো মানুষকে শুনতে না হয়, সেদিকেও আমাদের খেয়াল রাখা দরকার। দরকার স্থানীয় সরকার কাঠামো শক্তিশালী করতে যোগ্য ও সৎ প্রার্থীকে নির্বাচিত করা। আর দায়িত্ব পালনে কোনো অবস্থাতেই ঘরে বসে থাকলে চলবে না। প্রত্যেক ভোটারকেই তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগে আন্তরিক হতে হবে।