স্বস্তি কি সংসদের ঘোরানো পেঁচানো সিঁড়িতে?

সংঘাত নয়, সাধারণ মানুষ চায় শান্তি। সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিতদের হাতে ক্ষমতা দেয়া এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশে গণতান্ত্রিক পন্থায় ক্ষমতা হস্তান্তরই কাম্য। প্রতিবারই সংঘাতপূর্ণ শ্বাসরুদ্ধকর পরিবেশ গড়ে তোলা হয়। গতবারের বিরোধী দলীয়রা লাঠি লগি বৈঠা নিয়ে রাজপথে নামার ডাক দিলো, এবারের বিরোধীরা দা কুড়াল নিয়ে নামতে বললো। শুধু কি তাই, অপরিচিতদের দেখলে ধরে পিটুনির পর পুলিশে দেয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন এক নেতা। এসব কি রাজনীতি? অথচ দেশবাসীর সামনে এটাই বাস্তব।

 

গণতন্ত্র তো একের শাসনের কথা বলে না। আমরা গণতান্ত্রিক সরকারগুলোর ক্রমাগত আচরণে শঙ্কিত। আশাহত হচ্ছি বারবার। গণতন্ত্রের কথা মুখে বললেও তা খুঁজে না পাওয়া যায় দলে, না শাসনে। ক্ষমতার মসনদে থাকা বা যাওয়ার জন্য জনগণের কথা বলে দেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল কী করছে? সাধারণ মানুষের অজানা নয়, তার পরও যেন কিছুই করার নেই। ভোটাধিকার জনগণের সাংবিধানিক অধিকার। ভোট দিয়ে নেতা নির্বাচিত করবে। নেতারা জনগণের কল্যাণমুখি পদক্ষেপ নেবে। অথচ বাস্তবে তার অনেকটাই উল্টো। মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও যে যার স্বার্থে গণতন্ত্রের গাছ থেকে ফল পেতেই যেন ব্যস্ত। ক্ষুদ্র স্বার্থে গণতন্ত্রকে নানাভাবেই ব্যবহার করা হচ্ছে। ভোট, ভোটাধিকারের মধ্যেই দেশের সাধারণ মানুষ নিজেদের গুরুত্ব অনুধাবন করে, তাও বার বারই পড়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে। সুযোগ পেলে মত পরিবর্তনের মধ্যদিয়ে যা পেতে চায় তা হলো স্বস্তি। কিন্তু তা থাকে অধরা। বার বারই সেই একই অবস্থায় ফিরে যাওয়া। এর সমাধান কোথায়? সংসদের ঘোরানো পেঁচানো সিঁড়িতে? না, দেশ যারা পরিচালনার দায়িত্ব পান, যারা দায়িত্ব নিতে চান তাদের দিক-নিদের্শনার মধ্যেই দেশবাসী পেতে পারে শান্তির দিশা। আর তা নিশ্চিত করতে দরকার গণতন্ত্রের সুষ্ঠু লালন, সঠিক যত্ন।

 

বিগত কয়েকটি সরকারের শেষ সময়ে দেশের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে একের পর এক গভীর সঙ্কট। কাকতালীয়ভাবেই সঙ্কটের মাসটি হয়ে উঠেছে অক্টোবর। সাত বছর আগের অক্টোবরের স্মৃতি ভুলতে না ভুলতে আবার পেয়েছে অক্টোবর। কী হচ্ছে, কী হতে যাচ্ছে তার কিছুই স্পষ্ট নয় জাতির সামনে। শুধু উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। হানাহানি নয়, নয় সহিংসতা। দেশের সাধারণ মানুষ চায় সঙ্কটমুক্ত রাজনৈতিক পরিবেশ। আতঙ্কের বদলে স্বস্তিই কাম্য। দেশের বড় দুটি দলের প্রধান দুজনের হাতেই সেই কাঠি।