সহকারী গ্রন্থাগরিক যখন শ্রেণিকক্ষে পেটান শিক্ষার্থী

একজন সহকারী গ্রন্থাগারিক বা লাইব্রেরিয়ান যখন শিক্ষক হিসেবে শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের সুযোগ পান, তখন তিনি প্রাইভেট টিউটরি করে অর্থবাণিজ্যের অনৈতিক সুযোগ নিতেই পারেন। নিয়েছেনও। তিনি তার প্রাইভেট পড়ানোর বাণিজ্য জমিয়ে তুলতে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে আহত করেছেন বলেই বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, ওই লাইব্রেরিয়ান কি তবে প্রধান শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতিকে খুশি করেই (অ) নৈতিক সুযোগ নিয়েছেন? তদন্ত দরকার।

কুষ্টিয়া মিরপুরের গোস্বামী দুর্গাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী গ্রন্থাগারিক দীর্ঘদিন ধরেই শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের কাজ করেন। শিক্ষক হিসেবে বেতন না পেলেও প্রাইভেট পড়িয়ে ভালোই কামান। একজন সহকারী গ্রন্থাগারিক কতোটুকু শিক্ষাদান করতে পারেন, তার কাছে কেনই বা প্রাইভেট পড়তে উদ্বুব্ধ হবেন শিক্ষার্থীরা? শ্রেণিকক্ষে তিনি যখন ঢুকে শিক্ষক সাজেন, তখন তার কাছে প্রাইভেট পড়তে বাধ্য করানোটা সহজতর হয়। এই সহজতর কৌশল বন্ধ করার জন্যই শিক্ষা মন্ত্রণালয় জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে স্পষ্ট বলা হয়েছে, কোনো বিদ্যালয়ের শিক্ষক তার নিজ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়াতে পারবেন না। এরপরও প্রকাশেই শিক্ষক তার নিজ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়ান এবং পড়তে বাধ্য করার নানা কটূকৌশলও প্রয়োগ করেন। এ দেখে একজন সহকারী গ্রন্থাগারিকের সুযোগ নেয়া নিশ্চয় অবান্তর নয়, অনিয়মটা করার সুযোগ দিয়েছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। অভিযুক্ত লাইব্রেরিয়ানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তুলেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। এ দাবিতে কেন শিক্ষার্থীদের স্লোগান তুলতে হবে, কেন দাঁড়াতে হবে রাস্তায়? তবে কি ম্যানেজিং কমিটিরও ওই লাইব্রেরিয়ানের (অ) নৈতিক কাজে সমর্থন ছিলো? তা না হলে অভিযোগ উত্থাপনের পর পরই তো দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে পারতো?

একজন শিক্ষার্থীকে শ্রেণিকক্ষে একজন শিক্ষকও মারতে পারেন না, মারার এখতিয়ার নেই। একজন শিক্ষক ছাড়া সহকারী গ্রন্থাগরিককে দিয়ে শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের বিষয়টিও মেনে নেয়া যায় না। শিক্ষক সঙ্কট থাকলেও নয়। শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের এখতিয়ার শুধু শিক্ষকের। সঙ্কট থাকলে দ্রুত নিরসন করতে হবে। সহকারী গ্রন্থাগরিক কেন শ্রেণিকক্ষে. কেন তিনি শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হাসপাতালে যেতে বাধ্য করেছেন তা খতিয়ে দেখে যতো দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া যাবে ততোই কল্যাণ।