সম্মিলিত প্রচেষ্টা সর্বক্ষেত্রেই সাফল্যের সোপান

মাদকের কালোথাবা অনিবার্য করে তোলে পতন। বিশেষ করে যারা মারণনেশার কবলে পড়ে তাদের ফেরা বা ফেরানো প্রায় অসম্ভব হয়ে ওঠে। যার উদাহরণের অন্ত নেই। সমাজে মারণনেশাদ্রব্য সহজলভ্য মানেই প্রজন্মকে অধপতনের কিনারায় দাঁড় করিয়ে দেয়া। সামান্য টলকালেই যার সোজা হয়ে দাঁড়ানোর সুযোগ থাকবে না। প্রজন্মকে হুমকির মুখে ঠেলে দেয়া বা দাঁড় করানোর অর্থ জাতির ভবিষ্যত ধ্বংস করা। ফলে আর যাই হোক মারণনেশার সাথে আপস করা কোনোভাবেই কারো উচিত নয়।
বিশ্বের বহুদেশ রয়েছে যেখানে প্রকাশ্যে নেশাদ্রব্য বিক্রি হয়। সেখানে সেখানে বিক্রেতা-ক্রেতাদের মধ্যে শুধু সচেতনতাই পরিলক্ষিত হয় না, তাদের মধ্যে সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতার বিষয়টিও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। যদিও কোনো নেশাদ্রব্যই কোনোদিন কোনো ব্যক্তি বা সমাজের জন্য মঙ্গল বয়ে আনেনি, বরঞ্চ ক্ষতিরই কারণ হয়ে দেখা দেয়। তারপরও কিছুটা শিথিলতা সমাজের চাহিদার প্রেক্ষিতেই। তবে কোনোভাবেই মারণনেশাদ্রব্য বিশ্বের কোনো দেশেই বিক্রি ও সেবনের বৈধতা নেই। তার পরও মারণনেশাদ্রব্য বিশ্বজুড়েই ছড়াচ্ছে একশ্রেণির রাঘববোয়ালেরা। যাদেরকে অনেক দেশেই মাফিয়া ডন বলে আখ্যায়িত করা হয়। এরাই কিছু অর্থলিপ্সু সদস্যের মাধ্যমে সমাজের হতদরিদ্র পরিবারের নারীপুরুষ এমনকি শিশু কিশোর কিশোরীদের কাজে লাগিয়ে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে দেয়, দিচ্ছে। আমাদের সমাজ ওই মাদকচক্রের যেন বড় বাজার হয়ে দাঁড়িয়েছে। সহজলোভ্য হওয়ার কারণে হতাশাগ্রস্তরাই শুধু নয়, সঙ্গে পড়েও উঠতি বয়সী থেকে শুরু করে প্রায় সব বয়সীদের মধ্যেই মারণনেশার করালগ্রাসে হাবুডুবু খাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। এরই মাঝে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার নব উদ্যোমে মাদকবিরোধী অভিযানের বিশেষ নির্দেশনা দিয়ে জেলা পুলিশের সকল ইউনিটকেই মাঠে নামিয়েছেন। যার ইতিবাচক প্রভাব ইতোমধ্যেই পড়তে শুরু করেছে। গতকাল আলমডাঙ্গায় মারণনেশাদ্রব্যের একটি বড় চালান পুলিশের হাতে ধরাপড়ার খবর অবশ্যই সাধারণ মানুষের মধ্যে আশার আলো জাগিয়েছে।
‘মাদককে না বলুন’ এ স্লোগানেই যে সমাজ থেকে মাদক উচ্ছেদ করা যাবে না তা বলাই বাহূল্য। সবার আগে সমাজ থেকে মারণনেশা দ্রব্য উৎখাতে সমাজের দায়িত্বশীল সকলকে উদ্যোগী হওয়া দরকার। দরকার মাদক নিয়ন্ত্রণে নিযুক্ত কর্তাদের পাশাপাশি সীমান্ত প্রহরীসহ আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখার কাজে নিয়োজিত সংস্থাসমূহের কর্মরতদেরর মধ্য কর্তব্যপরায়ণতা। অসম্ভব বলে কিছু নেই। সম্মিলিত প্রচেষ্টা সর্বক্ষেত্রেই সাফল্যের সোপান। সফল হোক চুয়াডাঙ্গা পুলিশের চলমান মাদকবিরোধী অভিযান।