সকল সীমাবদ্ধতার ঊর্ধ্বে উঠে পুলিশকে পারতে হবে

 

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সাংবাদিক হত্যার তালিকা দিন দিন দীর্ঘ হচ্ছে। আর কতোটা দীর্ঘ হলে এলাকার গণমাধ্যমকর্মীরা নিরাপদ হবেন? কে দেবে এলাকার সাংবাদিকদের স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা? আইন কী পারবে সাংবাদিক সদরুল আলম নিপুলের হত্যাকারীদের ধরে উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করতে? প্রশ্নগুলো সাংবাদিক নিপুলের খণ্ড-বিখণ্ড লাশের মতোই এলাকার সাংবাদিকদের হৃদয়কে রক্তাক্ত করছে। হৃদয়ে রক্তক্ষরণ নিয়েও যে জনপদের গণমাধ্যমকর্মীরা তাদের দায়িত্ব পালনে ন্যূনতম পিছিয়ে নেই, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাসমূহের নয়, এলাকার শান্তিপ্রিয় জনগণেরও।

সাংবাদিক নিপুল নিহত হয়েছেন। এলাকার সাংবাদিকেরা হারালেন সহকর্মীকে। ৫ বছরের শিশুকন্যা নিধি হারালো তার পিতাকে। বৃদ্ধা মা হারালেন সন্তান। বিধবা হলেন স্ত্রী নিলিমা। এর আগে এই চুয়াডাঙ্গার জনপদেই আরো একজন সাংবাদিককে খুন-গুম হতে হয়েছে। নিপুলের লাশ খণ্ড-বিখণ্ড অবস্থায় পাওয়া গেলেও সাংবাদিক বজলুর রহমানের লাশের সন্ধান আজও মেলেনি। চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের মোমিনপুরের সাংবাদিক নিপুলকে হত্যা করা হয়েছে গত ২০ মে রাতে। আর আলুকদিয়া টেইপুরের সাংবাদিক বজলুর রহমানকে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার সামনের ভবন থেকে ১৯৯৮ সালের ১২ জুন অপহরণের পর খুন করে লাশ গুম করা হয়। এ তালিকা আর বাড়তে দিতে রাজিন নন এক সময়ের রক্তাক্ত জনপদ খ্যাত চুয়াডাঙ্গার সাংবাদিকেরা। এ কারণেই সাংবাদিক হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সাংবাদিকেরা আজ রাজপথে। চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব, সাংবাদিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা ইউনিট আজ শুক্রবার থেকে তিনদিনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এ কর্মসূচির সাথে দৈনিক মাথাভাঙ্গা পরিবার একাত্মতা ঘোষণা করছে। এলাকার পেশাজীবী সংগঠনসমূহসহ শান্তিপ্রিয় আপামর জনতা সাংবাদিক হত্যার দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবিতে নীরব থাকবে কীভাবে?

সাংবাদিক নিপুল ছিলেন সদালাপী। শিশুর মতো সরল। সুন্দর মনের একজন মানুষকে হত্যা করলো কারা? তিনি কী কোনো ব্যক্তির গোপন তথ্য জেনে যাওয়ার কারণেই প্রাণ হারালেন? নাকি এলাকার মাদকচক্র সরকারি সম্পদ লুণ্ঠনকারীদের পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি? পুলিশি তদন্তে নিশ্চয় ঘাতকদের মুখোশ উন্মোচন হবে। তাদের ধরে উপযুক্ত শাস্তির লক্ষ্যে আইনে সোপর্দ করতে সক্ষম হবেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাসমূহের সদস্যরা। সকল সীমাবদ্ধতার ঊর্ধ্বে উঠে পুলিশকে পারতে হবে। পুলিশের দক্ষতা, সক্ষমতা সুন্দর সমাজ গঠনে সহায়ক। এলাকাবাসী অবশ্যই সুন্দরের পুজারী।