সকলের চলে যাওয়া কি একই রকম হয়?

 

মানুষ আসে, মানুষ চলে যায়। রেখে যায় কীর্তি। গিয়াস কামাল চৌধুরী চলে গেলেন। রেখে গেছেন বহু অবদান। কীর্তিমান এ মানুষটার মৃত্যুতে আমরাও শোকাহত।

 

দৈনিক মাথাভাঙ্গার প্রতিষ্ঠালগ্নে প্রকাশনা উৎসবে এই গিয়াস কামাল চৌধুরী বুকভরা আশা নিয়ে বলেছিলেন, মাথাভাঙ্গা পরিবার পারবে, ভাঙবে। কী পারবে? কার মাথাভাঙ্গা ভাঙবে? সুন্দর সমাজ গঠনে অবদান রাখতে পারবে, আর সমাজের কুসংস্কারের মাথা ভেঙে আলো ছড়াবে।

 

মাথাভাঙ্গা পরিবার সবসময় তারুণ্যে ভরপুরই নয়, আদর্শেও অটুট। পারার পথে লক্ষ্যচ্যুত হয়নি। পারার চেষ্টার পথেই চলছে। আর অপসংস্কৃতি কুসংস্কার? এসবের মাথা ভেঙেই চলেছে ক্লান্তিহীনভাবেই। যেখানেই কল্পকাহিনির ফাঁদে প্রতারণার দোকান সেখানেই আঘাত। কতোটুকু পেরেছে, আরো কতোটা অন্ধকার দূর করতে পারতো সে পরিসংখ্যানের ফর্দ নিশ্চয় লম্ব। কুসংস্কারাচ্ছন্ন সমাজে কুসংস্কারের মাথা ভাঙে সচেতনতার আলো ছড়ানোটা যে খুব সহজ নয়, তা বোদ্ধামাত্রই উপলব্ধি করবেন। সেই কঠিন কাজটি নিরলসভাবেই করে চলেছে দৈনিক মাথাভাঙ্গা পরিবার।

 

গিয়াস কামাল চৌধুরী যেদিন দৈনিক মাথাভাঙ্গার আনুষ্ঠানিক যাত্রাপথের ফিতে কাটেন, সেদিন রাজনৈতিক মতাদর্শে সাংবাদিকতায় অতোটা বিভক্তি ছিলো না। যে বিভক্তির বাউরিবাতাস থেকে গিয়াস কামাল চৌধুরী নিজেকে রক্ষা করতে পারেননি, সেই বাতাস মাথাভাঙ্গা পরিবার গায়ে মাখেনি। অনেক পারা, অনেক অবদানের মধ্যে বিভক্তির বাতাস গায়ে মাখাটা মাথাভাঙ্গা পরিবার মেনে নিতে না পারলেও উদ্বোধনী দিনের মধ্যমণিকে কোনোভাবেই মাথাভাঙ্গা পরিবার খাটো করে দেখেনি। দেখে না। যারা অবাদান রেখেছেন তাদের কাউকে অস্বীকার করে না।

 

মাথাভাঙ্গা পরিবারের চলার পথে হিংসা দূর করতে গিয়ে বারবার উল্টো খেসারত দিলেও সবসময়ই সম্প্রীতির আহ্বান জানিয়ে এসেছে। বলেছে, প্রতিহিংসা নয়, সুষ্ঠু প্রতিদ্বন্দ্বিতা প্রতিভা বিকাশে সহায়ক। সব কিছুর ঊর্ধ্বে সুন্দর সমাজ গঠনের লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়া।

 

মাথাভাঙ্গার উদ্বোধনী দিনের মধ্যমণি চলে গেলেন, চলে গেছেন অপর প্রাণপুরুষ প্রধান সম্পাদক সাইফুল ইসলাম পিনু। দৈনিক মাথাভাঙ্গা ভাবতে চায় না, এঁরা চলে গেছেন। আছেন এবং থাকবেন তাদের কীর্তিতেই।