শিশু হত্যাকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দ্রুত নিশ্চিত করতে হবে

কতোটা পাষণ্ড না হলে শিশুকে হত্যা করতে পারে? মানুষ নয়, শিশুহত্যাকারী মানুষরূপি জানোয়ার। ঘাতকের এমন শাস্তি দেয়া দরকার যা দেখে ওরকম অপরাধ করতে কেউ সাহস পাবে না। যে শিশুর দিকে তাকালে মনের কষ্ট দূর হয়, মুছে দেয় গ্লানি, সেই শিশুকে হত্যা করে পুকুরে ফেলে আত্মগোপনে থাকা হায়দার আলীর ক্ষমা নেই। সে যেখানেই আত্মগোপন করুক তাকে খুঁজে বের করে আইনে সোপর্দ করার পাশাপাশি শাস্তির বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে। এ দাবি সমাজের সাধারণ মানুষের।

মেহেরপুর জেলা সদরের সিংহাটি গ্রামের একটি পুকুর থেকে তিন বছরের শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়। পত্রিকায় সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশের পর তার পরিচয় মেলে। হত্যাকারীদের ধরতে পুলিশি তৎপরতা শুরু হয়। লাশ উদ্ধারের প্রায় দেড় মাসের মাথায় শিশুর মা সাবিনা পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। মায়ের দ্বিতীয় স্বামী মেহেরপুরের সোনাপুর গ্রামের হায়দার আলী শিশু আরাফাতকে হত্যা করে পুকুরে ফেলে বাড়ি ফেরে। সাবিনা পুলিশের কাছে এ তথ্য দিয়ে বলেছে, প্রথম স্বামীর সন্তান হওয়ায় দ্বিতীয় স্বামী হায়দার আলী মেনে নিতে না পেরে হত্যা করেছে। লাশ উদ্ধারের খবর প্রকাশের পর থেকেই সাবিনা ও তার দ্বিতীয় স্বামী ঘাতক হায়দার আলী আত্মগোপন করে। গতকাল দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকায় এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদন পাঠে বিবেকবানমাত্রই ঘাতকের যে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কামনা করবেন তা সহজেই অনুমেয়। শিশু আরাফাত ছিলো তার দাদির কাছে। সেখান থেকে কেন তার মা নিজের কাছে নিলো? মায়ার টানে নিশ্চয়? তাহলে তিনি রক্ষা করতে পারলেন না কেন? আত্মগোপনই বা কেন? এসব প্রশ্নের জবাব খুঁজে প্রকৃত দোষীর বিরুদ্ধেই আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পুলিশকেই দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে। বিচার দ্রুত সম্পন্নের বিষয়টিও আইনপ্রয়োগে সহায়তাদানকারীদের ভাবতে হবে। নিতে হবে বাস্তবমুখি পদক্ষেপ।

শিশু আরাফাত হত্যাকাণ্ডটি পারিবারিক হলেও সমাজ যেমন দায়মুক্ত হতে পারে না, তেমনই দায় এড়াতে পারেন না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাসমূহের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। হত্যা গুরুতর অপরাধ। হত্যা করে কেউ কৌশলে পার পেলে সমাজে অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। শিশু আরাফাত সেই প্রবণতারই কি শিকার নয়? সমাজ সুন্দর করতে হলে সামাজিক দায়িত্ব পালনে সচেতন সকলকে আন্তরিক হওয়া প্রয়োজন। মানুষের বিবেক জাগিয়ে তুলতে হলে অবশ্যই সচেতন মানুষগুলোকেই সচেতনতার আলো ছড়াতে হবে।