শিশু ও প্রসূতির অপুষ্টিজনিত সমস্যা দূর করা জরুরি

দেশে প্রতি ১শ জন শিশুর মধ্যে ২৩ শিশু প্রয়োজনের চেয়ে কম ওজন নিয়ে জন্মগ্রহণ করছে। অপরদিকে অন্তঃসত্ত্বা ১৮ শতাংশ নারী অপুষ্টির শিকার। মাসহ যারাই শিশু পরিচর্যা করে থাকেন তাদের ৭৩ শতাংশই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেন না।  দ্বিতীয় জাতীয় পুষ্টি কর্মপরিকল্পনার (২০১৬-২৫) চূড়ান্ত খসড়ায় এরকমই আশঙ্কার চিত্র উঠে এসেছে। খসড়ায় বলা হয়েছে- পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে উচ্চমাত্রার অপুষ্টি রয়েছে। বয়সের তুলনায় তাদের ৩৬ শতাংশের উচ্চতা কম, ১৪ শতাংশ কৃষকায় এবং ৩২ শতাংশের ওজন কম। নগরের বস্তির শিশুদের পুষ্টি পরিস্থিতি সবচাইতে খারাপ অবস্থায় রয়েছে। পুষ্টিবিদরা বতেছেন, মাঠপর্যায়ে পুষ্টি নিয়ে কাজ করার জন্য পৃথক কর্মী না থাকায় এক্ষেত্রে অগ্রগতি হচ্ছে না। শিশুরা জাতির তথা দেশের ভবিষ্যত। এই শিশুরা যদি অপুষ্টিতে ভোগে, খর্বকায় হতে থাকে তাহলে তাদের মানসিকবিকাশ ঘটবে কীভাবে? জরিপে দেখা গেছে, পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রায় পাঁচ লাখ শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে। অপুষ্টির প্রকোপের ক্ষেত্রেও অঞ্চলভেদে ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে। উপকূলের জেলাগুলো ও হাওড় অঞ্চল তুলনামূলকভাবে খাদ্য নিরাপত্তা ও অপুষ্টির নিরিখে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায়। সে হিসেবে চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর অতোটা খারাপ অবস্থায় নেই। তবে এ এলাকারো স্বল্প সম্পদের অধিকারী পরিবারে যে খর্বকায় শিশুর হার বেশি তা বলাই অস্বীকার করার জো নেই। শহরের তুলনায় গ্রামের শিশুদের অপুষ্টির হার বেশি। পুষ্টির জন্য মাঠপর্যায়ে কর্মী থাকতে হবে। যারা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মধ্যে পুষ্টিবিষয়ে সচেতনতার আলো ছড়াবে। সচেতন করে তুলবে এবং হাতেকলমে অনেক কিছু শেখাবে। অপুষ্টিপ্রবণ এলাকাগুলো চিহ্নিত করে অঞ্চলভিত্তি বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে। বিশেষ ব্যবস্থায় পুষ্টি সপ্তাহ পালন করা যেতে পারে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি অন্যান্য মন্ত্রণালয় এবং বেসরকারি সংস্থাগুলিকেও অপুষ্টিবিরোধী নামাতে হবে। অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের নানান কর্মসূচির সাথে পুষ্টির বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে ভাবতে হবে।