মেহেরপুরে ডায়রিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব এবং

 

মেহেরপুর জেলা শহরের কয়েকটি মহল্লায় ডায়রিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। ডায়রিয়া আক্রান্তদের মধ্যে দুজনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার পর স্থানীয়দের অনেকেই পৌর সরবরাহকৃত পানি নিয়ে প্রশ্ন তুললেও গঠিত তদন্ত দল প্রতিবেদনে মূলত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস, ভ্যাপসা গরম, বাতাসে আর্দ্রতা, অসচেতনতা ও মরসুমি পচা ফলকেই দায়ী করেছে। এদিকে পৌর মেয়র পৌর সরবরাহকৃত পানি বিশুদ্ধ বলে মন্তব্য করলেও তিনি অবশ্য অধিক সতর্কতার কারণে ইতোমধ্যেই পানি পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষাগারে প্রেরণ করেছেন বলে জানিয়েছেন।

চিকিৎসা বিজ্ঞানে অবিস্মরণীয় সব আবিষ্কারের যুগেও ডায়রিয়ার মতো রোগে মৃত্যুর খবর অবশ্যই হতাশার। যেহেতু ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা নেয়ার জন্য হাসপাতালে দলে দলে হাজির হচ্ছেন, সেহেতু বিষয়টিকে কোনোভাবেই খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। বছরখানেক আগে চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরেও ডায়রিয়া রোগের প্রকোপ দেখা দেয়। কয়েকদিনের মধ্যে হাজারের অধিক নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। চিকিৎসকদের তড়িৎ পদক্ষেপ, সংশ্লিষ্টদের আন্তরিকতা এবং জেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বাস্তবমুখি তৎপরতা মৃত্যুরোধে সহায়ক হয়। হাজারের অধিক রোগী নিয়ে হাসপাতালে নাকানিচুবানি খেলেও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়ে সকলকে সুস্থ করে বাড়ি ফেরানোর বিষয়টি উদাহরণ হয়ে রয়েছে। দ্রুত পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে জীবনরক্ষাকারী স্যালাইন, ওষুধপথ্যই শুধু নয় চিকিৎসক, সেবিকাও নেয়া হয়। মেহেরপুরে যেহেতু ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে সেহেতু রোগ নির্ণয়ে ও রোগ ছড়ানোর কারণ শনাক্ত করতে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ দলের বাস্তবমুখি পদক্ষেপ দরকার। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষা করে যতো দ্রুত প্রাদুর্ভাব দূর করা সম্ভব, তা করতে হবে। এ জন্য দরকার সমন্বয়।

স্বাস্থ্য সচেতন করতে শুধু স্বাস্থ্য বিভাগের ওপর ভরসা করলে চলবে না, সমাজের সচেতন মানুষগুলোকেও এগিয়ে আসতে হবে। সভ্যতার এতোদিন পরও আবাসিক স্থানকে স্বাস্থ্যকর করতে না পারার ব্যর্থতা ঘোচানোর দায় সকলেরই। মরসুমি ফল? মানুষের জন্যই সৃষ্টি, অথচ তা কেন বিষাক্ত হচ্ছে, কেন পচা ফল খেতে হচ্ছে? খতিয়ে দেখে এ বিষয়েও বাস্তবমুখি পদক্ষেপ জরুরি। পৌর সরবরাহকৃত পানি সরবরাহের সময় শতভাগ বিশুদ্ধ হলেও ভোক্তার মুখে পৌঁছুতে তা বিশুদ্ধ থাকছে কি? সেটাও দ্রুত খতিয়ে দেখা দরকার। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোধ ও আক্রান্তদের আর কেউ যাতে না মারা যায় তা নিশ্চিত করতে হবে।