মেধাবীদের যথার্থ মূল্যায়ন করতে হবে

সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রচলিত কোটা পদ্ধতি শিথিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এখন থেকে কোটার কারণে কোনো পদ শূন্য থাকবে না। কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে মেধাতালিকার ওপরের দিক থেকে শূন্যপদে নিয়োগ দেয়া হবে। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিসভার বৈঠকে কোটা পদ্ধতি শিথিল করার সিদ্ধান্ত নেয়ার পর গত বুধবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এসংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে। এতে সরকারি চাকরিতে যোগ্য ও মেধাবীদের পদায়নের বাধা দূর হলো। সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছিলো বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা। সরকারি চাকরিতে বর্তমানে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ, নারী ও জেলা কোটা ১০ শতাংশ এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটা ৫ শতাংশ। ২০১০ সালের এক অফিস আদেশে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় মুক্তিযোদ্ধা কোটায় প্রার্থী পাওয়া না গেলে সেসব পদ খালি রাখার নির্দেশনা দেয়ার পর বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদফতর, দফতরসহ সরকারি কর্মকমিশন শূন্যপদে নিয়োগ দিতে পারেনি। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়ায় ২৮তম থেকে ৩৪তম বিসিএস পর্যন্ত নন-ক্যাডার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে এক হাজার ৭৫৪ জনকে নিয়োগ দিতে পারেনি পিএসসি। খালি থেকে যায় অনেক ক্যাডার পদও। উপজেলা আনসার ও ভিডিপির সার্কেল অ্যাডজুট্যান্টসহ ৯ হাজার সিনিয়র স্টাফ নার্স নিয়োগের ক্ষেত্রেও সমস্যায় পড়ে পিএসসি। কারিগরি ক্যাডারের অনেক পদও খালি থেকে যায়। এ অবস্থায় চাকরি প্রত্যাশীদের দাবি ছিলো, সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি সংস্কার করতে হবে। এর আগে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) বার্ষিক প্রতিবেদনে বিভিন্ন বছরে কোটা পদ্ধতি যৌক্তিক করার বিষয়টি উত্থাপিত হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সরকার একটি বাস্তবানুগ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কোটা পদ্ধতির কারণে কোটার বাইরে থাকায় যোগ্য ও মেধাবী অনেকেই নিয়োগ থেকে বঞ্চিত হয়। এসব পদ খালি থাকায় সরকার ও রাষ্ট্র মেধাবী ও যোগ্যদের সেবা থেকে বঞ্চিত হয়। অন্যদিকে যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও অনেকে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ পাচ্ছিলো না। এতে তরুণদের মধ্যে হাতাশা দেখা দেয়াটাই ছিলো স্বাভাবিক। সরকারের এই সিদ্ধান্ত মেধাবীদের নতুন করে উজ্জীবিত করবে। এই সিদ্ধান্তের ফলে এখন মেধাবীরা আর নিয়োগ থেকে বঞ্চিত হবে না। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদও খালি থাকবে না।