মাধ্যমিক পরীক্ষা নিয়ে উদ্বেগ : শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করুন

 

আগামী ২ ফেব্রুয়ারি থেকে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য প্রায় ১৪ লাখ পরীক্ষার্থী নিজেদের তৈরি করছে। তাদের নিয়ে এখন চরম উৎকণ্ঠায় নিপতিত অভিভাবকরা। পরীক্ষাটি অনুষ্ঠানের বিষয়ে সরকারের অবস্থা অনড় না হওয়ার কোনো কারণ নেই- কারণ এ পরীক্ষাটিই শুধু নয়, এটি শেষ করে আবার এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করতে হবে। অন্যদিকে দেশের বিরোধী রাজনৈতিক জোট তাদের অবরোধ-হরতাল কর্মসূচিতে অনড় বলেই আলামত দেখা যাচ্ছে। বিরোধী জোটের নেত্রীর ছোট ছেলের মৃত্যুতে শোকাহত নেতাকর্মীরা শোকের সাথে আন্দোলনও চলবে- এ কথা জানিয়ে দিয়েছেন। শিক্ষামন্ত্রী পরীক্ষা চলাকালীন বিরোধী জোটের আন্দোলন কর্মসূচি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়ে পরীক্ষা সম্পন্ন করার কৌশল নিয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতায় পরীক্ষা কেন্দ্রের নিরাপত্তা, পরীক্ষা সামগ্রীর নিরাপত্তা এবং পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতে নিরাপত্তা নিশ্চিতের ব্যবস্থা নিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা যেন হয়ে উঠেছে রীতিমতো এক যুদ্ধ। আত্মঘাতী রাজনীতি সংক্রামক অসুখের মতো ছড়িয়ে যাচ্ছে সর্বক্ষেত্রে। বিপন্ন করে তুলছে সব কিছু- শিক্ষাও এর শিকারে পরিণত হচ্ছে। আজকে যারা পরীক্ষা দেবে, এ শিক্ষার্থীরাই আগামী নির্বাচনে তাদের নির্বাচকমণ্ডলী। এদের সমর্থন পাওয়ার ওপরও নির্ভরশীল তাদের ভাগ্য। তা সত্ত্বেও এদের ওপরই তারা চাপিয়ে দিচ্ছে জগদ্দল পাথর।

আসন্ন এসএসসি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে সরকার নানা রকম নাশকতার আশঙ্কার কথা বলছে। সেই আশঙ্কাকে অমূলক প্রমাণ করে ২০ দলীয় জোট এসএসসি পরীক্ষার সময়টিতে তাদের কর্মসূচি স্থগিত রাখবে কি? ১৪ লাখ পরীক্ষার্থী এবং ২৮ লাখ অভিভাবকের উদ্বেগ দূর করতে তারা এগিয়ে আসবেন কি? বলার অপেক্ষা রাখে না, যারা অবরোধ কর্মসূচি পালন করছেন, তাদের অনেকেরই সন্তান বা আত্মীয়-স্বজন এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নেবে।

অন্তত তাদের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে পরীক্ষার সময়টিতে অবরোধ-হরতাল কর্মসূচি স্থগিত রাখা হোক। সম্প্রতি এ-লেভেল পরীক্ষাকে অবরোধ কর্মসূচির আওতামুক্ত রেখেছিলো ২০ দলীয় জোট। স্বল্পসংখ্যক এ-লেভেল পরীক্ষার্থীর জন্য এ ছাড় দেয়া হলে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীর জন্যও ছাড় দেয়া হবে বলে আশা করছে দেশবাসী। দেশের বিভিন্ন স্থানে দূর-দূরান্ত থেকে অনেক পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। সেক্ষেত্রে পর্যাপ্ত যানবাহন ও যানবাহনে চলাচলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি। অর্থাৎ পরীক্ষার সময়টিকে সম্পূর্ণভাবে অবরোধ ও হরতালমুক্ত রাখা প্রয়োজন। আশা করি ক্ষমতাসীন ও ক্ষমতা প্রত্যাশী রাজনীতিকরা এটি উপলব্ধি করে এমন পদক্ষেপ নেবেন, যাতে তাদের শুভবুদ্ধির পরিচয় মেলে।