মাদক এখন সামাজিক ক্যান্সার

মাদক এখন সামাজিক ক্যান্সারে পরিণত হয়েছে। কেননা মাদক সমাজকে এমনভাবে গ্রাস করেছে যে সেখান থেকে বেরিয়ে আসা আমাদের জন্য দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। মাদক আগ্রাসন যুবসমাজকে কোন পথে নিয়ে যাচ্ছে সে প্রশ্ন এখন জনমনে। মাদকের কুপ্রভাব যেভাবে বিস্তৃত হয়ে পড়ছে তাতে উদ্বিগ্ন না হয়ে পারা যায় না। এর ভয়াল আগ্রাসন দেশের যুবসমাজকে সর্বনাশের পথে নিয়ে যাচ্ছে। এ সর্বনাশা নেশা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে ধনাঢ্য পরিবারের সন্তানদের মাঝে। ইদানীং এ নেশা মধ্যবিত্ত এমনকি নিম্নবিত্ত পরিবারেও বিস্তার লাভ করেছে। নেশার জন্য ধনাঢ্য পরিবারের সস্তানদের অনেকে দুর্বৃত্তপনার সাথে জড়িয়ে পড়তে বাধ্য হয়। নেশার টাকা জোগাড় করতে হাইজ্যাকসহ দস্যুপনার সাথেও জড়িত হচ্ছে। ফেনসিডিল, ইয়াবা, ভায়াগ্রার জীবনবিনাশী আগ্রাসনের শিকার হয়ে দেশের যুবসমাজ নৈতিক ও শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছে। দেশের সীমান্তরক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে মাদকের গডফাদাররা সীমান্তের পেশাদার, দাগি চোরাকারবারিদের মাধ্যমে বছরে হাজার হাজার কোটি টাকার মাদক দেশের ভেতরে নিয়ে আসছে আর আমাদের যুবসমাজ ক্রমাগতভাবে মাদকের ভয়াবহ ছোবলে ধ্বংসের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। সরকারের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের আইনানুগ মনিটরিঙের অভাবে মাদকের দেশি–বিদেশি সিন্ডিকেট সারা দেশেই অতি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তরুণ সমাজের একটি অংশ নেশাজাতীয় দ্রব্য গ্রহণের পাশাপাশি স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল, ইন্টারনেট ও মোবাইলফোনের আপলোডের মাধ্যমে ভিনদেশি অপসংস্কৃতি পর্নোগ্রাফিতেও আসক্ত হয়ে পড়ছে। এর কুফলে দিন দিন ইভটিজিং, অপহরণ, ধর্ষণ, খুন, গুম ও অপমৃত্যুর হার বেড়ে চলেছে। নেশার ছোবলে যুবসমাজের নৈতিক অবক্ষয় এবং সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধের অবক্ষয় দেশ ও জাতির সামগ্রিক উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে ব্যাহত করছে। দেশের যুবসমাজকে সর্বনাশা নেশার ছোবল থেকে রক্ষায় সরকার ও সংশ্লিষ্টদের কি কোনো দায়দায়িত্ব নেই? আমরা দেশের যুবসমাজকে নেশার ছোবল থেকে সুরক্ষায় দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা চাই।