মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে প্রয়োজন সামাজিক আন্দোলন

ছিঁচকে চুরি, শহরের অলিগলিতে ছোটখাটো ছিনতাইয়ের ঘটনা চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরে বাড়ছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কিছু ছিনতাইয়ের অভিযোগ থানায় পৌঁছুলেও অধিকাংশ ছিঁচকে চুরির বিষয় মহল্লার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। নতুন করে বলার অবকাশ রাখে না, যে সমাজে মাদক সহজলভ্য হয়ে পড়ে, মাদকাসক্তের সংখ্যা বেড়ে যায় সেই সমাজে এ ধরনের অপরাধ প্রবণতা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পায়। পেয়েছেও তাই। প্রতিকারে মহল্লাবাসীর সোচ্চার হওয়ার পাশাপাশি পুলিশসহ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের দায়িত্বশীলদের লাগাতার অভিযান প্রয়োজন। একইসাথে দরকার মাদকপাচার রোধে সীমান্তরক্ষীদের আরো দায়িত্বশীলতা।

চুয়াডাঙ্গাম, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহের বিশাল এলাকা জুড়ে রয়েছে ভারত সীমান্ত। ফেনসিডিলসহ নানা পদের মাদকদ্রব্য পাচার করে আনা হয়। সমাজের ছিন্নমূল নিম্নবিত্ত পরিবারের নারী ও শিশুদের কাজে লাগিয়ে সহজেই সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে মাদক ছড়িয়ে দেয়া হয়। নেশার কবলে পড়ে সম্ভাবনাময়ী যুবসমাজ অধপতনের দিকেই শুধু ধাবিত হচ্ছে না, পরিবারে অশান্তির আগুন জ্বালিয়ে তছনছ করছে। সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ছে সমাজে। সামাজিকভাবে মাদকবিরোধী আন্দোলন তরান্বিত করতে না পারলে সমাজের এ অশান্তির আগুন থেকে কোনো পরিবারই যে নিরাপদ নয়, তা উপলব্ধিতে যতো বিলম্ব হবে সমাজ ততোটাই অশান্তির ঝুঁকির দিকে ঝুঁকবে। ঝুঁকছেও। অবশ্য সামাজিক আন্দোলনের বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে মাদকপাচারকারী চক্রের চক্রান্তের শিকার হওয়ার উদাহরণ সামাজিক দায়িত্ব পালনকারীদের কাছে চুনে গাল পোড়ার মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে। দই দেখলেও ভয়। নতুন করে বলার অবকাশ রাখে না যে, মাদকপাচারকারী চক্রের চক্রান্ত পুলিশেরই কোনো কোনো সদস্য সফল করতে সহায়তা করেছে। ফলে দয়িত্বশীল পুলিশকেই সেই ভয় দূর করে মাদকবিরোধী আন্দোলনকে তরান্বিত করার মতো বিশেষ উদ্যোগী হওয়া প্রয়োজন।

স্থানীয়ভাবে হাড়িয়া মদ ও তাড়ি প্রস্তুত করা হয়। পড়শী দেশ থেকেও পাচার করে আনা হয় হরেক নামের ভয়ঙ্কর মাদক। ফলে ঘরে-বাইরে সর্বত্রই মাদকের ঝুঁকি বেড়েছে। সীমান্তের চোরাপথে মাদকপাচার করে আনা কিছু পাচারকারী মাঝে মাঝে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহের সদস্যদের হাতে ধরা পড়ে। রাঘববোয়াল ধরা পড়ে না। ধরাপড়া মাদকপাচারকারীদের মাধ্যমে রাঘববোয়ালদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় নেয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত করার পাশাপাশি সামাজিকভাবে মাদকবিরোধী আন্দোলন তরান্বিত করার লক্ষ্যে সমাজের দায়িত্বশীলদের অগ্রণী ভূমিকা প্রয়োজন। নিজেদের সমাজ নিজেদের মতো করে গড়তে হলে ছড়ানো দরকার মাদকবিরোধী সচেতনতা।